পিতামাতার জুলুম সত্ত্বেও সন্তানের করণীয়
সন্তানের জন্য দুনিয়াতে জান্নাত এবং জাহান্নামের কারণ হয়ে দাঁড়ায় পিতামাতা। দুনিয়াতে যে সব কাজের শাস্তি সুনির্ধারিত অবশ্যম্ভাবী সেগুলো মধ্যে পিতামাতার অবাধ্যতাও একটি। তাই সর্বাবস্থায় পিতামাতার খেদমত করা জরুরি।
যদি কোনো ব্যক্তি প্রতিদিন পিতামাতার কুশল বা ভালোমন্দের ভাব বিনিময় করে, শুধু এ টুকু ভাব-বিনিময়ের জন্যই আল্লাহ তাআলা ওই সন্তানের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসেই তা প্রমাণ করে। এমনকি পিতামাতা যদি সন্তানের ওপর জুলুমও করে থাকে।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন এমন কোনো মুসলমান নাই যার মুসলিম পিতা-মাতা রয়েছে আর সে সকাল সকাল তাদের ভালো-মন্দের খোঁজ খবর নেয়। অথচ আল্লাহ তাআলা তার জন্য বেহেশতের ২টি দরজা খুলে দেন। আর যদি একজন (জীবিত) থাকে তবে একটি দরজা (খুলে দেন)।
আরও পড়ুন
আর যদি সে ব্যক্তি তাদের মধ্যকার কোনো একজনকে অসুন্তুষ্ট করে, তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত সে তাকে সন্তুষ্ট করে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার ওপর সন্তুষ্ট হন না। (প্রিয়নবিকে) জিজ্ঞাসা করা হলো- যদি তাদর ওপর জুলুম করেন, তবুও কি? (পিয়নবি) বললেন, যদি তাঁর ওপর জুলুমও করেন তবুও।’ (আদাবুল মুফরাদ)
অন্য হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাসের বর্ণনায় এসেছে, ‘যে বক্তি (দিনের) প্রত্যুষে পিতামাতার অনুগত সন্তান হিসেবে তাঁর গাত্রোখান তথা (অজু গোসল; পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা) খেদমত করে; তার জন্য বেহেশতের ২টি দরজাই খুলে যায়। আর যদি তাদের দুই জনের (পিতা-মাতা) একজন থাকে তবে একটি দরজা।
আর যদি ওই ব্যক্তি প্রত্যুষে পিতামাতার অবাধ্য সন্তান হিসেবে গাত্রোখান তথা অন্যায়মূলক আচরণ করে তবে ওই ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের ২টি দরজা খুলে যায়। আর যদি তাঁদের মধ্যে একজন জীবিত থাকে তবে (জাহান্নামের) একটি দরজা খুলে দেয়া হয়।
এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলো যে, ‘যদি তাঁরা ওই সন্তানের ওপর জুলুম করে, তবুও কি? প্রিয়নবি বললেন, ‘হ্যাঁ’ যদি তাঁর ওপর জুলুম করেন; তবুও।’ (বায়হাকি; শুআবুল ঈমান)
মনে রাখতে হবে-
দুনিয়া ও পরকালের মুক্তি ও সফলাতার একমাত্র মাধ্যম হলো পিতামাতা। পিতামাতার অবাধ্যতার শাস্তি দুনিয়াতেই হয়ে যায়। তাই পিতামাতার অবাধ্যতা নয়; আনুগত্যই হোক প্রত্যেক সন্তানের একান্ত কামনা। চাই পিতামাতা সন্তানের প্রতি সন্তুষ্ট হোক বা জুলুম করুক।
পরিশেষে...
আল্লাহ তা্আলা মুসলিম উম্মাহকে সর্বাবস্থায় পিতামাতার খেদমত করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম