মানুষের জন্য যে কারণে জুলুম করা নিষিদ্ধ
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি মানুষকে আমার প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ মানুষকে সঠিক পথে সন্ধান দিতে আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। যারা মানুষকে সত্য ও ন্যয়ের পথে আহ্বান করেছেন।
সত্য ও ন্যয়ের পথে আহ্বানের ধারাবাহিকতায় আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্য দ্বীন পবিত্র কুরআনসহ মানুষের কল্যাণে দুনিয়াতে পাঠালেন।
জুলুম ও অবিচারে জর্জরিত অন্ধকার সমাজে আগমন করেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অন্ধকার সমাজকে তিনি দেখান আলোর পথ। এ কাজে তিনিসহ কাজ করেছেন তাঁর প্রিয় সাহাবাগণ। তাদেরই একজন হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু।
প্রিয়নবি তাকে ইয়ামেনের শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন। সেখানে যাওয়ার আগে তাঁকে কিছু নসিহত করেন। যার মধ্যে অত্যাচার বা জুলুমকে অত্যধিক ভয় করতে বলেছেন। কেননা জুলুম মারাত্মক অপরাধ।
আর এ কারণেই শাসনকার্য পরিচালনা ও বিচার ব্যবস্থাপনায় যেন কেউ জুলুমের শিকার না হয়, সে দিকে বিশেষ নজর রাখতে এবং উম্মতের কাছে এ সংবাদ পৌছে দেয়ার লক্ষ্যেই প্রিয়নবি জুলুম সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস তুলে ধরেছেন। এ হাদিসের ওপর আমল করার উম্মতে মুহাম্মদির অনুকরণীয় অন্যতম আদর্শ। আর তাহলো-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামেন পাঠান, তখন তাকে বলেন, মজলুমের (অত্যাচারিত ব্যক্তির) ফরিয়াদকে ভয় করবে। কারণ মজলুমের ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না। (বুখারি)
হাদিসের আলোকে বুঝা যায়-
শুধু কোনো মানুষ-ই নয়, বরং কোনো প্রাণীর প্রতিই অত্যাচার করা যাবে না। কেননা আল্লাহর যেমন সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক; তেমনি প্রিয়নবি ছিলেন বিশ্বজাহানের জন্য রহমতস্বরূপ।
মনে রাখতে হবে
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব; সুন্দর ও নিরাপদ জীবন পরিচালনায় যাদের জন্য রচিত হয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। আর এ কারণেই মানুষের প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতাও সুনিশ্চিত।
সুতরাং মানুষের সঙ্গেতো অন্যায় আচরণ নয়, জুলুম-অত্যাচার নয়, বরং সৃষ্টির কারো প্রতি অত্যাচার-নির্যাতনমূলক আচরণ করা হোক; এটা প্রিয়নবি কোনোভাবেই পছন্দ করতেন না। কেননা মাজলুম বা অত্যাচারীর দোয়া বা কষ্ট আল্লাহর দরবারে সরাসরি পৌছে যায়। প্রিয়নবির হাদিসেও তা প্রমাণিত।
পরিশেষে...
যেহেতু মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে এসেছে; তাই উল্লেখিত হাদিসের ওপর আমল করে অত্যাচারমুক্ত জীবন পরিচালনা করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা অত্যাচার মারাত্মক অপরাধ।
আর অত্যাচারের কারণে মাজলুমের এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না; তাই মানুষের জন্য জুলুম করা নিষিদ্ধ-ই নং বরং জুলুম থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি তা বন্ধ করাও জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুলুম অত্যাচার থেকে হেফাজত করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম