পরকালে সুপারিশ প্রসঙ্গে আল্লাহর ঘোষণা
আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ তাআলা প্রশ্ন রেখে বলেন-‘মাংজাল্লাজি ইয়াশফাউ’ ইংদাহু ইল্লা বি-ইজনিহি অর্থাৎ কে সেই ব্যক্তি? যে তাঁর (আল্লাহর) অনুমতি ব্যতিত তাঁর সমীপে কারো জন্য সুপারিশ করতে পারে। আয়াতুল কুরসির পঞ্চম অংশে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার মানুষকে তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্যের চ্যালেঞ্জ ছূড়ে দিয়েছেন।
আয়াতের আগের অংশে আল্লাহ তাআলা নিজেকে আল্লাহ তাআলা নিজেকে আসমান-জমিনের একচ্ছত্র অধিপতি হিসেবে সাব্যস্ত হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। পরবর্তী অংশে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন; এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যে তাঁর অনুমতি ব্যক্তি কারো ব্যাপারো কোনো ধরণের সুপারিশ করতে পারে।
আলোচ্য আয়াতাংশটিও আয়াতুল কুরসির পঞ্চম বক্তব্য। এ বক্তব্যে আল্লাহ দুনিয়ার আগের এবং পরের সবার ব্যাপারেই এ কঠিন ঘোষণা দিয়েছেন যে, আল্লাহর অনুমতি ব্যতিত কেউ কারো ব্যাপারে তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারবে না।
আল্লাহ তাআলা যেহেতু যাবতীয় সৃষ্টির স্রষ্ঠা। আর কোনো সৃষ্টিই তার চেয়ে বড় নয়। তাই কোনো ব্যক্তিই তার কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন বা খবরদারী করার অধিকার রাখে না।
হজরত ঈসা আলাইসি সালাম কর্তৃক সুপারিশ লাভ খ্রিস্টানদের একটি প্রবল বিশ্বাস। আবার বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ এ আকিদা পোষণ করে যে, পীর বাবা, দয়াল বাবা, খাজা বাবা বা আধ্যাত্মিক গুরুই পরকালে তার অনুসারীকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এ আয়াতাংশে সে বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করা হয়েছে।
তবে এ কথা সুস্পষ্ট যে-
>> আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে অবকাশ রেখেছেন যে, তাঁর প্রিয় হাবিব বিশ্বমানবতার মুক্তির কাণ্ডারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুপারিশের অনুমতি দান করবেন এবং প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ কবুলও করবেন। হাশরের ময়দানে সবচেয়ে বড় শাফায়াতকারী হবে প্রিয়নবি নিজেই। (তাফসিরে জালালাইন) তাছাড়া হাদিসে পাকে প্রিয়নবি কর্তৃক তাঁর উম্মতের জন্য সুপারিশের অনেক ঘোষণাও রয়েছে।
>> “তবে আল্লাহ তাআলার কিছু খাস বান্দা রয়েছে, যারা তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে তা করতে পারবেন। অন্যথায় নয়। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হাশরের ময়দানে সর্ব প্রথম আমি সমস্ত উম্মতের জন্য সুপারিশ করবো। একে ‘মাকামে মাহমুদ’ বলা হয়। যা প্রিয়নবির জন্য খাস; অন্যের জন্য নয়।” (তাফসিরে মারেফুল কুরআন)
আল্লাহ তাআলার শান ও মানের ওপর অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জনকারী ব্যক্তিই দুনিয়া ও পরকালে আয়াতুল কুরসির ফজিলত ও মর্যাদা লাভ করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আয়াতুল কুরসিতে ঘোষিত মর্যাদা ও গুণগুলোর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে শিরকমুক্ত ঈমান লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম