ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

জহির রায়হান অনুসন্ধান ও ভালোবাসা

যেন ইতিহাসের দায়মোচন

মো. ইয়াকুব আলী | প্রকাশিত: ০৮:২৯ এএম, ১৩ আগস্ট ২০২৩

এই বইয়ের ভূমিকায় মতিউর রহমান লিখেছেন, জহির রায়হান বাংলার সেই বিরল কথাশিল্পী, চলচ্চিত্রকার ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী, যিনি মানুষের মুক্তির প্রেরণায় তার সৃজনশীল হাত এবং প্রবল পদাতিক সত্তা একই সঙ্গে সক্রিয় রেখেছেন। সাহিত্যজীবনের শুরুতেই ‘ওদের জানিয়ে দাও’ কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি সাম্রাজ্যবাদী-উপনিবেশবাদী শক্তিকে জানাতে চেয়েছেন- তিনি তাদের বিরুদ্ধে, গণমানুষের পক্ষে কথা বলতে এসেছেন।

মতিউর রহমান জহির রায়হানকে অমর একুশের মানসসন্তান বলে অভিহিত করেছেন। ‘একুশের গল্প’, আরেক ফাল্গুন কিংবা একুশে ফেব্রুয়ারি উপন্যাস অথবা জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্র পরিচালনার মধ্য দিয়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে বেঁধেছেন অমর ধ্রুবপদে। তার মতে, ‘একুশের গল্প’ এবং আর কত দিন উপন্যাসের তপু তো আসলে জহির রায়হানই।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জহির রায়হান এদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের চিরস্মরণীয় নাম। তিনি একাধারে বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্র এবং ইংরেজি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘কখনো আসেনি’ দিয়ে তার চলচ্চিত্র-যাত্রা, তা ক্রমশ ইতিহাস সৃষ্টি করে সোনার কাজল, কাঁচের দেয়াল, সংগম, বাহানা, বেহুলা, জ্বলতে সুরজকে নিচে, জীবন থেকে নেওয়া, স্টপ জেনোসাইড, আ স্টেট ইজ বর্ন-এর মতো একগুচ্ছ সাড়াজাগানো, পুরস্কৃত এবং বাঁকবদলকারী চলচ্চিত্রকর্মের সূত্রে।

একুশে ফেব্রুয়ারি এবং লেট দেওয়ার বিল লাইট নামে দুটো চলচ্চিত্রকাজ যদিও তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি, তবু তার অসমাপ্ত কর্মের অঙ্গীকার আজকের নবীন চলচ্চিত্রকর্মীরা ধারণ করে চলেছেন তাদের যাবতীয় দায়বদ্ধ চলচ্চিত্র-তৎপরতায়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এই বইয়ের প্রথম পর্বের একগুচ্ছ লেখার মধ্যে দিয়ে ঘৃণ্য ঘাতকের বিরুদ্ধে জহির রায়হানের আমৃত্য সত্যটি পাঠকের অনুধাবনে আসবে। বইটি প্রমাণ্য করার জন্য সম্পাদক সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিকের ‘মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন মিরপুরঃ জহির রায়হান অন্তর্ধান রহস্যভেদ’ বইয়ের সাহায্য নিয়েছেন।

স্মৃতিচারণা, মূল্যায়ন ও আলোচনায় যেমন বিভিন্ন প্রজন্মের লেখক-শিল্পী-চলচ্চিত্রকারদের জহির-স্মৃতি ও মূল্যায়ন উঠে এসেছে, তেমনি তার পরিবারের সদস্যের লেখা ফুটিয়ে তুলেছে নিবিড় এক জহির রায়হানকে, যিনি নিজের পরিবার ছাপিয়ে গোটা মানবজাতিকে মনে করতেন তার প্রিয় পরিবার। এছাড়াও জহির রায়হানের গল্প, প্রবন্ধ, চিঠি, আলাপন এবং আলোকচিত্রাবলির সংযোজনের মধ্য দিয়ে বইটি হয়ে উঠেছে এক প্রামাণ্য দলিল।

বিজ্ঞাপন

‘জহির রায়হান অন্তর্ধান রহস্যভেদ’ অধ্যায়টি এতদিন ধরে চলে আসা অমীমাংসিত বিষয়টির উপসংহার টেনে দিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় জহির রায়হান নিখোঁজ নন, গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সামরিক এবং পুলিশ বাহিনীর জবানিতে এবং মাঠপর্যায়ে তাদের শনাক্তকরণে বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে উঠে এসেছে।

ভোরের কাগজের নিজস্ব প্রতিবেদক জুলফিকার আলি মাণিক অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে এই কাজটি করেছিলেন ১৯৯৯ সালে যার রিপোর্ট প্রকাশিত হয় সেই বছরের ১ সেপ্টেম্বর। পাশাপাশি উঠে এসেছে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভের কথাও। এতদিন পরে বিষয়টি প্রকাশ করার বিষয়ে সেনাবাহিনীর সৈনিক আমির হোসেন বলেছেন, ‘কেউ জিজ্ঞেস করেনি আমাকে, মুক্তিযুদ্ধের কথা তো এখন কেউ শুনতেই চায় না। তাই ভুলে যেতে চিয়েছি যে আমিও মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম।’

এরপর আছে অন্য রায়হানের লেখা ‘পিতার অস্থির সন্ধানে’। এই লেখাটা একজন পুত্রের পিতাকে খুঁজে ফেরার এক দীর্ঘ পথ পরিক্রমার গল্প। তার মতে, ‘মূল ঘটনা চাপা পড়ে গিয়েছিল বিভ্রান্তি আর অর্ধসত্য ঘটনার মধ্যে। তবে জহির রায়হানসহ ৩০ জানুয়ারির ওই যুদ্ধের মধ্যে পড়া বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনা কিংবা পুলিশের সদস্যদের প্রায় সবাই শহীদ হয়েছিলেন, এটা সত্য।’

বিজ্ঞাপন

‘সে সময় সঠিকভাবে তদন্ত করলে নিশ্চয় ২৯ বছর ধরে জহির রায়হানের ঘটনাকে একটি মিষ্ট্রি বানিয়ে রাখা যেত না। জহির রায়হানের পরিবারের সদস্যদের অনেকেরই দৃঢ় ধারণা, মিরপুরের ওই ঘটনার পেছনে রয়েছে পরিকল্পিত চক্রান্ত। জিয়াউল হক লোদীর মেয়েও মনে করেন, এই ঘটনার আড়ালেও ঘটনা ছিল।’

অনল রায়হান প্রশ্ন তোলেন, ‘১৯৭২ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রেস ক্লাবে জহির রায়হান এক প্রেস কনফারেন্সে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনের নীলনকশা উদঘাটনসহ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অনেক গোপন ঘটনার নথিপত্র তার কাছে আছে, যা তিনি প্রকাশ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই করে নেওয়া অনেক মন্ত্রীর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়েও তিনি ডকুমেনস্ট সংগ্রহ করেছেন বলে কনফারেন্সে বলেছিলেন।’

‘এই হুমকিই তার জীবনের জন্য পাল্টা হুমকি হয়েছিল কি না, আজ কে বলবে? এসব পুরোনো খবরের পাতাগুলো ওলটাতে ওলটাতে মনে হবে এক জীবন্ত মানুষের জন্য রাষ্ট্র, পত্রিকা বা মানুষজনের চিন্তার অন্ত নেই। কিন্তু এসব ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলো কেন এবং তা নিরুত্তর রয়ে গেল কেন?’

বিজ্ঞাপন

কর্মসূত্রে জহির রায়হানকে চিনতেন কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। ‘জহিরকে যখন জানতাম’ শিরোনাম রাবেয়া খাতুনের লেখাটা জহির রায়হানকে চিনতে সাহায্য করে। জহির রায়হানের সাথে প্রথম পরিচয়ের কথা বলতে যেয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বয়সে খুবই তরুণ। ছোটখাটো শরীর। সাদা সাপটা চেহারা। ঝকঝকে চোখ। প্রথম দৃষ্টিতে সে-ই কেড়ে নেয় অন্যপক্ষের আকর্ষণ।’

তিনি জানাচ্ছেন, মানিক বন্দোপাধ্যায় ছিলেন জহির রায়হানের প্রিয় পাঠ্য। জহির বলতেন, এমন দেখার চোখ আমি কবে পাব। কখনো কোন লেখার মধ্যে ভীষণ ভেঙে পড়ে বলত, ‘আচ্ছা, যা বলতে চাই, পারি না কেন? ষোল আনাই পারব, এমন অলৌকিক আশা নিজের কাছে দাবি করা এখনই অন্যায় হবে। কিন্তু যেটুকু চাই, তার কিছু তো পাব। মনের মধ্যে কথা টগবগ করছে, কলমের মুখ বোবা। অসহ্য।’

একবার একজন জহিরকে দেখিয়ে বলেছিলঃ ওই বসে আছে, দেমাগের দেমাগী রা-ই-টার। সেটা শুনে প্রচন্ড মন খারাপ করেছিলেন জহির এবং পরবর্তীতে রাবেয়া খাতুনকে বলেছিলেন, ‘একটি দল আমাকে একেবারে অপাঙ্ক্তেয় করে রাখতে চাইছে। জানেন, মাঝে মধ্যে মনে হয় দেই সবকিছু ছেড়ে। হঠাৎ একদিন সাহিত্য ধরেছি। হঠাৎ একদিন ছেড়ে দেব। যাবে ল্যাঠা চুকে। সাধের ঝঞ্ঝাট আর ভালো লাগে না।...অন্যদের কথা জানি না, আমার জন্য এটা খুব কষ্টের। অহংকার জিনিসটা কেউ জন্মসূত্রে পে। কারও জীবনে আরোপিতভাবে আসে। কাউকে আবার শিখতেও হয় প্রয়োজনে। আমি তো এর কোনোটাতেই পড়িনি। আমার সৃষ্টির যখন আমার দৃষ্টিকেই পীড়া দে, তখন অন্যখান থেকে এসব শুনতে হলে বড় ভেঙে পড়ি।’

বিজ্ঞাপন

কিছু শব্দের জন্য জহিরের নিবিড় মোহ ছিল- পোস্টার, প্রভাতফেরি, বেঁচে থাকার যুদ্ধ ইত্যাদি। স্মৃতিচারণা ছিল জহিরের প্রিয় প্রসঙ্গ। ফেলে আসা গ্রামীণ জীবন। অগ্রজ শহীদুল্লা কায়সারের প্রতি ছিল নিবিড় ভালোবাসা। পারিবারিকসূত্রে আপনজন হলেও জহিরের জীবনে তার আরও ভূমিকা ছিল। জহির যে মতবাদে বিশ্বাস করতেন তার প্রথম মন্ত্রগুরু ছিলেন শহীদুল্লা কায়সার। শহীদুল্লা কায়সার জেলে গেলে জহিরের সুর ভাঙা ভাঙা শোনাত। চোখে ছেয়ে থাকত মেঘ-বিদ্যুৎ একসঙ্গে। মাথা নিচু করে রাখত। সামলে উঠতে সময় নিত। কাছাকাছি বয়সের ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের এতটা টান সাধারণত কম দেখা যায়।

জহির বিশ্বাস করত না গল্প লেখার কাঁচামাল নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষছোবলে আংশিক ক্ষয়ে যাওয়া ঢাকার মন-মানস, দাঙ্গা, দেশভাগ, মহাজনি মহাজের সমস্যা, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ বাঁচিয়ে এক শ্রেণির মানুষের তীব্র সংগ্রাম। খরায় শক্ত নিস্ফলা মাটি, ঝঞ্চা-বন্যার ধোয়া প্রকৃতি, রহস্যে ভয়াল পাতাল, বোধবুদ্ধিহীন নির্বাক শিশু, নিবিড় তন্দ্রার তৈরি পরাবাস্তবের অলৌকিক স্বপ্ন। খুঁজলে কোথায় গল্প নেই। জহির বলত, মালমসলা চারিদিকে ছড়ানো। নেওয়ার মতো সক্ষম হাতের অভাব। মজবুত নির্মাণ তাই সম্ভব হচ্ছে না। জহির বলত, রবীন্দ্রনাথ যুগোত্তীর্ণ তার অসাধারণ প্রতিভার গুণে। আমরা তার কাছাকাছি রেঞ্জের মানুষ নই।

জহির কখনো বলত, ‘চলতি সাহিত্যে মাঝে মধ্যে প্রকৃতি বড় উপেক্ষিত। প্রকৃতিকে রবীন্দ্রনাথ বা বিভূতিভূষণ যেভাবে মানুষের মনের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়েছেন, এমন আর কে পারল।’ এক ধরনের উত্তেজনা নিয়ে বলত, ‘গ্রাম নিয়ে লিখতে হবে। নাগরিক স্রোত থেকে মাঝে মধ্যে কেটে পড়তে হবে গ্রামে। বিভূতিভূষণ শহরে মাস্টারি করতেন, কিন্তু মন বনবাসী হয়ে থাকতো গ্রামে। নয়তো পথের পাঁচালী’র মতো বই সম্ভব হতো না। একটা উপন্যাসের ছক রয়েছে মনের মধ্যে। দেখবেন ধা করে একদিন লিখে ফেলে তাকে লাগিয়ে দিয়েছি আপনাদের।...কথাসাহিত্যের ধরাবাঁধা ধ্যানধারণা, আঙ্গিক ভাঙতে শুরু করেছে বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী থেকে।’ জহির বিশ্বাস করতেন, উপলন্ধির গভীরতা না এলে গল্প সৃষ্টি অসম্ভব।

বিজ্ঞাপন

জহির রায়হান স্ত্রী সুমিতা দেবীকে ‘মিঠু-বিপুলের মা’ সম্বোধন করে এক দীর্ঘ চিঠি লিখেন। তার ভাষায়, ‘এটা কোনো পরমপত্র নয়। উপদেশলিপি নয়। হতাশার আগুনে দগ্ধ একটি মানুষের করুণ আকুতিও নয়। এটা হলো দীর্ঘ বছর ধরে ঘটে যাওয়া একটি অসাধারণ বিয়োগান্ত নাটকের সাধারণ যবনিকা পতন।’ এই চিঠিতে উঠে এসেছে জহির রায়হানের বাস্তব জীবনের রূঢ় সব অভিজ্ঞতা এবং আকাঙ্ক্ষা কথা।

জহির লিখেছিলেন, ‘আমি দেখেছি, নিদারুণ যন্ত্রণায় ভুগে ভুগে, প্রতিদিন, প্রতি রাতে, প্রতিক্ষণে দেখেছি। লম্পট যারা, অসাধু যারা, মিথ্যেবাদী যারা, চরিত্রহীন আর মুখোশধারী যারা, তারা জিতে গেলো। সমাজ তাদের বাহবা দিল। তারা বিজয়ী বলেই হয়তো, মানুষের দল তাদের পক্ষই নিলো। আমার কথা কেউ শুনলো না, আমার ব্যাথা কেউ বুঝতে চেষ্টা করল না। আমার সততার কেউ কোন মূল্য দিল না।’

তিনি আরও লিখেছিলেন,

‘কখনো মনে হতো আমরা বড় সুখী

কখনো মনে হতো আমরা বড় দুঃখী

কখনো মনে হতো আমরা বড় শান্ত

কখনো মনে হতো আমরা বড় অশান্ত

.......................................................

এ জীবনের কাছ থেকে আমরা কী চেয়েছিলাম।

কী পেয়েছি।

কী পাইনি।

তার হিসাব-নিকাশ করে আর লাভ নেই।

..........................................................

আমরা সবাই এক একটা পাগল।’

এই বইয়ে জহির রায়হানের রচনা থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে চমৎকার চারটি লেখা। ‘পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ’ প্রবন্ধে জহির লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের গত তেইশ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য দিক হল, পাকিস্তান কখনো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসিত হয়নি।...পাকিস্তানের এই মৃত্যুর জন্য শেখ মুজিবুর রহমান ও তার দলও দায়ী নয়।’ ‘অক্টোবর বিপ্লব ও সোভিয়েত চলচ্চিত্র’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আধুনিক সভ্যতার সবচেয়ে স্মরণীয় অবদান হচ্ছে দুটো। একটি সিনেমার জন্ম। অপরটি সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্ম। দুটোই বিপ্লব। একটা চারুকলার ক্ষেত্রে। অন্যটা সমাজব্যবস্থার ক্ষেত্রে।’ এই প্রবন্ধ দুটোতে জহিরের ভাবনার ছাপ অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। পরিশিষ্টে আছে জহিরের সমসাময়িক আরো চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্মৃতিচারণ। আর আছে কিছু অমূল্য আলোকচিত্র।

এই বইয়ের সম্পাদক মতিউর রহমানের কথা দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই। আমাদের জাতীয় জীবনে যখন দ্বিধা-সংশয়ের শেষ নেই, যখন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে অরুচি আর জীবনবিমুখতা, তখন জীবনের একটু আগুনের জন্য জহির রায়হানের কাছেই বারবার ফিরে যেতে হয় আমাদের। জহির রায়হানদের কখনোই মৃত্যু ঘটে না; ‘একুশের গল্প’ - এর তপুর মতো জহির রায়হানরা ‘সময়ের প্রয়োজনে’ যুগে যুগে ফিরে ফিরে আসেন বাংলার লাখো-কোটি শহীদের বেশি।

এমআরএম/এমএস

বিজ্ঞাপন