যে আমল সাদকা ও জিহাদের সমতুল্য
আল্লাহর হুকুম পালনই মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় আমল। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন আয়াতে এ আমল করার কথা বলেছেন। আর তাহলো মহান আল্লাহর জিকির বা স্মরণ। যে জবান আল্লাহর জিকিরে লিপ্ত থাকে, সে মুখে খারাপ কথা যেমন বলা সম্ভব নয় তেমনি সে ব্যক্তির দ্বারা খারাপ কাজ করাও সম্ভব নয়।
হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাহাবাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘যা তোমাদের আমলসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম আর তোমাদের প্রভুর কাছেও পবিত্রতম। তোমাদের মর্যাদা সর্বাধিক উন্নতকারী এবং তোমাদের জন্য (আল্লাহর রাস্তায়) সোনা-রূপা ব্যয়ের চেয়েও উত্তম।
তোমরা (জেহাদে) তোমাদের শত্রুর সামনে গিয়ে হত্যা করবে আর তারাও তোমাদের হত্যা করবে, তোমাদের জন্য এর চেয়েও উত্তম জিনিসের (আমলের) কথা কি আমি তোমাদের বলে দেব না?
সাহাবাগণ আরজ করলেন, ‘অবশ্যই বলে দিন।’ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘তাহলো আল্লাহর জিকির।’ (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, বায়হাকি, মুসতাদরেকে হাকেম)
আরও পড়ুন > যে জিকিরের বাক্যগুলো মানুষকে স্মরণ করে
আল্লাহর জিকিরের মর্যাদা বর্ণনায় হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু কুরআনের সুন্দর একটি দিক নির্দেশনা তুলে ধরেছিলেন-
হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন সর্বাধিক আমল কী? তিনি কুরআনুল কারিমে ২১ পারার প্রথম আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ‘তুমি কুরআন শরিফ পড়নি। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘তোমার প্রতি যে কিতাব ওহি করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত কর এবং নামাজ আদায় কর। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আর (বিশেষ করে) আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ (আমল)। তোমরা যা কর না আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)
এ আয়াতে আল্লাহর স্মরণের অনেকগুলো মাধ্যমে কথা বলা হয়েছে তন্মধ্যে-
- কুরআন তেলাওয়াত।
- নামাজ আদায়। এবং
- (বিশেষ করে) আল্লাহর জিকির।
হাদিসের আলোচনা ও কুরআনের বর্ণনাই প্রমাণ করে যে, আল্লাহর জিকির এমন এক মর্যাদাবান ইবাদত। যা জিকিরকারীর জন্য ছাদকা, জিহাদ ও অন্যান্য ইবাদত থেকেও শ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণিত।
সুতরাং মহান আল্লাহ তাআলা হুকুম আহকাম পালনের পাশাপাশি মানুষের জবানকে তাঁর জিকিরে সিক্ত রাখাই ঈমানের একান্ত দাবি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার হুকুম পালনের পাশাপাশি নিজেদের জিহ্বাকে তার জিকিরে সিক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস