ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

ফেরেশতারা যে সন্তানের সুসংবাদ দিয়েছিলেন

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:২৪ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২০

দুনিয়াতে নারী-পুরুষের মাধ্যমেই মানুষের জন্ম হয়। এটি মহান আল্লাহর ক্ষমতার নিদর্শন। তার ক্ষমতার আরও দুটি অনন্য নিদর্শন রয়েছে। একটি হলো নারী-পুরুষ ছাড়া মানুষ সৃষ্টি আর দ্বিতীয় হলো পুরুষ ছাড়া শুধু নারী থেকে মানুষ সৃষ্টি। আর এসবই মহান আল্লাহর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। যার দৃষ্টান্ত হজরত আদম ও ঈসা আলাইহিস সালাম। হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের আগে ফেরেশতারা হজরত মারইয়ামকে সে সুসংবাদ এভাবে দেন-

إِذْ قَالَتِ الْمَلآئِكَةُ يَا مَرْيَمُ إِنَّ اللّهَ يُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةٍ مِّنْهُ اسْمُهُ الْمَسِيحُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَجِيهًا فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمِنَ الْمُقَرَّبِينَ - وَيُكَلِّمُ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ وَكَهْلاً وَمِنَ الصَّالِحِينَ

(স্মরণ কর) যখন ফেরেশতাগণ বললো, হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে তাঁর এক কালেমা (দ্বারা সৃষ্ট সন্তানের) সুসংবাদ দিচ্ছেন; যার নাম হবে মসীহ, মারইয়াম পুত্র ঈসা। সে হবে দুনিয়া ও আখেরাতে মহাসম্মানের অধিকারী এবং আল্লাহর ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভূক্ত। যখন তিনি মায়ের কোলে থাকবেন এবং পূর্ণ বয়স্ক হবেন তখন তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন। আর তিনি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৪৫-৪৬)

আয়াতের ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ
স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা হজরত মারইয়ামকে বলল- হে মারইয়াম, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে একটি কালেমার সুসংবাদ দেন, যা তাঁর পক্ষ থেকে হবে অর্থাৎ একটি শিশুর সুসংবাদ দেন। যিনি পিতা ছাড়া হওয়ার কারণে ‘কালেমাতুল্লা বা আল্লাহর বাণী’ বলে কথিত হবে। তাঁর নাম ও উপাধি হবে মাসিহ ঈসা ইবনে মারইয়াম।

তাঁর অবস্থা হবে এই যে, তিনি দুনিয়ায় আল্লাহর কাছে মর্যাদাবান হবে অর্থাৎ নবুয়ত লাভ করবেন। আর পরকালে নিজ উম্মতের মুমিনদের ব্যাপারে সুপারিশকারী হবেন।

এছাড়া নবুয়ত ও সুপারিশের অধিকারসহ যার সম্পর্কে অন্যের সঙ্গেও ব্যক্তিগত পরাকাষ্ঠারও অধিকারী হবেন। আল্লাহর নৈকট্যশীলদের অন্যতম হবেন।

তিনি মুজিজার অধিকারী হবেন, মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন শৈশবাবস্থায় দোলনাতে আর পরিণত বয়সেও। উভয় কথাবার্তায় কোনো পার্থক্য হবে না। আর তিনি উৎকৃষ্ট শ্রেণীর সৎকর্মশীলদের অন্যতম হবেন। (মারেফুল কুরআন)

প্রাসঙ্গিক আলোচনা
আলোচ্য আয়াত হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের অবতরণের একটি প্রমাণ। তিনি শৈশবে যে বয়সে কোনো শিশু কথা বলতে সক্ষম নয়, তিনি সে বয়সে দোলনায়ও কথা বলবেন। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে-
জন্মের পর যখন ইয়াহুদিরা মারইয়ামের প্রতি অপবাদ দিয়ে ভৎসনা করতে থাকে, তখন সদ্যজাত শিশু ঈসা আলাইহিস সালাম বলে ওঠেন, ‘আমি আল্লাহর বান্দা।

আলোচ্য আয়াতে আরও বলা হয়েছে, তিনি যখন বড় হবেন তখনও মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। এখানে বুঝার বিষয় হলো-
দোলনায় কথা বলা নিঃসন্দেহে অলৌকিক ব্যাপার, আর তা উল্লেখ করাও যথাযথ হয়েছে। কিন্তু বয়স্ক হওয়ার পর কথা বলা তো অলৌকিক বিষয় নয়; কেননা বয়স হলে, মুমিন, কাফির, পণ্ডিত কিংবা মুর্খ- সবাই কথা বলে। আয়াতে তা উল্লেখ করার কারণ কী?
এ প্রসঙ্গে বয়ানুল কুরআনের ব্যাখ্যায় এসেছে- শৈশবের কথার বর্ণনাই মূল উদ্দেশ্য। কেননা দোলনায় তাঁর কথা বলার ধরণে শিশুসুলভ আচরণ বা ভাষা প্রকাশ হবে না। বরং তা হবে বয়স্ক মানুষের মতোই।

এ আয়াতের আরেকটি বিষয় হলো এমন-
হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম বেশি বয়সে উপনীত হওয়ার আগেই তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাঁর বয়স যখন ৩০-৩৫ বছর, তখন তাঁকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। বেশি বয়স্ক বলতে যা বুঝায়, তা এখনও ঘটেনি। যখন তিনি পুনরায় দুনিয়াতে আসবেন তখনই বয়স্ক অবস্থায় কথা বলা সম্ভব হবে।

সুতরাং দোলনাতে তাঁর কথা বলা যেমন ছিল অলৌকিক। ঠিক পুনরায় দুনিয়াতে এসে তাঁর কথা বলাও হবে অলৌকিক ব্যাপার।

কুরআনুল কারিমের এ আয়াতে ফেরেশতারা এ বিষয়গুলোই হজরত মারইয়ামকে সবিস্তারে জানিয়েছেন।

এমএমএস/পিআর

আরও পড়ুন