যেভাবে কুধারণা থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবে মুমিন
নফস ও নফসের নিয়ন্ত্রণ অনেক বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নফসের কারণেই মানুষের ভালো ও মন্দ কাজের দিকে ধাবিত হয়। নফসের তাড়নায় মানুষ অহংকারী হয়ে ওঠে। আবার নফসের নিয়ন্ত্রণে মানুষ ভালো ও কল্যাণের কাজের দিকে ধাবিত হয়। এ কারণেই মানুষ নফ্স কিংবা অহংকারী আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ রাখার অভ্যাস গড়ে তুলবে।
নফস নিয়ন্ত্রণে মুমিনের কাজ
নফসের তাড়নায় মানুষ অনেক অসৎ কাজ করে থাকে । তাই প্রত্যেক মুমিন বান্দাই নিজের উৎসাহ-উদ্দীপনা, চিন্তাধারা ও কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। নিজের অন্তরকে বিপথে পরিচালিত হওয়া, চিন্তাধারা বিক্ষিপ্ত হওয়া এবং দৃষ্টিকে অসৎ হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
কামনা-বাসনার অসৎভাব ও কুদৃষ্টি দ্বারা মন ও মস্তিষ্ক শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হয়। নফসের উপর জুলুমকারীদের চেহারা, যৌবনের সৌন্দর্য এবং সুপুরুষসুলভ গুণ থেকেও বঞ্চিত হয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভিরু, কাপুরুষ হিসেবে পরিগণিত হয়। তাদের ধ্বংস হয়ে ওঠে অনিবার্য।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চোখের জেনা হলো কুদৃষ্টি আর মুখের জেনা হলো অসৎ আলোচনা, অতপর মনের আকাঙ্ক্ষা করে, গুপ্তাঙ্গের কাজকে সত্যে পরিণত করে অথবা মিথ্যায় প্রতিফলিত কর।'
নফসের তাড়নায় নিজেকে খারাপ-অশ্লীল আলোচনা ও কুকাজে নিয়োজিত করলে দুনিয়ায় বিশেষ ৩টি ক্ষতিতে পতিত হয়। আর তাহলো-
- মানুষের চেহারার সৌন্দর্য ও আকর্ষণ নষ্ট হয়ে যায়।
- মানুষের ওপর অভাব-অনটন চেপে বসে।
- মানুষের হায়াত কমে যায়।'
আর পরকালের সীমাহীন জীবনের ক্ষতিতো রয়েছে। কবর থেকে শুরু করে বিচার দিবস পর্যন্ত প্রতিটি মানজিলেই রয়েছে বিপদ ও আজাবের ঘোষণা।
তাই নফসের যাবতীয় কুধারণা থেকে মুক্ত থাকা জরুরি। নফসের কুধারণা ও তাড়না থেকে মুক্ত থাকতে বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করা জরুরি। আল্লাহর কাছে তাওবাহ ও ইসতেগফারই মানুষকে নফসের কুধারণা ও ক্ষতি থেকে মুক্ত রাখতে পারে। তাই বেশি বেশি এ ইসতেগফার করা-
- رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : 'রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।'
অর্থ : 'হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।'
নিয়ম : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।' (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের নফসের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করার তাওফিক দান করুন। খারাপ কাজ ও কুধারণা থেকে মক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম