এশিয়া-ইউরোপের সবচেয়ে বড় তাশামালিজা মসজিদ উদ্বোধন
রজব মাসের প্রথম প্রহরে ফজরের নামাজের আজান ও নামাজ আদায়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হলো এশিয়া ও ইউরোপের সবচেয়ে বড় উপাসনালয় তাশামালিজা মসজিদ।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের তাশামালিজার সবুজ পাহাড়ের চুড়ায় নির্মিত ইউরোপের এ বিশাল মসজিদটি শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেখা যায়। রাতের তাশামালিজা মসজিদের মিনার শহরজুড়ে চোখ জুড়ানো অনন্য সৌন্দর্যের আবহ তৈরি করে। বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্সের বাইরে প্রায় ৯০ একর জমি সবুজ সমারোহে আচ্ছাদিত।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোগান গত ৬ বছর আগে ২০১৩ সালের আগস্টে মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আর প্রিয় নবি ঘোষিত বরকতের মাস রজবের প্রথম দিনে তা ফজরের আজান ও নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ইবাদতের জন্য খুলে দেয়া হলো।
এশিয়া ও ইউরোপের এ বিশাল মসজিদের মূল স্থাপনায় ২৫ হাজার, বাইরের আঙ্গিনায় সাড়ে ১২ হাজার, প্রবেশ পথ করিডোরে সাড়ে ২২ হাজারসহ মোট ৬৩ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। ৬৩ হাজার মুসলিমের নামাজ আদায়ের জন্যই সীমাবদ্ধ নয় এই মসজিদ। এখানে রয়েছে বিশাল ইসলামি কমপ্লেক্স।
ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য রয়েছে চোখ ধাঁধানো ১১ হাজার বর্গফুটের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারি, সুপরিসর লাইব্রেরি ও ১ হাজার অত্যাধুনিক সিটিং ব্যবস্থার বিশাল হলরুমসহ সাড়ে ৩ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের বিশেষ সুবিধা।
উসমানি সালজুক আমলের ডিজাইনে সবুজের সমারোহে সুউচ্চ পাহাড় চূড়ায় নির্মিত তাশামালিজা মসজিদটিতে ১০৭.১ মিটার উচ্চতার ২টি মিনারসহ ৬টি মিনার। যা ১৭০১ সালের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সেলজুকি সুলতান আলাব আরসালান ১৭০১ সালে এ অঞ্চলের বিজয় লাভ করেন।
মসজিদের প্রধান গম্বুজটির উচ্চাত ৭২ ও ব্যস ৩৪ মিটার। প্রধান গম্বুজটির উচ্চতা ৭২ জাতি গোষ্ঠির ঐক্যের আহ্বান করে আর ৩৪ মিটার ব্যস শহরের নির্ধারিত গাড়ি নাম্বার প্লেটের কথাই জানান দেয়।
মসজিদটি ছোট-বড় ১৬টি গম্বুজ দ্বারা সাজানো হয়। আর তাতে মহান আল্লাহর ১৬টি নামের ক্যালিওগ্রাফি ব্যবহার করা হয়। যা উসমানি শাসকদের কর্তৃক পরিচালিত ১৬টি নিদর্শনকে সামনে নিয়ে আসে।
এছাড়াও মসজিদটিতে বিশেষ পরিকল্পনা ও কারুকার্য খচিত ১৭ হাজার বর্গমিটারের এক বিশাল গালিচা স্থাপন করা হয়েছে।
মসজিদটিতে নামাজের পাশাপাশি জানাযা আদায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনসহ বিভিন্ন সুবিধা রাখা হয়েছে। আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজ তত্ত্বাবধানে এশিয়া ও ইউরোপের সবচেয়ে বড় এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
এমএমএস/এমএস