মসজিদে অবস্থান ও ভালবাসা প্রদর্শনের ফজিলত
মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান স্থান। দুনিয়াতে জান্নাতি আবহ ও পরিবেশের সর্বোচ্চ স্থানও মসজিদ। এ কথা সুনিশ্চিত যে, মসজিদে অবস্থানে গোনাহের কোনো অবকাশ নেই। নেই শয়তানের অসওয়াসা প্রাপ্তির কোনো সুযোগ।
মসজিদে অবস্থানকালীন সময়ে দুনিয়ার পেরেশানি ও ফেতনা-ফাসাদ থেকে মুক্ত থাকা যায়। জাগতিক সব চিন্তা ও পেরেশানি থেকে মুক্ত থেকে হৃদয়ে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভূত হয়। আল্লাহর তাআলার রহমত বরকত মাগফেরাত ও খোশখবরির সৌভাগ্য লাভে ধন্য হয় মুমিন বান্দা।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও মসজিদের প্রতিটি ইবাদতের ফজিলত ও মর্যাদা ঘোষণা করেছেন। ঘরে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তথা মসজিদের বাইরের ইবাদত-বন্দেগি ও সময় ক্ষেপনের চেয়ে মসজিদে ইবাদত-বন্দেগি ও সময় ব্যয়ের মধ্যে অধিক কল্যাণ রয়েছে।
যাদের অন্তরে মসজিদের প্রতি ভালবাসা রয়েছে; তাদের জন্য প্রিয়নবি দিয়েছেন বিশেষ ঘোষণা। আর তাহলো-
হাশরের ময়দানে যেদিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কারো ছায়া থাকবে না; সেদিন আল্লাহ তাআলা সাত শ্রেণীর ব্যক্তিকে আরশের ছায়ায় স্থান দিবেন। এ সাত শ্রেণীর লোকের মধ্যে এক শ্রেণীর ব্যক্তি হলো ওই সব লোক, ‘যাদের অন্তর মসজিদসমূহের সঙ্গে লটকে থাকে অর্থাৎ মসজিদের প্রতি তার মন সবসময় আকৃষ্ট থাকে।’
মসজিদের প্রতি ভালবাসা ও আকর্ষণের ফলে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি খুশী হন। যার প্রমাণ রয়েছে প্রিয়নবির ঘোষণায়-
>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন জিকির ও নামাজের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শুরু করে তখন থেকে আল্লাহ তাআলা তাকে নিয়ে ওই ব্যক্তির ন্যায় খুশী হন, যেভাবে প্রবাসী কোনো ব্যক্তি বাড়ি ফিরে এলে তার বাড়ির লোকজন যেমন খুশী হন।’ (ইবনে মাজাহ, ইবনে আবি শায়বা, মুসতাদরেকে হাকেম, সহিহ তারগীব)
>> হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘মসজিদ হলো প্রত্যেক পরহেজগার (আল্লাহর ভীরুদের) ব্যক্তির ঘর। আর যে ব্যক্তির ঘর মসজিদ সেই ব্যক্তির জন্য আল্লাহ আরাম, করুণা এবং তার সন্তুষ্টি ও জান্নাতে যেতে পুলসিরাত অতিক্রম করে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন।’ (তাবারানি, সহিহ তারগীব)
পরিশেষে...
মসজিদের প্রতি ভালবাসা, মসজিদে অবস্থানের ফলে মানুষ দুনিয়ার যাবতীয় অন্যায় ও অপরাধ থেকে মুক্ত থাকা যায়। অন্যায় ও অপরাধ থেকে মুক্ত ব্যক্তির জন্যই দুনিয়া ও পরকালের মহাসফলতা।
সর্বোপরি কথা হচ্ছে
মানুষ যতক্ষণ মসজিদে অবস্থান করে অন্তত ততক্ষণ যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। আর যদি নামাজ ও জিকির-আজকারে নিয়োজিত থাকে তবে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক আরো বেশি জোরদার হয়। আর মসজিদে অবস্থানের এ ধারা অব্যাহত থাকলে মানুষের দ্বারা সমাজে সংঘটিত নানবিধ খারাপ কর্মকাণ্ড কমে আসবে। সুপ্রতিষ্ঠিত হবে শান্তির সমাজ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে এবং পরকালে হাশরের ময়দানের কঠিন সময়ে আরশের ছায়া দানসহ তাঁর নৈকট্য লাভে মসজিদের প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধি করে দিন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম