যে ৬ কাজে জান্নাতের জিম্মাদার হবেন বিশ্বনবি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'দুনিয়া আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র।' দুনিয়ার কাজের উপর নির্ভর করেই হবে পরকালের ফায়সালা। এ কারণেই দুনিয়াতে মানুষের প্রতি বিধি-নিষেধ স্বরূপ বিধান দেয়া হয়েছে। যারা দুনিয়াতে এ সব বিধানের মধ্য থেকে ছয়টি কাজ যথাযথভাবে করার ওয়াদা দিতে পারবে তাদের জন্যই জান্নাতের জিম্মাদার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। মানুষ আল্লাহর জমিনে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবে, বিনিময়ে মহান আল্লাহ পরকালীন জীবনে দান করবেন সর্বোচ্চ সফলতা। যার ওয়াদা করেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
জান্নাত লাভের ৬ আমল
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতদের লক্ষ্য করে বলেছেন, ‘আমাকে ৬টি আমল মেনে নেয়ার ব্যাপারে ওয়াদা দাও; আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা দেব।’ তাহলো-
- সবসময় সত্য কথা বলা।
- ওয়াদা দিলে তা পূর্ণ করা।
- আমানতের খেয়ানাত না করা।
- ইজ্জতের (লজ্জাস্থানের) হেফাজত করা।
- দৃষ্টি অবনত রাখা।
- জুলুম করা থেকে বিরত থাকা।
উপকারিতা
সব সময় সত্য বলা, ওয়াদা পূর্ণ করা এবং আমানত রক্ষা করা- এ তিনটি শর্তই মহান আল্লাহ এবং বান্দার সঙ্গে সম্পর্কিত। আর বাকি তিনটি বান্দার প্রতি মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ।
- সবসময় সত্য বলা
প্রথমত আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে স্বীকার করা। একনিষ্ঠ অন্তরে তাওহিদের কালেমা পড়া। কেননা মুখে কালেমা পড়া আর অন্তরে বিপরীতমুখী কাজ হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যাচার ও মুনাফেকি। আর বান্দার বিষয়টি হলো সবসময় বাস্তব পরিপন্থী কথা থেকে বিরত থাকা অর্থাৎ মিথ্যা ত্যাগ করা।
- ওয়াদা পালন
আলমে আরওয়াহ বা রুহের জগতে আল্লাহ তাআলাকে প্রতিপালক হিসেবে স্বীকার করেছিল। তাঁর অনুগত থাকার ওয়াদা করেছিল মানুষ। বান্দার জন্য এ ওয়াদা পালন জরুরিই নয় বরং তা আবশ্যক। বান্দার জন্য আল্লাহকে প্রভু হিসেবে মেনে নেয়ার এ ওয়াদা পালনেই রয়েছে জান্নাতের নিশ্চয়তা।
- আমানত রক্ষা করা
ঈমান ও ইসলামের বিধি-বিধান বান্দার কাছে আল্লাহর আমানত। এ আমানত রক্ষা করা মানুষের জান্নাত লাভের অন্যতম শর্ত।
- আল্লাহর ৩ নির্দেশ
৬টি ওয়াদার মধ্যে শেষ ৩টি ওয়াদা বান্দার প্রতি মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। উপরের অধিকার ও পরের এ নির্দেশগুলো যথাযথ আদায় করলেই জান্নাতের ওয়াদা দেয়ার কথা বলেছেন বিশ্বনবি।
আল্লাহর নির্দেশ পালনে কোনো বান্দা যদি চরিত্রকে হেফাজত করে। নিজের দৃষ্টি নিচু রাখে। অন্যের প্রতি অত্যাচার না করে তবে কোন ব্যক্তি তার চেয়ে উত্তম পারে?
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত ৬টি ওয়াদা পালন করা একান্ত আবশ্যক। এতে শুধু পরকালে জান্নাতের নিশ্চয়তাই নয়, বরং দুনিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত ৬টি ওয়াদা যথাযথভাবে পালন করার সামর্থ্য দান করুন। বিশ্বনবির ঘোষিত ওয়াদা অনুযায়ী জান্নাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম