ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

রোজার ফিতরা সাদকা ফিদইয়া কাফফারা গরিবের অধিকার

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:৩৭ এএম, ২৪ মে ২০২০

রোজার ফিতরা, সাদকা, ফিদইয়া ও কাফফারা গরিবের হক। ঈদগাহে যাওয়ার আগেই তা আদায় করা জরুরি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ফিতরা আদায় করার আগ পর্যন্ত রোজা আসমান ও জমিনের মাঝে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।' সুতরাং ঈদের আগেই গরিবের এসব হক আদায় করা আবশ্যক।

>> ফিতরা
সম্পদের মালিক স্বাধীন-পরাধীন নারী-পুরুষ দায়িত্বশীল পরিবারের ছোট-বড় সবার পক্ষ থেকে ঈদগাহে যাওয়ার আগেই ফিতরা আদায় করবেন। সাধারণত এ ফিতরা রমজানের শেষ দিনগুলোতে কিংবা ঈদের চাঁদ ওঠার পর থেকেই রাতে ও সকালে আদায় করা হয়। কেউ কেউ ঈদের দিন ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করে থাকেন।

ফিতরা রোজার ভুল-ত্রুটির সংশোধন, সিয়াম সাধনায় সুন্দরভাবে রোজা পালনের কৃতজ্ঞথায় এ ফিতরা আদায় করে মুমিন মুসলমান। কেননা এ ফিতরা গরিব-অসহায়দের অধিকার।

সুতরাং আপনজনদের মধ্য থেকে কিংবা প্রতিবেশির মধ্য থেকে প্রকৃত দরিদ্রদের খুঁজে বের করে তাদের হাতে ফিতরার মূল্য দিতে হবে। আপনজন ও প্রতিবেশিদের মধ্যে ফিতরা বিতরণ করা উত্তম। যাতে করে এলাকার প্রকৃত দরিদ্ররা সেখানকার ধনীদের দ্বারা উপকৃত হতে পারে।

>> সাদকা
কুরআনের ভাষ্যমতে সাদকা তারদানকারীকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে। সাদকা কেবলমাত্র সম্পদ দ্বারাই আদায় করতে হয় তা নয়; বরং অন্যের উপকারার্থে কোনো ভালো কাজ সম্পাদন করা অথবা অন্যের সঙ্গে সদাচরণ ও ভালমন্দের সহযোগিতা করা এমনকি হাসি মুখে কথা বলাও সাদকার অন্তর্ভুক্ত। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'প্রতিটি ভালো কাজই সাদকা।‘
কাউকে অপমান করে দান করার চেয়ে বরং কারো সঙ্গে সুন্দর, অমায়িক ও মার্জিত আচরণের ভাব বিনিময়ই উত্তম সাদকা।

এ দান-সাদকা হতে হবে আল্লাহর জন্য। লোক দেখানো কোনো সাদকা বা দানই আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন না। সমাজে এক শ্রেণির লোক আছে যারা দারিদ্র্যকে পুঁজি করে মানুষের কাছে হাত পাতাকে নিজেদের অভ্যাস বানিয়ে নিয়েছে।

আবার শ্রেণির লোক আছে যারা অভাবে থাকা সত্ত্বেও চক্ষুলজ্জার কারণে সচরাচর অন্যের কাছে হাত পাতে না। পবিত্র কুরআনে দান-সাদকা করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণির লোকদেরক প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে।

>> ফিদইয়া
অসুস্থতা কিংবা বার্ধক্যজনিত কারণে যারা রমজানের রোজা রাখতে পারেননি, আর তাদের সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, এমন ব্যক্তিরাই রোজার ফিদইয়া আদায় করবে। তারা প্রতিটি রোজার বদলে একজন করে দরিদ্র ব্যক্তিকে আহার করাতে হবে। ইসলামের পরিভাষায় এটিকেই ফিদইয়া বলা হয়।

তবে কোনো সুস্থ ব্যক্তি যদি ভ্রমণ, গর্ভধারণ, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো কিংবা অন্য কোনো শরীয়তসম্মত কারণে রোজা রাখতে না পারে, তাহলে অন্য সময়ে তা আদায় করে দিতে পারবে। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর ফিদইয়ার প্রয়োজন নেই।

ফিদইয়া আদায় তথা কোনো দরিদ্রকে খাওয়ানোর বিভিন্ন উপায় রয়েছে। সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো- ফিদইয়া যার উপর আবশ্যক, সে নিজে উপস্থিত থেকে গরিব-মিসকিনকে খাওয়াবে। তা সম্ভব না হলে, সে অন্য কোনো বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে এ দায়িত্ব দিতে পারে।

>> কাফফারা
শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে রমজানের রোজা ভেঙে ফেলে কিংবা না রাখলে তাকে রোজার কাফফারা আদায় করতে হবে। আর রোজার কাফফার হলো, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রতিটি রোজার জন্য লাগাতার ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে।

উল্লেখ্য অঞ্চলভেদে ফিতরা ও ফিদইয়ার অর্থ ভিন্ন হতে পারে। এ বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফিতরার ৫ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সর্ব নিম্ন গম/আটায় ৭০ টাকা, যব দিয়ে ২৭০ টাকা, কিসমিস দিয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা, খেজুর দিয়ে ১ হাজার ৬৫০ টাকা আর পনির দিয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়াও সামর্থ্য অনুযায়ী আরও উন্নতমানের এসব পণ্যের দ্বারাও ফিতরা আদায় করা যেতে পারে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসময়ে যথাযথভাবে গরিবরে অধিকার ফিতরা, সাদকা, ফিদইয়া এবং কাফফারা আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

আরও পড়ুন