ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

তারাবিহ নামাজের যে তেলাওয়াতে মজবুত হবে ঈমান

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২৯ মে ২০১৯

আজ ২৪তম তারাবিহ। মানুষের জন্য তৈরি করা মহান রবের অসংখ্য নেয়ামতরাজির বর্ণনা ওঠে আসবে হাফেজে কুরআনদের কণ্ঠে।

আজকের তারাবিহতে সুরা যারিয়াতের বাকি অংশ (৩১-৬০), সুরা তুর, সুরা নঝম, সুরা ক্বামার, সুরা রাহমান এবং ওয়াক্বিয়াসহ সুরা হাদিদ পড়া হবে। সে সঙ্গে ২৭তম পারার তেলাওয়াত শেষ হবে।

এ সুরাগুলোর মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের বর্ণনা। সংক্ষেপে সুরাগুলোর আলোচ্য বিষয় তুলে ধরা হলো-

সুরা যারিয়াত (৩১-৬০)
মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটি আল্লাহর একত্ববাদ, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত এবং হাশরের ময়দানের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। মানবজাতিকে আল্লাহ তাআলা শুধু ইবাদত-বন্দেগির জন্য সৃষ্টি করেছেন সে ঘোষণাও রয়েছে এ সুরায়।

সুরা তুর (৪৯)
মক্কা অবতীর্ণ সরা তুরে তিনটি বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। আর তাহলো-
>> পরকালীন জীবনের সত্যতার বর্ণনা।
>> সত্যদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে কঠের সতর্কবাণী ও হুশিয়ারি।
>> পরকালীন জীবনে সত্য-সাধকদের জন্যে পুরস্কারের শুভ সংবাদ।

এছাড়াও মুমিনের ঈমানের মজবুতির জন্য তাওহিদ, রেসালাত এবং কেয়ামাতের ভয়াবহতার আলোচনা রয়েছে এ সুরায়।

আরও পড়ুন > কেবলা জানা না থাকলে নামাজ পড়বেন যেভাবে

সুরা নঝম (৬২)
সুরা নঝম মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এ সুরায় আল্লাহ তাআলা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত ও রেসালাতের প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিটি কথাই যে মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়, সে ঘোষণাও এসেছে এ সুরায়।

বিশেষ করে বিশ্বনবির পবিত্র জবান থেকে যা বের হয় তা শুধু আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ ওহি, তাও বলা হয়েছে।

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সত্য নবি হওয়া এবং তাঁর প্রতি অবতীর্ণ ওহিতে সন্দেহ ও সংশয়ের অবকাশ না থাকার কথা বর্ণিত হয়েছে। অতপর মুশরিকদের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

সুরা ক্বামার (৫৫)
এ সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। সুরাটিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি বিশেষ মুযেজার উল্লেখ রয়েছে। যা বিশ্বনবি নবুয়তের দলিল হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।

সুরা ক্বামারের অন্যতম আলোচ্য বিষয়গুলো হলো-
>> ক্বিয়ামাত নিকটবর্তী হওয়ার ঘোষণা।
>> তাওহিদ এবং রেসালাতের দলিল প্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।
>> ঈমান এবং নেক আমলের জন্য পুরস্কারের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি আল্লাহর নাফরমানির শাস্তি সম্পর্কেও সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন > সালাতুত তাসবিহ যেভাবে পড়তে বলেছেন প্রিয়নবি

সুরা রাহমান (৭৮)
মাদিনায় অবতীর্ণ শ্রুতিমধূর ও ব্যাপক পরিচিত ও তিলাওয়াতকৃত সুরা আর রহমানে দুনিয়া ও আখিরাতের আল্লাহর অনন্ত অসীম নিয়ামাতের বর্ণনা করা হয়েছে। এ সুরার মূল বক্তব্য হলো-
>> বিশ্বলোকের গোটা ব্যবস্থাপনা এক আল্লাহর ছাড়া আর কারো কতৃত্ব নেই;
>> গোটা বিশ্বলোকের ব্যবস্থাপনা পূর্ণ ভারসাম্যের সঙ্গে ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত। কোনোভাবে এ ভারসাম্য বিনষ্ট হবে না;
>> আল্লাহ তাআলার কুদরত ও বিস্ময়কর কার্যকলাপের কথা বলার সঙ্গে মানব-দানবরা আল্লাহর যে নিয়ামাত ভোগ করছে, তার দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে;
>> মানুষ ও জিন জাতিকে তার কর্মের হিসাবের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এ সুরায় পৃথিবীর নাফরমান মানুষ ও জিনের মর্মান্তিক পরিণতির কথা বলা উল্লেখ করা হয়েছে।
>> মানব ও দানবদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে, পরকালকে ভয় করেছে, তাদেরকে প্রদেয় নিয়ামাতের বিস্তারিত বিবরণ পেশ করা হয়েছে এ সুরায়।

আরও পড়ুন > নামাজ পড়বেন যেভাবে

সুরা ওয়াক্বিয়া (৯৬)
সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। আল্লাহ তাআলার অনন্ত অসীম শক্তি ও অপূর্ব মহিমার বিস্তারিত বিবরণ স্থান পেয়েছে সুরা ওয়াক্বিয়ায়। বিশেষ করে পরকালে মানুষের সমগ্র জীবনের কর্মকাণ্ডের পরিণতি অবশ্যই ভোগ করতে হবে।

জন্মের ন্যায় মৃত্যু যেমন সত্য, ঠিক মৃত্যুর ন্যায় পরকাল, হাশরের ময়দানে পুনরুত্থানও সত্য। যার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে এ সুরায়। সর্বোপরি এ সুরার শেষে আখিরাতের আলোচনা বর্ণনা করা হয়েছে।

সুরা হাদিদ (২৯)
মদিনায় অবতীর্ণ সুরা হাদিদে ইসলামি শরিয়তের বুনিয়াদি বিধি-নিষেধ এবং মৌলিক আক্বিদা তথা তাওহিদ সম্পর্কে হিদায়াত রয়েছে এবং উত্তম চরিত্র অর্জনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এ সুরার মূল বক্তব্য হলো-
>> বিশ্বজগৎ এক আল্লাহর সৃষ্টি, তিনি ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডল সব কিছুর একচ্ছত্র অধিপতি। সবকিছুই তার কর্তৃত্বাধীন। তাঁর কর্তৃত্বের কোনো কিছুতেই শরিক নেই।

আরও পড়ুন > নামাজে দ্রুত রুকু-সেজদা ও এদিক-ওদিক তাকানো যাবে কি?

>> সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য; আল্লাহর দ্বীনকে কায়েম করার জন্য মানুষের কর্তব্য হলো- আত্মত্যাগের পরিচয় দেয়া।
>> দুনিয়ার ধন-সম্পদ, সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য নিতান্ত ক্ষণস্থায়ী বিষয়। দুনিয়ার এ ক্ষণস্থায়ী জীবনকে পরকালীন চিরস্থায়ী জীবনের সম্বল সংগ্রহে ব্যয় করাই কল্যাণকামী মানুষের কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের এ গুরুত্বপূর্ণ সুরাগুলো বুঝে পড়ার এবং তাঁর ওপর আমল করার পাশাপাশি নিজেদের আকিদা-বিশ্বাসকে শিরকমুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন