প্রিয়নবি উম্মতের যে কাজের ব্যাপারে ভয় করতেন
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওহিদ তথা একত্ববাদের বাণী নিয়ে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হিসেবে এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বমানবতার জন্য রহমতের ভান্ডার। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’
রহমতের নবি সব সময় তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করতেন। তিনি তাঁর উম্মতের জন্য একটি ব্যাপারে ভয়ের আশংকা করতেন। আর তা হলো- মানুষ বৈধ মনে করে করে খুব ছোট এবং সামান্য ভুল করবে; যা শিরকে আসগার তথা ছোট ছোট শিরক-এ পরিণত হবে। এ ছোট ছোট শিরকগুলো এক সময় শিরকে আকবর বা বড় শিরকে রূপান্তরিত হবে। ছোট শিরকের মধ্যে যে বিষয়টি প্রিয়নবি গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করেছেন তা হলো ‘রিয়া বা লোক দেখানো কাজ’।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে যে বিষয়ে ভয় করি,
সে বিষয়ে তোমাদের সাবধনা করতে চাই; তাহলো শিরকে আসগার বা ছোট শিরক।
সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ছোট শিরক কি?
তিনি বললেন, ‘রিয়া’ (লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কাজ করা)।
যেদিন আল্লাহ তাআলা বান্দার কর্মের প্রতিফল দান করবেন,
সেদিন তিনি বলবেন, ‘দুনিয়াতে তোমরা যাদের দেখানোর জন্য কাজ (আমল বা ইবাদত) করেছ;
আজ (প্রতিদানের জন্য) তাদের কাছে যাও। দেখ, (তাদের কাছ থেকে) কোনো প্রতিদান পাও কিনা।’ (মুসনাদে আহমাদ)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা অনুযায়ী, রিয়া হলো আল্লাহর সঙ্গে ছোট শিরক। যার ফলে মানুষের দুনিয়ার ইবাদত-বন্দেগি বরবাদ হয়ে যায়। উল্লেখিত হাদিস থেকে বুঝা যায়, রিয়া কত বড় মারাত্মক অপরাধ। তাই ‘রিয়া’সহ (লোক দেখানো ইবাদত) যাবতীয় ছোট ছোট শিরক থেকে বিরত থাকা উম্মতে মুহাম্মাদীর একান্ত কর্তব্য।
মনে রাখতে হবে
যে বিষয়ে প্রিয়নবি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তা অত্যন্ত মারাত্মক অপরাধ। অন্য একটি হাদিসের পরিভাষায় তা সুস্পষ্ট ফুটে ওঠেছে। আল্লাহ তাআলা শিরককারীর কোনো দায়িত্বই গ্রহণ করবেন না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘আমি শিরক এবং অংশীদার থেকে বেপরোয়া।
যে (ব্যক্তি) কোনো কাজে আমাকে ব্যতিত অন্য কাউকে শরিক করল
আমি তার থেকে সম্পর্কমুক্ত। যার জন্য সে (শিরক) করেছে; সেটা তারই জন্য।’ (মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির ঘোষিত উদ্বেগের বিষয় ‘রিয়া’ থেকে হেফাজত করুন। রিয়াসহ যাবতীয় ছোট ছোট শিরকমুক্ত ঈমানের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তাআলার জন্য ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। পরকালে প্রিয়নবির সুপারিশের মাধ্যমে মহাসফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস