পিতামাতার খেদমতের সুনির্ধারিত পুরস্কার
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের মানুষকে পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ প্রদান করেছেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পিতামাতার খেদমতের অসংখ্য নির্দেশনা, পুরস্কার ও ফজিলত বর্ণনা করেছেন। যা মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সফলতা প্রাপ্তির অন্যতম শর্তও বটে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাত প্রাপ্তিতে এ রকমই একটি শর্ত প্রদান করেছেন। আর তা হলো শিরকমুক্ত থেকে পিতামাতার সঙ্গে নম্র কথা বলা এবং ভারণপোষণ নির্বাহ করা। বর্ণিত আছে যে-
হজরত তাইসালা ইবন মাইয়াস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত ছিলাম। সেখানে আমার দ্বারা এমন কিছু কাজ সংঘটিত হয় যেগুলোকে আমি কবিরা গোনাহ বলে মনে করি। হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খেদমতে আমি সে প্রশ্নটি তুলে ধরলাম। তিনি (ইবনে ওমর) জানতে চাইলেন, সে কাজগুলো কি কি?
আমি বিষয়গুলো বর্ণনা করলাম। তা শুনে তিনি (ইবনে ওমর) বললেন, ‘এগুলোতো কবিরা গোনাহ নয়; বরং কবিরা গোনাহ হলো ৯টি-
>> আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে শরিক করা;
>> মানুষ হত্যা করা;
>> জিহাদ হতে পলায়ন করা;
>> সতীসাধ্বী নারীর বিরুদ্ধে অসতীত্বের অপবাদ রটানো;
>> সুদ খাওয়া;
>> ইয়াতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা;
>> মসজিদে ধর্মদ্রোহিতা (ইহলাদ)
>> ধর্ম নিয়ে উপহাস করা; এবং
>> সন্তানের অবাধত্যতার দ্বারা পিতামাতার কান্না।
অতঃপর হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে এবং জান্নাতে যেতে চাও? সে (তাইসালা ইবনে মাইয়াস) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাহাই চাই।
তিনি (ইবনে ওমর) জানতে চাইলেন, তোমার পিতা-মাতা কি জীবিত আছে? আমি বললাম, আমার মা আমার সঙ্গে রয়েছে। তিনি (ইবনে ওমর) বললেন, ‘আল্লাহর কসম! যদি তুমি তাঁর সঙ্গে নম্র ভাষায় কথা বল এবং তাঁর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন কর তবে তুমি অবশ্যই জান্নাত লাভ করবে। অবশ্য যতক্ষণ তুমি কবিরা (বড়) গোনাহমুক্ত থাকবে। (আদাবুল মুফরাদ)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পিতা-মাতার খেদমত করার পাশাপাশি উল্লেখিত শিরকগুলো থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর