রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠান ও আশীর্বাদ
বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বে রবিউল আউয়াল এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। তাৎপর্য ও আশীর্বাদের আরেক নাম। কেউ একে বলেন ঈদে মিলাদুন্নবি। কেউ বলেন সিরাতুন্নবি। আবার কেউ কেউ কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে বলেন উসওয়াতুন্নবি।
তবে যে যে নামেই রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখকে সম্বোধন করুক না কেন, মূলত এ মাস ও প্রতিটি দিনই মুসলিম উম্মাহর কাছে অনেক মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠান ও আশীর্বাদের নাম।
আরবি (হিজরি) ক্যালেন্ডারের হিসাবে তৃতীয় মাস এটি। এ মাসে দুনিয়ায় আগমন করেছেন রাহমাতুল্লিল আলামিন হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ মাসের আসল অর্থ হলো বসন্তের প্রথম মৌসুম। মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে বসন্তের দুয়ার খুলে দেয় এ মাস।
আগামী ১০ নভেম্বর ১৪৪১ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ। এ দিন সারাদেশ জুড়ে পালিত হবে উসওয়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুষ্ঠান। তবে কেউ কেউ আবার মাসব্যাপী অব্যাহত রাখবে এ অনুষ্ঠান।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্ম ও মৃত্যু তারিখ সম্পর্কে নানা মতপার্থক্য থাকলেও বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ ১২ রবিউল আউয়ালকে (সোমবার) তার জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ হিসেবে জানে। এ দিনে তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বলেই মুমিন মুসলমান তার বেলাদাতে আনন্দ উৎসব করে থাকেন।
মুসলিম উম্মাহ পুরো মাসটিকে অনেক আগ্রহ উদ্দীপনার সঙ্গে জন্ম, জীবনী ও আদর্শ স্মরণে অতিবাহিত করেন। এ উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী চলতে থাকে আনন্দ উৎসব, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামসহ নান অনুষ্ঠান।
মুসলিম উম্মাহর কাছে এ মাসের গুরুত্ব তাৎপর্য ও আশীর্বাদ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এ মাসের আগ্রহ-উদ্দীপনাই বছরের বাকি মাসগুলো মুমিনের অন্তরে বিরাজমান থাকবে। তার সুন্দর ও উত্তম আদর্শে নিজেদের প্রতিটি ভুবনকে ইসলামের আলোকে আলোকিত করে তুলবে। তবেই রবিউল আউয়াল হবে মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্ববহ ও আশীর্বাদস্বরূপ।
রবিউল আউয়ালে বিশ্বনবির আদর্শ বাস্তবায়নে আনন্দের পাশাপাশি তার জীবনী আলোচনা করে তার আদর্শ বাস্তবায়ন করতে উসওয়াতুন্নবির অনুপ্রেরণা মুমিনের হৃদয়ে ধারণই হোক অন্যতম কাজ।
সুতরাং মুসলিম উম্মাহ এ মাসে সীমাহীন আনন্দের পাশাপাশি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণ করবে প্রিয়নবিকে। আবার অনেক আশেকে রাসুল অশ্রু বিসর্জন দেবে প্রিয়নবির অন্তর্ধানের দুঃখে। তাঁর ভালবাসা ও আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ার মাসে আত্মহারা পাগালপারা হয়ে ওঠে নবিপ্রেমিকরা। সে কারণেই নবিপ্রেমিকদের জন্য আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-
‘হে রাসুল! আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমাকে অনুসরণ কর; তবেই আল্লাহ তোমাদিগকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ মাসে উসওয়াতুন্নবি উদযাপনের তাওফিক দান করুন। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা লাভ করার তাওফিক দান করুন। মদিনা রাষ্ট্রের মতো ইসলামি সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম