রমজানে যে কারণে প্রিয়নবি বেশি বেশি দান করতেন
দান-সাদকা আল্লাহর কাছে অনেক দামি ইবাদত। আর তা যদি পবিত্র রমজান মাসে, তাতে সাওয়াব বেড়ে যাবে অন্য মাসের তুলানায় ৭০গুণ। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে বেশি বেশি দান সাদকা করতেন।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ দান ছিল তাঁর উম্মতের জন্য শিক্ষা। যাতে সারা বছর দান-সাদকার পাশাপাশি মুসলিম রমজান মাসে বেশি বেশি দান করে। আর গরিব-দুঃখী ও অসহায় মুমিন মুসলমান সে দানে নিজেদের রোজার প্রয়োজনীয়তায় স্বাচ্ছন্দে্য ব্যয় করতে পারে।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব মানুষের চেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। আর রমজান মাসে হজরত জিবিরিল আমিন যথন তাঁর সঙ্গে মিলিত হতেন তখন তিনি আরো বেশি দানশীহ হয়ে ওঠতেন।
(রমজান মাসে) হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের সাক্ষাতে তিনি বেগবান বায়ুর চেয়েও বেশি দানশীল হয়ে ওঠতেন।’ (বুখারি)
আরও পড়ুন > রোজার নিয়ত ও সাহরি-ইফতারের দোয়া
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩ কারণে রমজান মাসে বহুগুণে দান করতেন। আর তাহলো-
>> রমজান মাসের দান-সাদকাসহ সব উত্তম আমলের সাওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
>> রমজান মাসে প্রিয়নবি বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতেন। আর কুরআনের বহু আয়াতে আল্লাহর পথে ব্যয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন, ‘কে সে, যে আল্লাহকে করজে হাসানা প্রদান করবে? অতঃপর তিনি তার জন্য তা (বিনিময়) বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৪৫)
আরও পড়ুন > তারাবিহ নামাজের নিয়ত ও দোয়া
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে; তাদের উপমা হলো একটি শস্যবীজ; যা সাতটি শীস উৎপাদন করে; (আর) প্রত্যেক শীসে একশত শস্যদানা। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। আর আল্লাহ দানশীল ও সব কিছু জানেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৬১)
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের প্রতি রাতে যখন হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হতেন, তখন দানের ব্যাপারে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হতেন। যা উপরোল্লেখিত হাদিসে প্রমাণ পাওয়া যায়।
পরিশেষে…
দান-সাদকায় দুনিয়াতে যেমন সম্পদের বরকত হয়। আবার পরকালে রয়েছে অসংখ্য নেয়ামত ও পুরস্কার। তাই দান-সাদকায় কৃপনতা করা ঠিক নয়। আল্লাহর পথে দান এমনিতেই সাওয়াবের আর তা যদি হয় পবিত্র রমজান মাসে তাহলে তো কোনো কথাই নেই।
আরও পড়ুন > তারাবিহ নামাজের মুনাজাত
তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দেখ! তোমরাই তো ওই বান্দা! যাদেরকে আল্লাহ তাআলা তার পথে দান করার আহ্বান জানাচ্ছেন। অথচ তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদের প্রতি কৃপণতা করছে। (জেনে রেখ!) আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত।’ (সুরা মুহাম্মদ : আয়াত ৩৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানে গরিব-দুঃখীর মাঝে বেশি বেশি দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবির অনুসরণে দান-সহযোগিতায় যথাযথ আমল করে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম