মা দিবসে বিশ্বনবির যে হাদিসটি খুব বেশি মনে পড়ে
‘মা’। আমার ‘মা’। এ ধরণীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। হাদিসের ঘোষণায়, মায়ের পদতলে রয়েছে সন্তানের জান্নাত। মায়ের ভালোবাসা ও সম্মান কোনো নির্দিষ্ট দিনে পালন করার বিষয় নয়। মায়ের ভালোবাসা থাকবে জীবনভর প্রতিটি মুহূর্তে।
বিশ্বব্যাপী এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো, ‘মা-কে যথাযথ সম্মান দেয়া, ভালোবাসা।’ এবারের মা দিবসটি পড়ছে পবিত্র রমজান মাসে। তাছাড়া এ মাস মায়ের ভালোবাসার কথা আরো বেশি স্মরণ করিয়ে দেয়।
কুরআন এবং হাদিসে মা-বাবার সম্মান, মর্যাদা ও ভালোবাসার ব্যাপারে অনেক নির্দেশনা এসেছে। বিশেষ করে রমজান ও মায়ের সম্মানে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
সন্তানের জন্য মায়ের সম্মান ও মর্যাদা কত বেশি আবশ্যক তা আজকের মা দিবসে প্রিয় নবির একটি হাদিসের বর্ণনায় খুব বেশি মনে পড়ে। যে হাদিসটি প্রত্যেক সন্তানকে পিতামাতার যথাযথ সম্মানে আগ্রহী করে তুলবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত কাব ইবনে উজরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মসজিদে নববির) মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখলেন, আর বললেন, ‘আমিন’। যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলেন, আবার বললেন, ‘আমিন‘। যখন তিনি তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখলেন তখনও বললেন, ‘আমিন’।
হজরত কাব ইবনে উজরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন তিনি (মিম্বর থেকে) নামলেন, আমরা তাঁর কাছে আমিন বলার কারণ জানতে চাইলাম। বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! এর আগে তো আপনাকে কখনো এভাবে আমিন বলতে শুনিনি।
উত্তরে তিনি বললেন, প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরিল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসে বলরেন, ‘ধ্বংস হোক সে ব্যক্তি যে রমজান মাস পেল, তবুও তার গোনাহ মাফ করাতে পারল না। আমি বললাম, ‘আমিন’।
যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলাম তখন বললেন, ধ্বংস হোক সে ব্যক্তি যার কাছে আপনার নাম উচ্চারিত হলো অথচ সে আপনার প্রতি দরূদ পাঠ করল না। আমি বললাম, ‘আমিন’।
যখন তৃতীয় সিড়িঁতে পা রাখলাম, তখন বললেন, ধ্বংস হোক সে ব্যক্তি যে বৃদ্ধ পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেল অথচ তারা উভয় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না। অর্থাৎ (সন্তান) তাদের খেদমতের মাধ্যমে নিজেকে জান্নাতবাসী করতে পারল না। আমি বললাম, আমিন।’ (মুসলিম, তিরজিমি)
মা দিবসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিসটি দুনিয়ার সব সন্তানের জন্য সুমহান শিক্ষা। মায়ের প্রতি দায়িত্ববোধ ও সম্মানই সন্তানকে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা দিতে পারে।
সুতরাং এ রমজানে মা-বাবার প্রতি সদয় হয়ে মহান আল্লাহর অনিবার্য ধ্বংস থেকে নিজেকে মুক্ত করা প্রত্যেক সন্তানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
মায়ের ভালোবাসা কিংবা সম্মানের জন্য বিশেষ কোনো দিনক্ষণ নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়, সন্তানের জন্য প্রতিটি মুহূর্তই হোক মা-বাবার জন্য সম্মান ও ভালোবাসা।
আরও পড়ুন-
> মা-বাবার জন্য কুরআনে উল্লেখিত দোয়া
> সন্তানের জন্য যে দোয়া করবেন বাবা-মা
> পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার ফজিলত
আল্লাহ তাআলা পুরো দুনিয়ার সব সন্তানকে তাদের মা-বাবার প্রতি ভালোবাসা দায়িত্ববোধ ও যথাযথ সম্মান দেয়ার তাওফিক দান করুন। সুন্দর ও শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণ করার তাওফিক দান করুন। মহান আল্লাহর অনিবার্য ধ্বংস থেকে নিজেদের রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস