ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

রমজানের পর ৬ রোজা রাখার  ফজিলত ও মর্যাদা

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ১৭ মে ২০২১

গ্রাম-গঞ্জে এখনও ঈদ পরবর্তী রোজা ‘৬ রোজা’ হিসেবেই বেশি পরিচিত। শাওয়াল মাসের ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ এ ৬ রোজার রয়েছে অনেক প্রতিদান। এ রোজাগুলো পালনে বছরজুড়ে রোজার সাওয়াব পাওয়ার সুখবর দিয়েছেন বিশ্বনবি। তবে বছরজুড়ে সাওয়াব পেতে রয়েছে একটি শর্ত। কী সেই শর্ত?

৬ রোজার (শাওয়াল) মাসে মুমিন মুসলমান আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকেন। হ্যাঁ বছরজুড়ে রোজার প্রতিদান পেতে শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালন করেন মুমিন মুসলমান। কিন্তু বছরজুড়ে এ সাওয়াব পেতে হলে তাকে অবশ্যই আগে রমজানের রোজাগুলো রাখত হবে। এ রোজাগুলো একটানা যেমন রাখা যায় আবার মাসজুড়ে ধীরে ধীরেও রাখা যায়।

ঈদের মাসের ৬ রোজা ফজিলত ও মর্যাদা প্রসঙ্গে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে সুসংবাদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখলো এবং শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলো, এটি (শাওয়ালের ৬ রোজা) তার জন্য সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসলিম)

তাকওয়ার গুণ অর্জন করা নেককার মুমিন মুসলমান ঈদ পালনের পর বছর জুড়ে রোজার সাওয়াব পাওয়ার আশায় শাওয়ালের ৬ রোজা পালন করে থাকেন। এ রোজার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত এবং প্রয়োজনীয়তা। তাহলো-

> ঈদের মাসের ৬ রোজাকে গুরুত্বকে এভাবে তুলনা করা হয়েছে যে, ৬ রোজা হলেঅ ফরজ নামাজের পর সুন্নাতে মুআক্কাদার মতো।

সুন্নাতে মুয়াক্কাদা যখন ফরজ নামাজের উপকারিতা ও তার অসম্পূর্ণতাকে পরিপূর্ণ করে। ঠিক ঈদের মাস শাওয়ালের ৬ রোজাও রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং রমজানের রোজায় কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তা দূর করে থাকে। সে অসম্পূর্ণতা ও ত্রুটি কথা রোজাদারের জানা থাকুক আর না থাকুক।

> রমজানের ফরজ রোজা পালনের পর, ঈদের মাসে পুনরায় রোজা পালনের মানে হলো- রমজানের রোজা কবুল হওয়ার একটি লক্ষণ। যেহেতু মহান আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দার নেক আমল কবুল করেন, তখন তার পরেই তাকে আরও নেক আমল করার তাওফিক দান করে থাকেন। যেমন ওলামায়ে কেরামগণ বলে থাকেন, ‘নেক কাজের পর এ নেক কাজ অব্যাহত রাখা বা চালু রাখাও নেক কাজ।

তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ‘ঈদুল ফিতরের পরের ৬ দিন ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখা উত্তম। যদি কেউ বিরতি দিয়ে রোজা রাখে বা মাসের শেষ দিকে রাখে, তাহলেও হাদিসে ঘোষিত ‘রমজানের পরে’ রোজা রাখার ফজিলত পাওয়া যাবে।

৬ রোজা রাখার সময়

ঈদের মাস শাওয়ালেই ৬ রোজা রাখতে হয়। উত্তম সময় হল ঈদের পরের ৬ দিন। কারণ রমজান ও ঈদ পরবর্তী সময়ে রোজা পালনে রয়েছে নেক আমলের প্রতি ধাবিত হওয়ার প্রমাণ। আর এ কথাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

'যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখার পরপরই শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালন করে। তবে সে যেন সারা বছরই সিয়াম বা রোজা পালন করল। (তিরমিজি)

এ হাদিসের উপর ভিত্তি করেই ওলামায়ে কেরামের কিছু অংশ এ ৬ দিনের রোজাকে মোস্তাহাব বলেছেন। তাছাড়া হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক বলেন, প্রতি মাসের তিন দিন (আইয়্যামে বিজের) রোজা রাখার মতো শাওয়ালের ৬ দিন রোজা রাখাও উত্তম আমল।

৬ রোজা রাখার নিয়ম

শাওয়ালের রোজা ধারাবাহিকভাবে রাখাই ফজিলতপূর্ণ। তবে লাগাতার না রেখে বিচ্ছিন্নভাবেও রাখা যায়। শাওয়াল মাস চলে গেলে তা কাযা করা জরুরি নয়। যেহেতু তা কারো কাছে সুন্নত আবার কারো কাছে মোস্তাহাব।

তাই ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় হোক যথাসময় পার হয়ে গেলে তা কাজা করা আবশ্যক নয়। সুতরাং সম্ভব হলে ঈদের পরপরই এ রোজা একাধারে পালন করা। অথবা বিচ্ছিন্নভাবেও এ রোজা পালন করা যায়।

তবে মনে রাখা জরুরি

শাওয়ালের ৬ রোজায় বছরজুড়ে রোজা রাখার ফজিলত ওই ব্যক্তির জন্যই কার্যকর হবে, যে ব্যক্তি রমজান মাসজুড়ে ফরজ রোজা আদায় করেছেন এবং শাওয়ালের রোজা পালন করেন।

আবার যাদের রমজানের রোজার ভাংতি বা কাজা আছে, তাদের জন্য শাওয়ালের রোজা রাখা জরুরি নয়। সেক্ষেত্রে আগে রমজানের রোজার কাজা আদায় করে নেয়া জরুরি। তারপর সম্ভব হলে শাওয়ালের রোজা আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান পরবর্তী সাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। এ রোজা পালনের মাধ্যমে ঘোষিত ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

আরও পড়ুন