বান্দার যে আমল আল্লাহ কবুল করবেন না
একদিন এক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি দান-সাদকা করি। এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করি এবং আমার সম্পর্কে ভালো কিছু বলুক, তা আমি ভালোবাসি।’ তখন আয়াত নাজিল করে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দেন-
‘যে ব্যক্তি তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায়, সে যেন নেক আমল করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১১০)
উল্লেখিত কুরআন ও হাদিসের আলোকে প্রমাণিত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতিত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে করা ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ ছাড়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে আমল করলে সে আমলে নেকিও পাওয়া যাবে না।
যারা আল্লাহর উদ্দেশ্য কিংবা সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আমল করবে, তারা নিঃসন্দেহে জাহান্নামী। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আমলের বিনিময়ে যারা দুনিয়ার চাইবে, আমি দুনিয়াতেই তার জন্য যা ইচ্ছা দান করব। তারপর পরকালে তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করবো। তাতে তারা নিন্দিত ও বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যারা (আমলের বিনিময়ে) পরকাল চাইবে এবং মুমিন অবস্থায় তার (পরকালের) জন্য যথারীতি প্রচেষ্টা চালাবে, তাদের প্রচেষ্টা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ১৮-১৯)
এ জন্যই কুরআন হাদিসে বারবার সতর্কবাণী নাজিল করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আল্লাহর জন্য ছাড়া কোনো আমলের ভালো ফলাফল মিলবে না। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এমন বহু রোজাদার রয়েছে, ক্ষুধা ও পিপাসায় কষ্ট ছাড়া রোজার দ্বারা তাদের আর কিছুই লাভ হয় না। আবার অনেক রাত জেগে ইবাদতকারী রয়েছে, যারা তাদের ইবাদতের বিনিময় রাত জেগে থাকা ও কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাবে না।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
আল্লাহ তাআলা বান্দার সব আমলের ব্যাপারে খোঁজ নেবেন এবং সে আলোকেই ফয়সালা গ্রহণ করবেন। যেমনটি তিনি কুরআনে পাকে ঘোষণা করেছেন-
‘আমি (আল্লাহ) ছাড়া অন্যের সন্তুষ্টির জন্য তারা যেসব আমল (ইবাদত) করেছে, আমি সেসবের খোঁজ নেব, এরপর সে আমলকে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবো।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ২৩)
সুতরাং আমল করতে হবে শুধু আল্লাহর জন্য। মুখে মুখে আল্লাহর কথা বলে অন্তরে অন্যের জন্য আমল করলে তা ধূলিকণায় পরিণত হবে। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। তার জন্য প্রস্তুত থাকবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
মুসলিম উম্মাহর উচিত, দুনিয়াতে সব কাজই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা। তবেই দুনিয়ার কল্যাণ পাওয়া যাবে বেশুমর। আর পরকালের কল্যাণ থাকবে সুরক্ষিত। যেমনটি কুরআন-হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। এর ব্যতিক্রম হলে আল্লাহ তাআলা বান্দার কোনো আমলই কবুল করবেন না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব কাজ শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার স্বচ্ছলতা, সমৃদ্ধি ও পরকালের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস