ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

দুনিয়ায় মুমিনের অবস্থান যেমন হবে

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২১

মৃত্যু সুনিশ্চিত। যার জীবন আছে প্রত্যেককেই মরতে হবে। দুনিয়াতে যারা আল্লাহ তাআলার এ চিরন্তন সত্য ‘মৃত্যু’র কথা স্মরণ করবে; মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কর্মফলের কথা স্মরণ করবে; জান্নাত-জাহান্নামের ব্যাপারে চিন্ত ও গবেষণা করবে; এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোহ ও প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে; তারাই সফলতা লাভ করবে। তাহলে দুনিয়ায় মুমিনের অবস্থান কেমন হওয়া জরুরি?

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ঘোষণা করেন- ‘প্রত্যেকটি জীবনকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর তোমরা কেয়ামতের দিন নিজ নিজ কর্মফল পুরোপুরি লাভ করবে। তবে সফল হবে ওই ব্যক্তি, যারা জাহান্নামের আগুণ থেকে মুক্তি পাবে এবং যাদেরকে জান্নাত দান করা হবে। প্রকৃতপক্ষে এ দুনিয়া প্রতারণাময় একটি বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে বার বার এ কথাগুলোর স্মরণ করানোর উদ্দেশে অনেক উপদেশ দিয়েছেন। দুনিয়ার জীবনকে মুসাফিরের মতো কাটানোর নসিহতও পেশ করেছেন। কারণ মুসাফিরের ভাবনা মানুষকে দুনিয়া ও পরকালের সফলতার দ্বার প্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার বাহুমূল শক্ত করে ধরে বললেন- দুনিয়ায় (জীবন) এমনভাবে কাটাও; যেন (দুনিয়ায়) তুমি একজন পথিক বা মুসাফির।
এ কারণেই (কত সুন্দর কথাই না!) হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রায়ই বলতেন-
‘যখন তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হবে; তখন সকালের জন্য অপেক্ষা করো না। আর যখন সকাল হয়ে যায় তখন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগ-ব্যাধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো। আর জীবিত থাকাকালে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।’ (বুখারি)

সুতরাং দুনিয়ায় মুমিন মুসলমানের প্রতিটি মুহূর্ত হওয়া উচিত এমন যে, মৃত্যু যে কোনো সময় আসতে পারে। মৃত্যুর প্রস্তুতি মুমিন মুসলমানের সবচেয়ে বড় এবং প্রধান কাজ। এ প্রস্তুতি ও কাজই মানুষকে দুনিয়ার সব অন্যায় থেকে বিরত রাখতে সহায়ক হবে। কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপনে উৎসাহিত করবে। তাই দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনকে কোনোভাবে প্রাধান্য দেয়া যাবে না।

হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতা মুমিন মুসলমানের করণীয় কী? সে বিষয়েও মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে সুস্পষ্টভাবে পদ্ধতি ঘোষণা করেছেন। যা যেখানে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করে না দেয়। যারা এ রকম করবে (পরিণামে) তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হওয়ার আগেই আমি তোমাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করো।’ (সুরা মুনাফেকুন : আয়াত ৯-১০)

তাইতো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে পরকালের সফলতা পাওয়ার জন্য মৃত্যুর স্মরণের পাশাপাশি আল্লাহর নির্দেশ তাঁর রাস্তায় দান-সাদকায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে বলেছেন-
‘তোমরা (পৃথিবীর) স্বাদ-গন্ধকে বিলুপ্তকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন এবং সুন্নাহ’র ঘোষণায় নিজেদের জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার কল্যাণ ও পরকালের সফলতায় বেশি বেশি মৃত্যুর স্মরণে সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়া তার দেয়া সম্পদ থেকে বেশি বেশি দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন