ইসলাম গ্রহণে যে কারণে জোর-জবরদস্তি নেই
আল্লাহ তাআলা কর্তৃক মনোনীত চূড়ান্ত জীবন বিধান হলো ইসলাম। যা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত ও কল্যাণের জীবন ব্যবস্থা দিয়ে মনোনীত করেছেন। যে কারণে ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে কাউকে জোর-জবরদস্তি করা যাবে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের ২৫৬নং আয়াতে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়ে বলেছেন-
‘দ্বীনের (ইসলামি জীবন-ব্যবস্থা গ্রহণের) ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। ভ্রান্ত মত ও পথ থেকে সঠিক মত ও পথকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। এ যে কেউ তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকাড়ে ধরে, যা কখনো ছিন্ন হয় না। আর আল্লাহ সব কিছু শোনেন এবং জানেন।’
এ আয়াতে কারিমায় জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ‘ইসলাস’-কে মেনে নেয়ার বিষয়ে জোর-জবরদস্তি না করার জন্য আল্লাহ তাআলা নির্দেশ প্রদান করেছেন। যার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করেছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁরা সাহাবা ও অনুসারীরা।
ইসলাম হলো চিরন্তন, সুন্দর ও কল্যাণকর জীবন ব্যবস্থা। যারাই ইসলামকে সুদৃঢ়ভাবে গ্রহণ করে; তাঁরাই দুনিয়া ও পরকালের ধ্বংস ও প্রবঞ্চনা থেকে মুক্ত হয়ে যায়।
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার এক বৃদ্ধা নাসারা (খ্রিস্টান) মহিলাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তখন সে মহিলা উত্তরে বলেছিল- ‘আমি মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়ানো এক বৃদ্ধা। শেষ জীবনে নিজের ধর্ম কেন ত্যাগ করব?’ হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বৃদ্ধা মহিলার এ কথা শুনেও তাকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেননি বরং এ আয়াত পাঠ করলেন- ‘লা ইকরাহা ফিদ-দ্বীন অর্থাৎ ধর্মে বল প্রয়োগের কোনো নিয়ম নেই।’ (তাফসিরে মারেফুল কুরআন)
ইসলাম গ্রহণের (ঈমানের) সম্পর্ক বাহ্যিক অঙ্গ-প্রতঙ্গের সঙ্গে না হওয়ায় জোর-জবরদস্তি করে ঈমান গ্রহণ করানোর কোনো সুযোগই নেই। প্রকৃত পক্ষে ইসলাম গ্রহণে বল প্রয়োগ সম্ভবও নয়। কারণ ঈমানের সম্পর্ক বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে নয়; তাহলো মনের সঙ্গে।
তাই ইসলামের সৌন্দর্য ও উত্তম আদর্শগুলোই মানুষকে ইসলাম গ্রহণে অনুপ্রাণিত করে। এটাই ইসলামের প্রচার ও প্রসারের অন্যতম মাধ্যম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের সৌন্দর্য ও উত্তম বৈশিষ্ট্যগুলো যথাযথ পালন করার মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম