চরম হতাশায়ও মানুষ যেখানে-যেভাবে প্রশান্তি পায়
সৃষ্টির মধ্যে এমন কোনো জীবনের অস্তিত্ব নেই, যে জীবন মহান আল্লাহর স্মরণাপন্ন হয় না। বরং ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সব সৃষ্টিই মহান রবের দিকেই ধাবিত হয়। হাত ও চোখ তার দিকেই প্রসারিত করে।
কেননা দুনিয়ার সব ভালো কথা ও একান্ত আবেদন-নিবেদনগুলো আল্লাহর কাছে পৌছে আবার নিরাপরাধ ব্যক্তির নিরব অশ্রু ও বিপদগ্রস্ত লোকের করুণ আর্তনাদও আল্লাহ তাআলা শুনতে পান।
আর এ কারণেই বান্দা সুখে-দুঃখে, অভাব-অনটনে এবং বিপদ-মুসিবতের সময় উভয় হাত ও চোখ তার দিকেই প্রসারিত করে। আর এ সব আবেদনের আলোকেই সমস্যার সমাধানে আল্লাহ তাআলা প্রতিনিয়ত কাজে ব্যস্ত থাকেন। আল্লাহ বলেন-
‘আসমান এবং জমিনে যা কিছু (যত সৃষ্টি) আছে সবাই তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে আর তিনি প্রতিটি মুহূর্তেই (এসব কাজ সম্পাদনে) কর্মে ব্যস্ত।’ (সুরা আর-রহমান : আয়াত ২৯)
সে কারণেই মানুষ যখনই কোনো বিপদ-আপদে পতিত হয় তখনই মানুষ আশা ও ভয়ের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকে। হৃদয়ের গভীর থেকে একান্তে মুধুর নামে আল্লাহকে ডাকে।
বান্দা যখনই আল্লাহকে হৃদয়ের গভীর থেকে মধুর নামে আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহ তখনই বান্দার অন্তরে প্রশান্তি দান করেন। অস্থিরতা দূর করে দেন। স্নায়ু ও বোধ শক্তি বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আসমান-জমিন এবং উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তিনি (আল্লাহ) সবারই প্রতিপালক। সুতরাং তুমি তাঁর ইবাদত কর এবং তার ইবাদতে সবর অবলম্বন কর। তুমি কি তার সম বা অনুরূপ কাউকে চেন বা জান?’
আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে মানুষকে প্রশ্ন করেন, মানুষকে ক্ষমা প্রদানে, নিরাপরাধ ব্যক্তির সমস্যার সমাধানে, অসহায় মানুষকে আশ্রয়দানে এমন কেউ আছে কি? যাকে তোমরা চেন বা জান?
এ প্রশ্নের উত্তরে, মানুষ যে দিকেই তাকাবে, সে দিক থেকেই চোখ ফিরে আসবে। কেননা আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপাস্য নেই। যিনি মানুষের সব কিছুর প্রতিবিধান করতে পারে। তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘তার মতো (সমতুল্য/উপমা দেয়ার) কেউ নেই এবং তিনিই সবকিছু শোনেন এবং সবকিছু দেখেন।’ (সুরা শুরা : আয়াত ১১)
সুতরাং যিনি ব্যতিত বান্দার কোনো উপায় নেই। নাজাতের কোনো পথ নেই, তার দিকেই ফিরে যাবে মুমিন। তার কাছে প্রার্থনা বা আশ্রয় চাইবে মুমিন। দুনিয়া ও পরকালের সব সমস্যার সমাধানে আশা ও ভয় মিশ্রিত হৃদয়ে মুমিন বান্দার আবেদন হবে এমন-
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِوَاَدْخِلْنَا الْجَنَّةَ مَعَ الْاَبْرَارِ يَاعَزِيْزُ يَاغَفَّارُ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْن
উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতও ওয়া ফিল আখিরাতে হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’ ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার। ইয়া আযিযু ইয়া গাফ্ফার, ইয়া আরহামার রাহিমিন।’
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু, আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান করুন। জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্ত রাখুন। আপনার প্রিয় বান্দাদের সঙ্গে জান্নাত দান করুন। হে পরাক্রমশালী, হে ক্ষমাকারী, হে শ্রেষ্ঠ দয়ালীশীলদের দয়াশীল।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের সব বিষয়ে আল্লাহর সাহায্য ও রহমত লাভের তাওফিক দান করুন। আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা লাভে কুরআনের উপদেশের আলোকে জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর