ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

বিপদে পড়লে কী করবেন?

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:২১ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০২১

যখন কেউ বিপদে পড়ে, তখন যদি ওই ব্যক্তি মানুষের (উপকারের) হক আদায়ের অসিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে (দোয়া) সাহায্য প্রার্থনা করে; তবে মহান আল্লাহ ওই বান্দার বিপদ দূর করে দেন। বিপদ কঠিন হলেও আল্লাহ তাআলা তাকে ওই বিপদ থেকে উদ্ধার করে দেবেন। যেমন-
১. কেউ কঠিন বিপদে পড়েছিল আর সে সময় তোমার ইচ্ছায় আমার মধ্যস্থতায় সে ব্যক্তি কঠিন বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছিল। হে আল্লাহ! আমি সেসময় ওই ব্যক্তিকে সাহায্য করেছিলাম। আল্লাহ আপনার ইচ্ছায় আমার সহযোগিতা পেয়ে সে উপকৃত হয়ছিল। হয়তো বা সে সময় আমার সহযোগিতা না হলে তার আরও বিপদ হতো। সুতরাং সে উপকারের অসিলায় আপনি আমার বিপদ দূর করে দেন। আমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। তবে আল্লাহ বান্দার এ আবেদনে সাড়া দিয়ে তার বিপদ দূর করে দেবেন।

২. কিংবা কেউ কঠিন রোগে ভুগছিল। কোনো চিকিৎসা পাচ্ছিলনা। ওই রোগী ব্যক্তিকে আপনার ইচ্ছায় আমার মধ্যস্থতায় হাপাতালে ভর্তি করার সুযোগ হয়েছিল। আর তাতে ওই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। এভাবে সমাজের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার অসিলা দিয়ে মহান আল্লাহর কাছে নিজের বিপদ দূর করার আবেদন করলে মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে কঠিন বিপদ থেকেও উদ্ধার করেন।

মানুষের এসব উপকার শুধু মানুষের জন্য নয়; বরং এ উপকার সরাসরি আল্লাহর সৃষ্টির উপকার ও তার ইবাদতের শামিল। এ সম্পর্কিত একটি হাদিস থেকে তা প্রমাণিত-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন মানুষকে ডেকে বলবেন- হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, তখন তুমি আমাকে দেখতে (সেবা-যত্ন করতে) আসনি।

মানুষ বলবে- হে প্রভু! আপনি রাব্বুল আলামিন, আমি কিভাবে আপনার সেবা করব? আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে পারনি যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল; কিন্তু তখন তুমি তাকে দেখতে যাওনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তাকে (অসুস্থ ব্যক্তিকে) দেখতে যেতে (সেবা-যত্ন করতে) তাহলে সেখানে আমার দেখা পেতে? (মুসলিম ও মিশকাত)

রোগীর সেবা-যত্ন করার মাধ্যমেই আমরা সহজেইআল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি। আমরা যখন কোন রোগীকে দেখতে যাব তখন তার ভালো কাজগুলো স্মরণ করে কথা বলতে পারি। অসুস্থ ব্যক্তির পাশে ভালো কথা বলায় রয়েছে তাদের জন্য কল্যাণ। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন তুমি কোনো রোগীর কাছে যাবে কিংবা মরণোন্মুখ ব্যক্তির কাছে যাবে, তখন তার সঙ্গে মঙ্গলজনক কথাবার্তা বলো। কেননা তুমি যা বল, ফেরেশতাগণ তার (ওই ভালো কথার) ওপর আমিন আমিন বলতে থাকে।’ (মুসলিম ও মিশকাত)

এসব হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, মানুষের উপকার করলে দুনিয়াতে বান্দার বিপদ যত কঠিনই হোক না কেন; ওই উপকারের অসিলায় আল্লাহর কাছে দোয়া করলে মহান আল্লাহ বান্দার বড় বিপদও দূর করে দেবেন। কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করে দেবেন।

বিপদে পড়লে এ দোয়াও করা যেতে পারে-
হজরত জুবাইর ইবনু আবু সুলাইমান ইবনু জুবাইর ইবনু মুত্বইম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকাল ও সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এ দোয়াগুলো পড়া ছেড়ে দিতেন না-
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِيْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِيْ دِيْنِيْ وَدُنْيَايَ وَأَهْلِيْ، وَمَالِيْ، اَللّٰهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِيْ، وَآمِنْ رَوْعَاتِيْ، اَللّٰهُمَّ احْفَظْنِيْ مِنْ بَينِ يَدَيَّ، وَمِنْ خَلْفِيْ، وَعَنْ يَمِيْنِيْ، وَعَنْ شِمَالِيْ، وَمِنْ فَوْقِيْ، وَأَعُوْذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِيْ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাতি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বীনী ওয়া দুনইয়াইয়া, ওয়া আহলি ওয়া মালি। আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি ওয়া আমিন রাওআতি। আল্লাহুম্মাহফাজনি মিম্বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফি ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়া শিমালি ওয়া মিন ফাওকি। ওয়া আউজু বিআজামাতিকা আন উগতালা মিন তাহতি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্ষমা এবং নিরাপত্তা চাই আমার দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার ও অর্থ-সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন; আমার উদ্বিগ্নতাকে নিরাপত্তায় রূপান্তরিত করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হেফাজত করুন- আমার সামনের দিক থেকে, আমার পেছনের দিক থেকে, আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে এবং আমার উপরের দিক থেকে। আর আপনার মহত্ত্বের ওসিলায় আমার নীচ থেকে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার সব মানুষকে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরের উপকার করার তাওফিক দান করুন। বিপদে পড়লে এ উপকারের অসিলায় ক্ষমা-প্রার্থনা করার মাধ্যমে বিপদ-আপদ দূর করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন