বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে শিক্ষার্থীর বাবা ও ভাইকে গুম
ইরশাদ আব্দুল আহাদ। চীনের জিংজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিম শিক্ষার্থী। মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরামি বিজ্ঞান ও আরবি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছেন। মিসরের আল-আজহারে পড়তে যাওয়ার অপরাধে এই শিক্ষার্থীর বাবা ও ভাইকে ২০১৭ সালে গ্রেফতার করে চীন সরকার।
২০১৭ সালে গ্রেফতারের পর থেকে আর তাদের খবর জানেন না পরিবার। ইরশাদ আব্দুল আহাদের দাবি, যেহেতু বাবা ও ভাইয়ের কোনো সন্ধান নেই, তাহলে চীনা কর্তৃপক্ষ আমার বাবা ও ভাইকে গুম করে হত্যা করেছে। এক ভিডিও টুইটারে এমনই তথ্য দিয়েছেন ইরশাদ আব্দুল আহাদ।
আল-জাজিরা আরবি গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘২০১৫ সালে বন্ধুদের সঙ্গে তুরস্ক হয়ে মিসরের বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামি বিদ্যাপীঠ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসেন ইরশাদ আব্দুল আহাদ। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়াই তার বাবা ও ভাইসহ পুরো পরিবারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
মিসর যাওয়ার দেড় বছরের মাথায় ২০১৭ সালে তার বাবা ও ভাইকে চীনের সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। জিংজিয়াংয়ের কোথাও তাদের হদিস মিলছে না। ইরশাদ আব্দুল আহদের ধারণা, তারা বাবা ও ভাইকে চীনা কর্তৃপক্ষ গুম করে হত্যা করেছে।
মিসর আল-আজহারের এ শিক্ষার্থী বর্তমানে তুরস্কে প্রবাস জীবনযাপন করছে। ৯ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক ভিডিওতে তিনি এ বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে ইরশাদ আব্দুল আহাদ জানান-
#مقاطعة_المنتجات_الصينية #الصين_تقتل_المسلمين #الصين_بلد_إرهابي #تركستان_الشرقية #شنجانغ #الأويغور #مسلمي_الإيغور#Uyghurs #SaveUyghur #StillNoInfo pic.twitter.com/ans9t0aBU7
— erxad-abdulehed (@SerhanErxad) January 7, 2020
‘আসসালামু আলাইকুম!
আমি চীনের পূর্ব তুর্কিস্তান থেকে আপনাদের একজন উইঘুর মুসলিম ভাই ইরশাদ আবদুল আহাদ।
আমি ২০১৫ সালে আল আজহারে ইসলামি বিজ্ঞান ও আরবি সাহিত্য অধ্যায়নের জন্য মিসরে গমন করি এবং সেখানে দেড় বছর অতিবাহিত করার পর জানতে পারি, আমাকে আল আজহারে পাঠানোর অপরাধে চীন সরকার আমার বাবা আবদুল আহাদ জুময়া (৭০) ও ভাই আবদুল আহাদ আবু বকরকে গ্রেফতার করেছে।
এ খবর শোনার পরে আমি আর মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারিনি। এখন তুরস্কে আছি এবং এখানের একটি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছি।
আত্মীয়দের মাধ্যমে খবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি যে, আমার বাবা ও ভাইয়ের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বাস্তবিকপক্ষে তাদের দুজনকেই চীনা কর্তৃপক্ষ হত্যা করে ফেলেছে।
আর আপনাদের সবার সহায়তা পাওয়ার জন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে আমি এই ভিডিও প্রকাশ করেছি। আপনারা আমার এ ভিডিওটি শেয়ার করুন যেন, বিশ্বব্যাপী আমার এ বার্তা পৌঁছে যায়। সবাই যেন এ বিষয়টি অবগত হয় যে, জিংজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনা কমিউনিস্টরা কী অবর্ণনীয় জুলুম ও অত্যাচার চালাচ্ছে।’
উল্লেখ্য যে, আল জাজিরা গণমাধ্যম আরও জানিয়েছে যে, ২০১৭ সালে মিসরের দুটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে আল-আজহারে অধ্যয়নরত অন্তত ৩০ জন উইঘুর শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে চীনের পুলিশ। উইঘুর মুসলিমদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে চীন সরকার তাদেরকে যুগের পর যুগ অবরোধ করে রেখেছেন।
এমএমএস/পিআর