বান্দার নিয়মিত তাওবা ও ইসতেগফারের সুফল
মানুষের প্রতি আল্লাহ তাআলার দয়া ও করুণা অসীম। তাঁর দয়ার কোনো সীমা নেই। কুরআনে আল্লাহ নিজের ব্যাপারে ঘোষণা দেন- নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়ালু।' আল্লাহ তাআলা ক্ষমা, দয়া ও করুণা লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো তাওবা ও ইসতেগফার।
বান্দা তাওবা এবং ইসতেগফারের মাধ্যমেই অন্যায় পথ থেকে মাওলার দিকে ফিরে আসে। বিগত জীবনে অন্যায় কাজের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়। তাঁর এ অনুশোচনা ও অনুতাপই তাকে মাওলার দরবারে একান্ত আপনজন ও প্রিয় করে তোলে।
যে বান্দা নিয়মত আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইসতেগফার করে তাঁর জন্য রয়েছে অসংখ্য সুফল। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। প্রিয়নবি বলেন-
>> হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিল, এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে, যে গোনাহ করে তাওবা করে; পুনরায় গোনাহ করে। আবার তাওবা করে আবার গোনাহ করে। আবার গোনাহের কাজে মশগুল হয় এবং আবার তাওবা-ইস্তিগফার করে। এ রূপ করতে থাকা ব্যক্তির কি অবস্থা হবে? হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তার কর্তব্য হলো সর্বদা তাওবা-ইস্তিগফার করতে থাকা। কেননা তাওবা-ইস্তিগফার অব্যাহত থাকলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে যাবে। শয়তান বলবে, এ ব্যক্তিকে গোনাহর কাজে সর্বদা মশগুল রাখতে আমি অক্ষম।
>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট তাওবা করতে থাক। কেননা আমি নিজে দৈনিক ১০০ বার তাওবা করি।
>> হজরত আবু আইয়ুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একথা শুনেছি, যা তোমাদের কাছ থেকে গোপন রেখেছিলাম; তাহলো এই যে, তিনি বলেছেন, যদি তোমরা গোনাহ করে আল্লাহ তাআলার মহান দরবারে তাওবা-ইসতেগফার না করতে, তবে আল্লাহ তাআলা এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যারা গোনাহ করে আল্লাহ তাআলার দরবারে তাওবা করতো, তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করতেন। (মুসলিম)
সুতরাং যে ব্যক্তি কৃত অন্যায়ের জন্য তওবা করবে, সে অবশ্যই আল্লাহর নাফরমানীর কাজ থেকে সর্বদা বিরত থাকতে সচেষ্ট হবে। আল্লাহ পাকের তরফ থেকে আরোপিত ফরজ সমূহকে যত্নসহকারে আদায় করবে। বান্দার অধিকার খর্ব হলে (যেমন- কাউকে গাল-মন্দ, গীবত-শেকায়াত, অত্যাচার-নির্যাতন করলে) তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে। আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাওবা ও ইসতেগফার করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবি আমলি জিন্দেগির আদলে নিজেদের জীবন গঠন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস