বিপদের কারণ ও করণীয়
আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা করার বিষয়ে কুরআনে পাকে উল্লেখ করেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধন-সম্পদ-প্রাণ ও ফলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। আর আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন। যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ-আপদ আসে; তখন তারা বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চিতভাবে তার দিকেই ফিরে যাব।' (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৫-১৫৬)
কখনো কখনো মানুষের ওপর বালা-মুসিবত ও বিপদ-আপদ তাদের পাপ বা অন্যায়ের কারণে এসে থাকে। এটা এ জন্য আসে যে, তারা যেন ভবিষ্যতে পাপ বা অন্যায় করা থেকে সতর্ক হয়ে যায়। সুতরাং বান্দার বিপদ-আপদ এক ধরনের রহমত।
আবার কখনো কখনো মানুষের ঈমানি পরীক্ষাস্বরূপ বালা-মুসিবত এসে থাকে। এতে ধৈর্যধারণে তাদের মর্যাদা বেড়ে যায়। এটাও আল্লাহ তাআলার রহমত।
তবে যখনই কোনো মানুষের বিপদ-আপদ আসবে তখনই মনে করতে হবে তা নিজের অন্যয়, ভুল বা পাপের কারণেই এসে থাকে। আর এ বিপদ-আপদের পরিপ্রেক্ষিতে বান্দাকে হতে হবে আল্লাহর প্রতি বিনয়ী। ক্ষমা চাইতে হবে দয়াময় আল্লাহর কাছে।
বিপদ-আপদ ও বালা-মুসিবতে করণীয়
>> বিপদ-আপদে বিচলিত না হয়ে এটাকে আল্লাহর রহমত মনে করা।
>> এ বিপদ-মুসিবত নিজের পাপ ও অন্যায়ের কারণে ঘটেছে মনে করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা বিনয়ী হওয়া।
>> মুসিবত থেকে আত্মরক্ষায় আল্লাহর কাছে অবনত মস্তকে ক্ষমা চাওয়া। আল্লাহর কাছে বিপদ চেয়ে নেয়া ঠিক নয়।
>> বিপদ ও মুসিবতে সবর অবলম্বন করা। বেসবরি ও হা হুতাশ করা থেকেও বিরত থাকা।
>> যে কোনো বিপদ-মুসিবতে সালাতুল হাজত' দু'রাকাআত নামাজ আদায় করে নেয়া। নামাজ পড়ে বিপদ আপদ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।
>> বিপদ-মুসিবতে বা কোনো জটিল সমস্যা দেখা দিলে বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ করা। কোনোভাবেই ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল না হওয়া।
>> বিপদ ও মুসিবত যত ছোটই হোক বা যত বড়ই হোক সব সময় উল্লেখিত দোয়া পড়া। মনে রাখতে হবে যদি শরীরে একটি কাঁটাও বিধে তাহলেও এ দোয়া পড়া-
اِنَّالِلَّهِ وَ اِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ – اَللّهُمَّ اَجِرْنِىْ فِىْ مُصِيْبَتِىْ وَاخْلُفْ لِىْ خَيْرًا مِّنْهَا -
উচ্চারণ : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন; আল্লাহুম্মা আযিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফলি খাইরাম মিনহা। (মুসলিম)
উল্লেখ্য যে, মানুষের কোনো কিছু হারিয়ে গেলে ৪১ বার ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন' পড়া অত্যন্ত ফলদায়ক ও পরীক্ষিত আমল।
তাই দুনিয়ার সব ধরনের বিপদ-আপন, বালা-মুসিবতে ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর জিকির-আজকার ও তার সাহায্য কামনা করা উচিত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিখানো দোয়া পড়াও জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত নিয়মগুলোর পালনের মাধ্যমে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার তওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম