হজের দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা
আগামী ৩০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) আরাফাতের ময়দানে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ দিনের রোজা পালন সম্পর্কে হাদিসে অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আবার এ দিনের আমলের মর্যাদার কথাও বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। যা মুমিন মুসলমানের জন্য খুবই জরুরি। হাদিসের আলোকে আরাফার দিনের ফজিলত ও মর্যাদা হলো-
- হজরত আবু কাতাদার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আরাফার (হজের দিনের) রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আরাফার দিনের (হজের দিনের) রোজা পেছনে এক বছর এবং সামনের এক বছরের গোনাহের কাফফারা হবে। আর তাকে আশুরার রোজার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিগত এক বছরের গোনাহের কাফফারা হবে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
- হজরত কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আরাফাহ তথা হজের দিনের রোজা। আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি যে তিনি পেছনের এক বছরের গোনাহ এবং সামনের এক বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।' (মুসলিম)
- হজরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আরাফার দিন রোজা রাখে তার একাধারে দুই বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (আবু ইয়ালা, আত-তারগিব)
উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, হজের দিনের তথা আরাফার দিনের রোজা পালনের গুরুত্ব ও মর্যাদা কত বেশি। হজের দিন এমন একটি দিন, যে দিন আল্লাহ তাআলা বান্দার খুব কাছাকাছি হয়ে যান। বান্দার চাহিদা সম্পর্কে ফেরেশতাদের জিজ্ঞাসা করেন? আর সবচেয়ে বেশি বান্দাকে ক্ষমা করেন। হাদিসে এসেছে-
- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বছরের মধ্যে এমন কোনো দিন নেই যে, আল্লাহ তাআলা আরাফার দিন অপেক্ষা অধিক সংখ্যায় তার বান্দাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন। আর আরাফার দিন আল্লাহ তাআলা বান্দার অধিক কাছাকাছি থাকেন। অতপর ফেরেশতাদের কাছে গৌরব প্রকাশ করে জানতে চান- আমার এ বান্দাগণ কী চায়? (মুসলিম)
হজের দিন বা আরাফাতের দিন রোজা পালন, ইবাদত-বন্দেগি করা মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ দিনে আল্লাহর মেহমানরা আরাফাতের ময়দানে মহান আল্লাহর কাছে গোনাহ মাফ ও নানান আবেদন নিয়ে রোনাজারি করে থাকেন। মহান আল্লাহ এ দিনটিতে আবেদনকারীর সব আবেদন পূরণ করে নেন এবং তাদের ক্ষমা করে দেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হজের মাসের অন্যতম দিন হজের দিন রোজা পালন করা। এ বছর হজ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জিলহজ তথা বৃহস্পতিবার। তাই এ দিন রোজা পালন করে পেছনের ও সামনে এক বছরের গোনাহ মাফসহ নিজেদের সারা জীবনের গোনাহ থেকে মুক্তির আশায় রোজা পালন করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আরাফার দিন রোজা রাখার পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আরাফার দিনের আগের ও পরের বছরের গোনাহ থেকে নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। সর্বোচ্চ প্রতিদান জান্নাত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম