কিশোরগঞ্জের শিশু মুয়াজ ঘরেই মুখস্থ করল পুরো কুরআন
ছোট্ট শিশু আবরারুল হক মুয়াজ। মাত্র ৮ বছর বয়সে পুরো কুরআন মুখস্থ করে হলেন গর্বিত হাফেজ। সবাই বিস্ময় প্রকাশ করলেও তার পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। হাফেজ হওয়ার পেছনে পুরো কৃতিত্ব যে তার মায়ের। ২১ ফেব্রুয়ারি (রোববার) গ্রামবাসীর ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয় ছোট্ট আবরার।
কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ছিলনী গ্রামের হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমানের ৮ বছরের সন্তান আবরারুল হক মুয়াজ। জেলা শহরের উকিলপাড়াস্থ মাদরাসা দ্বীনিয়ার ছাত্র সে।
মহামারি করোনাভাইরাস শুরু আগে বাবার সঙ্গে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহিদি মসজিদে অনুষ্ঠিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা দেখতে যায় মুয়াজ। সেই প্রতিযোগিতায় সমমনা বাচ্চাদের তেলাওয়াত শুনেই সে হাফেজ হওয়ার অনুপ্রেরণা পায়। বাসায় ফিরে এসে দ্রুত হেফজ সম্পন্ন করার বিষয় মা-বাবাকে জানায় ছোট্ট মুয়াজ।
কুরআনুল কারিম হেফজ শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে মহামারি করোনা হানা দেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এ সবের মাঝে থেমে থাকেনি ছোট্ট শিশু আবরারুল হক মুয়াজের পড়াশোনা।
মাদরাসা বন্ধ হওয়ার পর বাসায় বসে মায়ের কাছেই কুরআনুল কারিমের পড়া অব্যাহত রাখেন। নিয়মিত সবক দিতে থাকেন। মুয়াজের হাফেজা ও আলেমা মা কামরুন্নাহার তাকে নিবিড় তত্ত্বাবধানে কুরআনুল কারিম পড়াতে থাকেন। এভাবেই সে মায়ের কাছে ঘরে বসেই পবিত্র কুরআনুল কারিম হিফজ সম্পন্ন করেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ সবক দেন ছোট্ট মুয়াজ।
আবরারুল হক মুয়াজের হাফেজ হওয়ার পেছনে তার মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি। অল্প বয়সে হাফেজ হওয়ায় আনন্দিত পুরো গ্রামবাসী। গ্রামবাসীদের কথা-‘হাওরের কাঁদা মাটিতে জন্ম নেয়া মুয়াজ গ্রামের গৌরব এনেছে।’
মুয়াজের মায়ের জন্য বিষয়টি ছিল অনেক চ্যালেঞ্জের। ঘরে বসে ছেলেকে নিয়ে কঠিন এ কাজটি সুসম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন হাফেজা কামরুন্নাহার।
এদিকে মুয়াজের অল্পবয়সে হাফেজ হওয়ায় আনন্দিত ছিলনী গ্রামের লোকজনও। হাওরের কাদামাটি ছাওয়া অঞ্চলে জন্ম নেওয়া মুয়াজ অঁজপাড়া গ্রামে গৌরব বয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
হাফেজ ও আলেম দম্পতির সন্তান আবরারুল হক মুয়াজ ঘর বসেই পবিত্র কুরআনুল কারিম হিফজ সম্পন্ন করেছেন। মুয়াজ হতে পারে প্রতিটি পরিবারের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পরিবারের সদস্যা দেশবাসীর কাছে মুয়াজের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা ছোট্ট শিশু আবরারুল হক মুয়াজকে কুরআনের খাদেম হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস