আজান ও ইক্বামাতের ‘উত্তর দেয়া’ সম্পর্কে বিশ্বনবির ঘোষণা
মুয়াজ্জিন প্রতিদিনই মসজিদে ৫ বার আজান ও ইক্বামাত দেয়। আজান হলো মানুষকে নামাজের জন্য আহ্বান করা। নামাজের ওয়াক্ত হলেই মুয়াজ্জিন আজান দিয়ে থাকে। যাতে মানুষ আজান শুনেই জাআতের জন্য নির্ধারিত সময়ে মসজিদে উপস্থিত হতে পারে।
আবার আজানের পর জামাআত শুরু হওয়ার আগেই মুয়াজ্জিন মানুষকে জামাআতে অংশগ্রহণের জন্য ইক্বামাত দেন। যারা এ আজান ও ইক্বামাত শুনবে তারা আজান ও ইক্বামারে জবাব দেবে। আজান ও ইক্বামাতের জবাব দেয়ার জন্য ইসলামের নির্দেশনাও রয়েছে।
আজান ও ইক্বামাতের উত্তর দেয়া ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে অনেক বড় সাওয়াব ও ফজিলতের ঘোষণা। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এ ব্যাপারে অনেক বড় একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিন (যখন) ‘আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার’ বলবে তখন তোমাদের (যারা আজান শুনে তাদের) কেউ যদি বলে ‘আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার’।
এরপর যখন মুয়াজ্জিন বলে ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (শ্রবণকারী) বলে ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’।
যখন মুয়াজ্জিন বলে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুলল্লাহ্’ (শ্রবণকারী) বলে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুলল্লাহ’ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
তারপর মুয়াজ্জিন যখন বলে ‘হাইয়্যা আলাস্ সালাহ্’ (শ্রবণকারী) বলে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।
এরপর মুয়াজ্জিন যখন বলে ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ (শ্রবণকারী) বলে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।
অতপর মুয়াজ্জিন যখন বলে ‘আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার’ (শ্রবণকারী) বলে ‘আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার’।
এবং মুয়াজ্জিন যখন বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (শ্রবণকারী) তখন বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
আর এ বাক্যগুলো (আজানের উত্তর) যদি (শ্রবণকারী) অন্তর থেকে বলে তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)
আজানের মতো ইক্বামাতের উত্তর দেয়ার ব্যাপারেও হাদিসে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ইকামত দিচ্ছিলেন। যখন তিনি ‘ক্বাদ-ক্বামাতিস্ সালাহ’ বললেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ তা প্রতিষ্ঠিত রাখুন এবং তা চিরস্থায়ী করুন। (আবু দাউদ)
বর্ণনাকারী আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইক্বামাতের অন্যান্য শব্দের বেলায় (হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত) আজানের হাদিসের অনুরূপ বলেছেন।
উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এ কথাই প্রমাণিত যে, যারা মুয়াজ্জিনের অনুসরণে আজান ও ইক্বামাতের উত্তর যথাযথভাবে দেবে তাদের জন্য জান্নাতের ঘোষণা রয়েছে।
আজানের উত্তরে মুমিন মুসলমান মানসিক আত্মিক শক্তি লাভ করে। শয়তানের প্ররোচনা থেকে মুক্তি পায় মানুষ।
আজানের পর নামাজ শেষ পর্যন্ত মানুষ যতক্ষণ মসজিদে অতিবাহিত করে ততক্ষণ গোনাহ থেকে বিরত থাকে। সাওয়াব লাভ হয়। আজান ও ইক্বামাতের মাধ্যমে অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুনিশ্চিত জান্নাত লাভে সুন্নতের অনুসরণ ও অনুকরণে আজান ও ইক্বামতের যথাযথ জবাব দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর