করোনায় মুসলিম-ইয়াহুদি মৃতদের দাফনেও পরিবর্তন!
প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনার ফলে জেরুজালেমের মুসলিম ও ইয়াহুদিদের মৃত দেহের দাফন ও পরবর্তী সময়ের নিয়ম-কানুনে আসছে বেশি কিছু পরিবর্তন। এমনই খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স।
মহামারি করোনা সংক্রমণের এই সময়ে ইয়াহুদি ও মুসলিমরদের যে কেউ মারা গেলেই তাদেরকে দাফন করার সময় কাপড়ের পরিবর্তে পালাস্টিকে মুড়িয়ে কবরস্থ করা হচ্ছে। মহামারি করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতেই নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকে মুড়িয়ে মৃতদের দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেরুজালেম কর্তৃপক্ষ।
ইসরাইলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে করোনা সংক্রমিক হয়ে ২৯ জন মারা গেছে। অন্যদেরকে এ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই তাদের নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকে মুড়িয়ে দাফন দেয়।
এ ছাড়া দেশটি করোনা সংক্রমণ থেকে অন্যদের মুক্ত রাখতে পারস্পরিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবন-যাপন নিশ্চিত করা হয়েছে। পারস্পরিক মেলামেশা, কোলাকুলি ও হ্যান্ডশেক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সরকারি নির্দেশে লাশ দাফনের সব নিয়ম-
>> লাশ ধোয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি।
>> বিশেষ ধরনের নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়িয়ে দাফন করা।
>> মৃতের পরিবারের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমবেদনা জ্ঞাপনের ব্যবস্থা।
>> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।
>> দাফনের সময় দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ ২০জনের বেশি গোরস্থানে উপস্থিত হওয়া যাবে না।
সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, জেরুজালেম অঞ্চলে বসবাসরত মৃত মুসলিমদের দাফনেও আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন। লাশের কাফন হিসেবে কাপড়ের পরিবর্তে নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকের প্যাকেটে আবৃত করে কফিন ছাড়াই কবরস্থ করা হচ্ছে।
ইহাব নাসেরআলদীনের ভাই মারা গেছেন ক্যানসারে৷ তারপরও জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদে তার নামাজে জানাজা হয়নি৷ হাসপাতাল থেকে সরাসরি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ৷বৃহত্তর স্বার্থে সবাই নতুন নিয়ম মেনে নিয়েছে জানিয়ে ইহাব বলেন, ‘‘ আমরা লাশ দাফন করেছি এবং সবাইকে বলেছি কবরস্থান কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে শোক জানাতে ৷ হাত মেলানো, কোলাকুলি করা এবং চুমু খাওয়া এখানকার রীতি হলেও সবাইকে এসব না করতে বলে দিয়েছি৷’’
জেরুসালেম এবং ফিলিস্তিনের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মুহাম্মদ হুসেইন বলেন, ‘‘প্রয়োজনের তাগিদে এই নিয়ম৷’’
সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, জেরুজালেম অঞ্চলে বসবাসরত মৃত মুসলিমদের দাফনেও আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন। লাশের কাফন হিসেবে কাপড়ের পরিবর্তে নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকের প্যাকেটে আবৃত করে কফিন ছাড়াই কবরস্থ করা হচ্ছে। অনেককে জানাজা ছাড়াই দাফন করা হচ্ছে।
জেরুজালেমে নাসের আলদ্বীন নামে এক ব্যক্তির ভাই ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সত্ত্বেও তাকে জেরুজালেমের মসজিদে আকসায় জানা দেয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে সরাসরি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
মৃতের ভাই নাসের আলদ্বীন নিরাপত্তার বৃহত্তর স্বার্থে ইসরাইলের নতুন নিয়ম মেনে বলেন, ‘আমরা লাশ দাফন করেছি এবং সবাইকে বলেছি কবরস্থান কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে শোক জানাতে ৷ হাত মেলানো, কোলাকুলি করা এবং চুমু খাওয়া এখানকার রীতি হলেও সবাইকে এসব না করতে বলে দিয়েছি।’
করোনা পরিস্থিতির কারণে গৃহীত নতুন নিয়ম সম্পর্কে জেরুজালেম এবং ফিলিস্তিনের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মুহাম্মদ হুসেইন বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদেই এই নিয়ম৷’
এছাড়াও জেরুজালেম অঞ্চলের ইয়াহুদিরা সাধারণত লাশ দাফন শেষ হওয়ার পর থেকে সাতদিন পর্যন্ত ‘শিভা’ রেওয়াজ পালন করে থাকে। এ সাতদিন তাদের আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবরা মৃত ব্যক্তি বাড়িতে খাবার-দাবার প্রদান করতো এবং সমবেদনা জানাতো। করোনার কারণে এসব নিয়মও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৬১১ জন। মারা গেছে ৫১ জন। আর ফিলিস্তিনে ২৩৭ জন আক্রান্ত হলেও মারা গেছে ১জন। তবে দাফনের এ নিয়ম ইসরাইল দখলকৃত জেরুজালেমে জারি করা হয়েছে।
এমএমএস/পিআর