সমকামিতা কোন ধরনের গোনাহ?
সমকামিতা ইসলামে হারামই নয় বরং এটি অভিশপ্ত অপরাধ। যে অপরাধের কারণে আল্লাহ তাআলা কাওমে লুত তথা লুত আলাইহিস সালামের অপরাধী জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা তা তুলে ধরেছেন এভাবে-
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّن الْعَالَمِينَ
‘এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল- তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি?’ (সুরা আরাফ : আয়া ৮০)
إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِّن دُونِ النِّسَاء بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ
‘তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৮১)
وَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِ إِلاَّ أَن قَالُواْ أَخْرِجُوهُم مِّن قَرْيَتِكُمْ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ
‘তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোনো উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়।’ (সুরা আরাফ : ৮২)
فَأَنجَيْنَاهُ وَأَهْلَهُ إِلاَّ امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ
‘অতঃপর আমি তাকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলাম, কিন্তু তার স্ত্রী। সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, যারা রয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করলাম।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৮৩)
وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًا فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ
‘অতএব দেখ! গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৮৪)
আল্লাহ তাআলা সমকামিতার ভয়বাহ অন্যায় ও তাদের পরিণতি সম্পর্কে উল্লেখিত আয়াতসমূহে তুলে ধরেছেন। সমকামিতা ইসলামে হারাম ও সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি অবৈধ যৌনাচার, জেনা-ব্যভিচারের গোনাহসমূহের চেয়েও মারাত্মক ধ্বংসযোগ্য অপরাধ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সমকামিতার অপরাধে জড়িতদের ব্যাপরে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কাউকে লুত সম্প্রদায়ের কাজ (সমকামিতায়) জড়িত দেখলে; যে করে এবং যার সঙ্গে করা হয় উভয়কে হত্যা কর।’ (তিরমিজি)
হাদিসের অন্য বর্ণনায় সমকামিতার এ মরাত্মক অপরাধের পাশাপাশি নারীদের সঙ্গে অনৈতিক উপায় অবলম্বন করে তাদের পেছনের রাস্তায় যৌনাচারকেও কবিরা গোনাহ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এসব অপরাধীদের দিকে তাকাবেন না মর্মেও হাদিসের বর্ণনা থেকে সুস্পষ্ট।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দেবেন না, যে কোনো পুরুষের সঙ্গে সমাকামিতায় লিপ্ত হয় অথবা কোনো নারীর পেছনের রাস্তা দিয়ে সহবাস করে।’ (তিরমিজি)
ইসলামে সমকামিতা ও স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে যৌনাচার বা সহবাস হারাম তথা সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহ। এ অপরাধে মহান আল্লাহ তাআলা হজরত লুত আলাইহিস সালামের সময়ে শিলা/প্রস্তর বৃষ্টি দিয়ে পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। আর একই অপরাধে কাউকে দেখলে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
বিশেষ করে
আল্লাহ তাআলা এ অপরাধে জড়িত কারো প্রতি দৃষ্টি দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। মানুষের জন্য এটি কত ভয়ংকর ও মারাত্মক ঘোষণা!
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহসহ সবাইকে উল্লেখিত অপরাধ দুইটি সমকামিতা ও বিকৃত যৌনাচার থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সুন্দর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর আজাব ও গজব থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস