ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

‘সত্যের জয় হয় সব সময়’

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:৪৩ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারিম যে সব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তার প্রতিটিই প্রমাণিত। যার ফলশ্রুতিতে অল্প কিছু দিনের ব্যবধানে আরব উপদ্বীপ থেকে মুশরেক পৌত্তলিকদের দখলদারিত্ব ও অবস্থান নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ইসলাম বিজয় লাভ করে। এ জয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা।

ইসলামের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে বনু কুরায়যার ইয়াহুদিরা নিহত হলো এবং বনু নযির গোত্রের ইয়াহুদিদের নির্বাসন দণ্ড দেয়া হলো। নাযরানের অবিশ্বাসীরা কর আদায় সাপেক্ষে ইসলামি সম্রাজ্যে বসবাসের অনুমিত পেয়েছিল।

ইসলামের বিজয়ের পর দুনিয়ার বড় বড় জাতিগুলোকে প্রায় হাজার বছর যাবত মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্ব মেনে নিতে বাধ্য ছিল। কারণ ইসলামের বিজয় ছিল সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ইসলামি সম্রাজ্য ছিল ন্যয় ও ইনসাফের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

অল্প সংখ্যক মুসলিম বাহিনী বিশাল অবিশ্বাসী কুরাইশ বাহিনীর বিপক্ষে বিজয় লাভ করেছিল। অবিশ্বাসী কুরাইশ বাহিনীর বিশাল সৈন্যবহর ব্যাপক যুদ্ধ-সরঞ্জামে সজ্জিত থাকার পরও কিভাবে ইসলামের প্রথম সমর অভিযান বদরে পরাজয় বরণ করেছিল, সে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা ওঠে এসেছে কুরআনুল কারিমের এ আয়াতে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

quran
আয়াতের অনুবাদ

quran

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণ
আল্লাহ তাআলা সুরা আল-ইমরানের ১২নং আয়াতে বদরের যুদ্ধে জয় লাভের বিবরণ তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা যেভাবে মুসলিম বাহিনীকে সাহায্য করেছেন, সে যুদ্ধ জয়ের বিবরণ থেকে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বিবেকবানদের জন্য যে শিক্ষা রয়েছে তা ওঠে এসেছে এ আয়াতে।

বদর যুদ্ধের প্রস্তুতি ও সরঞ্জাম
বদরের যুদ্ধে অবিশ্বাসী কুরাইশদের সৈন্য সংখ্যা ছিল মুসলিম সৈন্য সংখ্যার ৩গুণেরও বেশি অর্থাৎ ১ হাজার। আর মুসলমান যোদ্ধার সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৪ জন।

যুদ্ধ সরঞ্জামের মধ্যে যেখানে মুসলিম বাহিনীর উট ছিল ৭০টি সেখানে কুরাইশদের উটের সংখ্যা ছিল ১০গুণ বেশি অর্থাৎ ৭০০ উট। যেখানে মুসলমানদের ঘোড়া ছিল ২টি, সেখানে কুরাইশদের ঘোড়া ছিল ৭০টি।

মুসলিম যোদ্ধারা মাত্র ৮টি তরবারি ও ৬টি বর্ম নিয়ে কুরাইশদের বিশাল বাহিনীর মোকাবেলা করেছিল। যা ছিল চিন্তারও অকল্পনীয়। কিন্তু মহান আল্লাহ তাআলা সুসজ্জিত কুরাইশ বাহিনীর মোকাবেলায় বিজয়ের পূর্ব সুসংবাদ দিয়েই ইসলামের প্রথম সমর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীকে বদর প্রান্তরে বিজয় দান করেছিলেন। আর তাতেই প্রমাণিত হয়েছিল যে, সত্যের জয় সব সময়ই হয়।

আল্লাহ তাআলা সত্যাশ্রয়ী মুসলিম বাহিনীকে সত্যের জয়ে বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছিলেন। মুসলমানদের সংখ্যা কাফেরদের তুলনায় ছিল কুবই নগন্য। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘তোমাদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে’ এখানে বদর যুদ্ধে অংশ নেয়া দু’টি দলের কথা বলা হয়েছে। একটি দল হলো, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা-ই কেরামের দল। আর দ্বিতীয় দলটি হলো, মুশরিক অবিশ্বাসী কুরাইশদের দল।

আল্লাহর তাআলার আদর্শ বাস্তবায়নে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের নিয়ে সেদিন যুদ্ধ করেছিলেন। আর মুশরিকরা আল্লাহর দ্বীন ‘ইসলাম’কে চিরতরে বিদায় করে দিয়ে পৃথিবীতে বাতিলকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।

বদরের যুদ্ধে বিজয় দান করে আল্লাহ তাআলা মুশরিক অবিশ্বাসীদের সে মনোবাসনা ব্যর্থ করে দিয়ে সত্য-মিথ্যার সুস্পষ্ট মীমাংসা তৈরি কের দেন। আর এ যুদ্ধে অবিশ্বাসী মুশরিকরা চরম লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয় আর মুসলিম বাহিনীর সত্যের বিজয় সুনিশ্চিত হয়। যা অত্র আয়াতে আল্লাহ তাআলা তুলে ধরেছেন।

সুতরাং যারা ইসলামের সত্যতার ওপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম-চেষ্টায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে, তাদের জন্য সুসংবাদ হলো- ‘সত্যের জয় হবেই হবে।’ আল্লাহ তাআলা সত্যকে সমাগত করবেন আর মিথ্যাকে প্রতিহত করবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনুল কারিমের এ আয়াত থেকে উৎসাহ ও উদ্দীপনা গ্রহণ করে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফিক দান করুন। বদরের চেতনা ও শিক্ষাকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সত্যতার বিজয়ে নিজেকে শামিল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

আরও পড়ুন