জিলহজ মাসের যে ইবাদত লাইলাতুল কদরের সমতুল্য
আজ ১২ জুলাই, জিলহজ মাসের প্রথম দিন। রোববার (১১ জুলাই) বাংলাদেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যায়, ফলে ২১ জুলাই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।
হিজরি (আরবি) বছরের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এটি বছরের চারটি সম্মানিত মাসের একটি। অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এ মাস। এ পবিত্র মাসের ১০ তারিখে কুরবানির ঈদ পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে।
জিলহজের প্রথম ১০ দিনের আমলের ফজিলত জিহাদের চেয়েও মর্যাদাবান। হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ দিনগুলোর (জিলহজের প্রথম ১০ দিনের) আমলের তুলনায় কোনো আমল-ই অন্য কোনো সময় উত্তম নয় । তারা বলল : জিহাদও না ? তিনি বললেন : জিহাদও না, তবে যে ব্যক্তি নিজের জানের শঙ্কা ও সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে, অতঃপর কিছু নিয়েই ফিরে আসেনি।’ (বুখারি)
জিলহজ মাসের প্রথম দশকের ফজিলত সম্পর্কে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদত থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেক দিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য। (তিরমিজি)
মূলত যারা হজে যান, তারা জিলহজ মাসের প্রথম দশকে বিশেষ ইবাদতে রত থেকে অতিবাহিত করারই চেষ্টা করে থাকেন। তাই দেখা যায়, হাজিরা ৮ জিলহজ সকাল থেকেই আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তালবিয়া পাঠ করতে করতে মিনার উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে যান। হাজিদের তালবিয়া পাঠের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-
হজরত সহল ইবনে সাআদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন :মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'একজন হজযাত্রী যখন তালবিয়া পাঠ করেন, তখন তার আশপাশের পাথর-নুড়ি, পাহাড়-পর্বত, বৃক্ষলতা সবকিছুই সেই তালবিয়া পাঠে শরিক হয়।' (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
৯ জিলহজ। ইয়াওমে আরাফাহ বা হজের দিন। এ দিন আরাফার ময়দানে অবস্থান করা হজের সবচেয়ে বড় রোকন। এর মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। হাদিসে এসেছে-
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আরাফার দিনের মতো অন্য কোনো দিন আল্লাহ অধিক সংখ্যক ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন না। সেদিন তিনি দুনিয়ার কাছাকাছি হয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলেন, 'দেখ! আমার বান্দারা এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধূসরিত শরীরে আমার দরবারে আগমন করেছে। ‘লাব্বাইকা’ বলে চিৎকার করছে। তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি, আমি সবাইকে মাফ করে দিলাম।'
অন্য হাদিসে এসেছে, 'শয়তান আরাফার দিন সবচেয়ে বেশি ধিক্কৃত, অপদস্থ, ক্রোধান্বিত হয়। কেননা সে তখন আল্লাহর অধিক রহমত এবং বান্দার পাপ মোচন দেখতে পায়।' (মেশকাত)
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে জিলহজ মাসের ফজিলত বুঝার এবং সে অনুযায়ী বেশি বেশি ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম