ভারতজুড়ে মসজিদ ধ্বংসের যে পরিকল্পনা করছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা!
ভারতের অযোধ্যায় ধ্বংস করা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ও রাম জন্মভূমি বিতর্কের দীর্ঘ দিনের বিরোধের রায় দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রায় ঘোষণার পরপরই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) সহ কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো তাদের পরবর্তী টার্গেট সম্পর্কে মুখ খুলতে শুরু করেছে। তারা ৩২ হাজার মন্দির উদ্ধারের নামে ভারতের মসজিদগুলোকে ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়েছে।
রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে গান্ধীজীর স্বপ্ন সফলের লক্ষ্যে মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি, বারানসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং পশ্চিমবঙ্গে আদিনাথ মন্দির নির্মাণ করা হবে। মূলত এসব স্থানে এখন মসজিদ রয়েছে। যা তাদের পরবর্তী টার্গেট।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্ম প্রসারের দায়িত্বে থাকা স্বরূপ চট্টোপাধ্যায় গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সারা ভারতের হিন্দু সমাজের জয় হয়েছে। এ রায়ের ফলে ভারত থেকে ৪০০ বছরের পরাধীনতার চিহ্ন মুছে গেছে। বাবরি মসজিদের স্থানে বিশ্বের সব হিন্দুদের শুভ কামনায় এবার রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে।
স্বরূপ চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী টার্গেট কাশী, মথুরাসহ দেশের ৩২ হাজার মন্দিরকে উদ্ধার করা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এই কাজ শান্তিপূর্ণভাবেই করতে চায়। ওই রায়ে গান্ধিজীর ‘রাম রাজ্য’বাস্তবায়নের স্বপ্ন সফল হল।’
‘হিন্দু সংহতি’র সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মুসলিম ও ইসলাম ধর্মকে বিদেশি উল্লেখ করে বলেছেন, ‘বিদেশি আক্রমণকারীদের চিহ্ন মুছে ফেলে যেভাবে রাম জন্মভূমিকে মুক্ত করা হল, সেভাবেই মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি, বারাণসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের আদিনাথ মন্দির (আদিনা মসজিদ) মুক্ত করা হবে।’
‘অল ইন্ডিয়া আখড়া পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন গত মাসে এক বিবৃতিতে জানায়, ‘রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলে মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ও বারাণসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরগুলোকে মুক্ত করা হবে।
এ সংগঠনের সভাপতি মহন্ত নরেন্দ্র গিরি দাবি করে যে, ‘অযোধ্যার মতোই কাশী ও মথুরাতে হিন্দুদের পবিত্র মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মন্দিরের হারানো সে জায়গা ফিরে পেতে হবে। রাম জন্মভূমির মতো এই দুই জায়গাও হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। আমরা এর দখল নেবই।’
গত শনিবার (৯ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমপি মন্তব্য করে বলেন, ‘অযোধ্যা, কাশী ও মথুরায় মন্দির নিয়ে আন্দোলন করেছি। অযোধ্যা উদ্ধার হয়েছে, বাকি জায়গায় কী হবে তা নির্ধারণ করবে সাধুন্তরা।’
তবে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত একই দিন কাশী-মথুরা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সঙ্ঘের এ রকম কোনো পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি নেই। এখন একমাত্র কাজ রাম মন্দির নির্মাণ করা।’
এমএমএস/পিআর