ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

কুরআন যে কারণে মানুষের জন্য শাফায়াত করবে

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কুরআন আল্লাহর কিতাব। এ কিতাবের বর্ণনায় বিন্দুমাত্র অসঙ্গতি নেই। আর কুরআন মুত্তাকি মানুষের জন্য পথ নির্দেশক গাইড। যারা আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করে এবং তাঁর নির্দেশিত পন্থায় নামাজ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করে এবং তার দেয়া অর্থ (সম্পদ) থেকে তারই পথে ব্যয় করে। তারাই কুরআন থেকে দুনিয়াতে যেমন উপকার লাভ করবে, কুরআন পরকালেও তাদের জন্য সুপারিশ করবে।

যারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআনের ওপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনের পাশাপাশি আগের নবি-রাসুলদের ওপর অবতীর্ণ আসমানি কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং পরকালের (পুনরুত্থানে) ওপর বিশ্বাস রাখে কুরআন তাদের জন্যও পথ-প্রদর্শক। তাদের জন্যও কুরআন সুপারিশ করবে।

যারাই কুরআনকে পথ-নির্দেশক হিসেবে গ্রহণ করবে তারাই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত হেদায়ের ওপর বিদ্যমান আর তাদের জন্যই রয়েছে সফলতা। এ সফলতা যেমনি দুনিয়ার তেমিন পরকালেও বটে।

কুরআনের অনুসারিদের জন্য এ রকম বর্ণনা দিয়েই মুমিন মুসলমান কুরআন পড়া শুরু করে। যা কুরআনের সবচেয়ে বড় ও দ্বিতীয় সুরা বাকারার ভূমিকে বর্ণনা করেছেন।

যারা কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে সফলতা তাদের জন্য। কুরানের নির্দেশের পর হাদিসে পাকেও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট বর্ণনা পেশ করেছেন।

হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী কেয়ামতের দিন কুরআন তার অনুসারিদের জন্য শাফায়াত করবে। আল্লাহ তাআলা যাদেরকে শাফায়াতের অনুমতি দেবেন, তার মধ্যে কুরআন অন্যতম। আল্লাহ তাআলা কুরআনকে তার বিধান পালনকারী মানুষের জন্য শাফায়াত করার অনুমতি দান করবেন।

কুরআনকে শাফায়াত করার অনুমতি দেয়ার কারণ
করণ কুরআন এমনই এক আসমানি কিতাব; যারা কুরআনের সংস্পর্শে আসবে, কুরআনের হুকুম-আহকাম পালন করবে; তারা দুনিয়ার যাবতীয় অজ্ঞতা ও মূর্খতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে। স্বচ্ছ ও সুন্দর জীবন লাভ করবে। গোমরাহি থেকে মুক্তি পেয়ে হেদায়েতের আলো লাভ করবে।

বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য একে অপরের দ্বারস্থ হয়। অথচ কুরআনেরই রয়েছে মানুষের সব সমস্যার সমাধান। কুরআন মানুষকে তার যাবতীয় সমস্যার সমাধানের নির্দেশ, নসিহত প্রদান করেছেন।

মানুষ আজ কুরআনের শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণেই দুনিয়ার নানবিধ অশান্তি ও সমস্যায় পতিত হচ্ছে। সব মুসলমানের ঘরে কুরআনের পাণ্ডুলিপি থাকা সত্ত্বেও তার বাস্তবায়নে নেই কারো উদ্যোগ।

কুরআনের বিধান বাস্তবায়ন থাক দূরের কথা অধিকাংশ ঘরে কুরআনের ন্যূনতম তেলাওয়াতও নেই। নেই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে কুরআন অধ্যয়ন তথা তাফসির পড়ায়ও কারো মনোযোগ নেই।

কুরআন তার পাঠকারী ও আমলকারীদের জন্য যে সুপারিশ করবে সে প্রসঙ্গে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদিস পেশ করেছেন-

আরও পড়ুন > কুরআন তেলাওয়াতের আদব

> হজরত নাওয়াস বিন সামওয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন কুরআন মাজিদ এবং তার ওপর আমলকারী লোকদেরকে উপস্থিত করা হবে। সেখানে সুরা বাকারা ও আল-ইমরান উপস্থিত থাকবে এবং আপন পাঠকদের (নাজাতের) পক্ষে বিতর্ক (সুপারিশ) করবে।’ (মুসলিম)

> হজরত আবু ইমাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা এ কারণে কুরআন তেলাওয়াত কর যে, কুরআন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে।’

উল্লেখিত হাদিস দুটিতে কুরআন তেলাওয়াতের কথা বলা হয়েছে। কুরআন তেলাওয়াত অবশ্যই ইবাদত। কেননা অন্য হাদিসে প্রিয়নবি বলেছেন, কুরআন তেলাওয়াত উত্তম ইবাদত।’ কুরআন তেলাওয়াত-এর মানে হচ্ছে কুরআনের বিধান জানা, সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। যারা তা করবে তারাই চূড়ান্ত সফলতা লাভ করবে। আর কুরআনের চূড়ান্ত সুপারিশও তারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে লাভ করবে।

কুরআন পড়ার মাধ্যমে মানুষের মাঝে পরিবর্তন আসে। যারা কুরআন পড়ে না তাদের মাঝে কুরআন তেলাওয়াতকারীর হালত তৈরি হয় না। এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে কুরআনের তেলাওয়াতকারীর উন্নতির কথা বলেছেন।

আমিরুল মুমিনিন হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাঁর কিতাবের কারণে (কুরআন মাজিদ অধ্যয়ন ও বাস্তবায়নে) কিছু মানুষকে (মর্যাদায় ও কাজে) সমুন্নত করেন এবং কিছু লোককে (কুরআনের অবমাননায়) অধঃপতনে নিক্ষেপ করেন।’ (মুসলিম)

কুরআন মানুষের জন্য অনেক বড় নেয়ামত। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআন প্রেমিক ব্যক্তির ঈর্ষা তথা হিংসা করাকে অনুমোদন দিয়েছেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত কুরআন অধ্যয়ন করা। কুরআন অনুযায়ী সমাজ বিনির্মাণ করা। আল-কুরআনের বিধি-বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের পাঠকারী ও আমলকারী হিসেবে কবুল করুন। প্রিয়নবির ঘোষণায় কেয়ামতের দিন কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ধাপে ধাপে শীর্ষে আরোহন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন