ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

যে কাজ করলে অভাব ও ব্যস্ততায় কষ্ট পায় মানুষ

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:৩২ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২০

 

অলসতা-অবহেলা কিংবা বেখেয়াল সব কাজের জন্যই ক্ষতিকর। কোনো কাজের জন্যই এগুলো কল্যাণকর নয়। ভূলবশতঃ কোনো কাজে দেরি হওয়া অলসতা নয়। তবে ইচ্ছাকৃত অলসতা করা বা কোনো কাজে গুরুত্ব না দেয়ায় রয়েছে মানুষে অনেক ক্ষতি। এমনকি এ কাজে আল্লাহ তাআলা মানুষের উপর অভাব-দুর্ভোগ ও ব্যস্ততা চাপিয়ে দেন।

কুরআনুল কারিমে অলসতা ও বেখেয়াল হওয়াকে ধ্বংসাত্মক দুর্ভোগের কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তা হোক ইবাদত-বন্দেগি কিংবা দুনিয়ার জীবনের প্রয়োজনীয় যে কোনো কাজ।

এ কারণেই কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী অলসতা, বেখেয়াল, ইচ্ছাকৃত দেরি, কাজের সময় হয়নি ভেবে বসে থাকা কিংবা পরে করলেও কোনো ক্ষতি হবে বলে রেখে দেয়া কোনোটিই সঠিক কাজ নয়।

কুরআনের সতর্কতামূলক নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এ সব বিষয়ে তাঁর উম্মতকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগি ও তার বিধি-বিধান পালনের বিষয়ে যারা আগ্রহী তাদের জন্য সুসংবাদ দিয়েছেন আর যারা অলসতা বা অবহেলাকারী তাদের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা প্রকাশ করেছেন। তিরমিজি ও ইবনে মাজাহর বর্ণনায় হাদিসে কুদসিতে এসেছে-
'রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন- ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি নিজের অবসর সময় তৈরি কর ও ইবাদতে মন দাও; তাহলে আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না কর; তবে- তোমার হাতকে ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব কখনোই দূর হবে না।’ (নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক)

হাদিসের এ ঘোষণা অনুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিসহ ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান পালনে নিজেকে যেমন তৈরি করা আবশ্যক, আবার এসব কাজ করার জন্য সময় বের করাও ঈমানের একান্ত দাবি। আবার দুনিয়ার জীবনে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে অলসতা না করে সময়ের কাজ সময়ে করাও জরুরি।

কুরআনুল কারিমের বেখেয়াল লোকদের উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন, 'অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্বন্ধে বে-খবর।' (সুরা মাউন : আয়াত ৪-৫)

মনে রাখতে হবে
ইবাদত-বন্দেগি ও নামাজের অজুহাত দিয়ে নামাজের পর যেমন মসজিদে বসে অলস সময় কাটানো যাবে না। তেমনি সাংসারিক কাজ-কর্মের অজুহাত দিয়ে নামাজ ও ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রেও ব্যস্ততা দেখানো যাবে না।

কেননা মহান রাব্বুল আলামিন বান্দাকে উদ্দেশ্যে করেই বলেছেন যেন আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে নামাজের উদ্দেশ্যে রেব হয়। আবার নামাজ শেষ হলেই জীবিকার সন্ধানে জমিনে ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
'মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দ্রুত বেরিয়ে পড় এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।' (সুরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)

মানুষের জন্য কতই না মারাত্মক কথা!
‘যে ব্যক্তি ইবাদত-বন্দেগির জন্য সময় বের করতে পারবে না আল্লাহ তাআলা তার পুরো সময়কে এমন ব্যস্ততায় ভরে দেবে যে, তার অভাব ও ব্যস্ততা কখনই শেষ হবে না।'

অথচ আল্লাহর স্মরণই মানুষকে সব কাজে সুন্দর ও সঠিক পথ দেখায়, কল্পনাতীত জায়গা থেকে উত্তম রিজিকের ব্যবস্থা করে দেয়। আর তাতে সুন্দর ও উত্তম জীবন লাভ করে মুমিন।

তাই মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়ার এ সংক্ষিপ্ত জীবনে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগির জন্য নির্ধারিত সময় বের করে তাঁর স্মরণে নিজেকে নিয়োজিত করা। আর এ কাজে মহান আল্লাহ মুমিন মুসলমানকে দান করবেন প্রাচুর্য আর তাকে অভাব-দুর্যোগ ও ব্যস্ততা থেকে মুক্তি দেবেন।

সুতরাং ইবাদত-বন্দেগিতে ব্যস্ততা বা তাড়াহুড়ো বা অলসেমি নয় বরং সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে ইবাদত পালন করে দুনিয়ার স্বচ্ছলতা ও স্বচ্ছন্দ্যপূর্ণ জীবন লাভের পাশাপাশি পরকালের সফলতা লাভ করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উপর আমল করে দুনিয়ার জীবনে ইবাদত-বন্দেগি ও বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বচ্ছলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। অবহেলা, অলসতা ও বেখেয়াল হওয়া থেকে মুক্তি দিন। দুনিয়ার ব্যস্ততা, অভাব ও দুর্যোগ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস