আত্মগৌরব বা নিজের মতামতকে প্রাধান্য দেয়ার অপকারিতা
অহংকারের একটি শাখা হলো আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী। অহংকার ও আত্মগৌরবের মধ্যে বিভেদ রয়েছে। অহংকার হলো নিজেকে অন্যের তুলনায় বড় মনে করা আর অন্যকে তুচ্ছ ও নিকৃষ্ট মনে করা। আর শয়তানই ছিল দুনিয়াতে প্রথম অহংকারী।
আর আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী হলো অন্যের দিকে লক্ষ্য না করে শুধুমাত্র নিজেকে মহতি গুণের মালিক বলে ধারণা করা এবং আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত গুণাবলীকে নিজস্ব সম্পদ মনে করা। আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত গুণ নিজ থেকে হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় না করাও খোদপছন্দী বা আত্মগৌরবের অর্ন্তগত।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী না করার ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআনে এসেছে-
অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা করবে না, কে মুত্তাকি
এ সম্পর্কে তিনিই সম্যক জানেন। (সুরা নজম : আয়াত ৩২)
রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোদপছন্দী বা আত্মগৌরব করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন এ সবই মানুষের ধ্বংসের কারণ। হাদিসে এসেছে-
‘প্রবৃত্তির অনুগামী হওয়া, কৃপণতার অনুগত হওয়া এবং আত্মপ্রশংসায় লিপ্ত হওয়া,
এগুলো হচ্ছে ধ্বংসাত্মক বদ-অভ্যাসসমূহের অর্ন্তগত। তবে এ সবের মধ্যে শেষটি
(‘ধ্বংসাত্মক বদ-অভ্যাস’) হচ্ছে সবচেয়ে জঘন্য।’ (বায়হাকি, মিশকাত)
মনে রাখতে হবে
নিজেকে, নিজের কাজকে বা মতামতকে বিজ্ঞতম মনে করা এবং অন্যের মতামতের প্রতি কোনো গুরুত্বারোপ না করার মধ্যে রয়েছে অকল্যাণ। এগুলোই হলো খোদপছন্দী বা আত্মগৌরব। এ ধরনের মন-মানসিকতার কারণেই পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারিহ-হানাহানি ও অশান্তির সৃষ্টি হয়। প্রিয়নবির ঘোষণায় তা হলো মানুষের ধ্বংসের অন্যতম কারণ।
সুতরাং আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে। এ কারণেই কুরআন এবং হাদিসে আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
মানুষের উচিত-
নিজের মতামত, গুণ বা কাজকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যের ভাল কাজ,
গুণ ও মতামতকে সম্মান করা। আর কিতাবের নসিহত অনুযায়ী, নিজেদের রায় বা
মতামতকে সন্দেহযুক্ত মনে করা। যখনই মানুষ এ রীতির অনুসরণ করবে তখনই সুন্দর
ও আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। সর্বত্র বিরাজ করবে সুখ ও শান্তি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন হাদিসের নির্দেশ মোতাবেক সুন্দর ও সুখ-শান্তিময় জীবন-যাপনে আত্মগৌরব বা খোদপছন্দী থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস