ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

কেউ গালিগালাজ করলে যেভাবে কথা বলবে মুমিন

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ২৮ জুন ২০২০

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে মানুষকে কথা বলার নসিহত এভাবে পেশ করেছেন যে, তোমরা মানুষের সঙ্গে উত্তম ভাষায় (নরম নরম) কথা বল।' মানুষ হাড়বিহীন যে জিহ্বা দিয়ে কথা বলে, তা অত্যন্ত নরম। সুতরাং নরম জিহ্বা দ্বারা শক্ত বা কটু কথা বলার কোনো সুযোগ নেই।

নরম ও সুন্দর কথায় রয়েছে কল্যাণ ও রহমত। তাই কেউ কাউকে গালাগাল করলে তার জবাব দিতে হবে সুন্দর ও উত্তম ভাষায়। কুরআন সুন্নাহর নির্দেশনাও এমন। উত্তম ও সুন্দর ভাষায় কথা বললে সেখানে আর ঝগড়া হবে না। শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করবে।

এ কারণেই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তম কথা বলার ব্যাপারে অসংখ্য নসিহত পেশ করেছেন। হাদিসে এসেছে-
- হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতের মধ্যে একটি বালাখানা রয়েছে, যার ভেতর থেকে বাইরের এবং বাইরে থেকে ভেতরের দৃশ্য দেখা যায়। এক বেদুঈন বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই বালাখানা কার জন্য? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
> যে ব্যক্তি মানুষের সাথে ভালো (উত্তম ভাষায়) কথা বলে;
> যে ব্যক্তি অনাহারীকে খাবার দেয়;
> যে ব্যক্তি রোজা রাখে; এবং
> যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। (তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)

এ হাদিসের প্রথম অনুপম শিক্ষা হলো, সুন্দর ও উত্তম ভাষায় কথা বলা। যদি কেউ কাউকে গালাগালও দেয় তারপরও ওই ব্যক্তির সঙ্গে উত্তম ভাষায় সুন্দর কথা বলা।

মুমিন মুসলমানের উচিত ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, তথা রাষ্ট্রীয় জীবনের সবক্ষেত্রে উত্তম কথা বলা। অপরকে উত্তম কথা বলতে উৎসাহ দেয়া। প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো করে উত্তম কথা বলার প্রচলনে সচেষ্ট থাকা। তবেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের সফল বাস্তবায়ন হবে। আর জান্নাতে উত্তম বালাখানা লাভ করবে উত্তম কথার অধিকারী ব্যক্তি।

- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অন্যথায় চুপ থাকে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমজি, মুসনাদে আহমদ, ইবনু মাজাহ)।

এ হাদিসের অন্যতম শিক্ষা হলো, অন্যের সঙ্গে উত্তম ভাষায় কথা বল। যদি কথা বললে প্রতিবন্ধকতা বা বাধার সৃষ্টি হয় কিংবা কোনো খারাপ পরিস্থিতির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে ধৈর্যের সঙ্গে চুপ থাকা।

মুসলিম উম্মাহকে উত্তম ভাষায় কথা বলার বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোট্ট একটি আমল উল্লেখ করেছেন। আর তাহলো-
একদিন হজরত মিকদাম রাদিয়াল্লাহু আনহু জানতে চান, ‘কী আমল করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে?` রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, `তুমি উত্তম কথা বলো এবং মানুষকে খাবার দান কর।' (সিলসিলাহ সহিহাহ)।

উল্লেখিত প্রত্যেকটি হাদিসই মুমিন মুসলমানের জন্য আমল ও জান্নাতের সুসংবাদ দেয়। যে ব্যক্তি হাদিসের ওপর আমল করে কথা-বার্তায় শালিন হবে। কারো গালাগালের বিপরীতেও উত্তম কথায় জবাব দেবে কিংবা চুপ থাকবে, ওই ব্যক্তির জন্যই থাকবে জান্নাতের বালাখানা, ধৈর্য্যের প্রতিদান, জান্নাতে যাওয়ার সুনিশ্চিত গ্যারান্টি।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গালাগাল ও বৈরি পরিবেশে উত্তম ভাষায় কথা বলার কিংবা চুপ থাকার মাধ্যমে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। সব সময় পরস্পরের সঙ্গে অন্যায় ও অশালীন বাক্য বিনিময় পরিত্যাগ করে উত্তম কথা বলার অভ্যাস গঠনের তাওফিক দান করুন। এ অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের জান্নাত দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

আরও পড়ুন