জাপানে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন
যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে অভিবাসী সপ্তাহ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন করেছে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। ১৩-১৯ ডিসেম্বর সপ্তাহব্যাপী বিশেষ নেটওয়ার্কিং কর্মসূচি পালন করা হয়।
১৮ ডিসেম্বর অভিবাসী দিবসের নির্ধারিত কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি সপ্তাহব্যাপী বিশেষ নেটওয়ার্কিং কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মী পাঠানোর সংস্থা সমূহের প্রতিনিধি, রেমিট্যান্স হাউসের মালিক ও প্রতিনিধি, স্টুডেন্ট ভিসায় জাপানে কর্মী প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধি, জাপানে কর্মরত টেকনিক্যাল ইন্টার্ন, স্পেসিফাইড স্কিল্ড ওয়ার্কার ও স্টুডেন্ট ভিসায় আগত খন্ডকালীন কাজে নিয়োজিত কর্মী ও কর্মী নিয়োগকারী জাপানিজ সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক এবং জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও টোকিওস্থ অন্যান্য দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়।
১৮ ডিসেম্বর টোকিওস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী প্রেরণ ও কর্মী নিয়োগ এবং রেমিট্যান্স পাঠানোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি, জাপান প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, সিআইপি সম্মাননা প্রত্যাশী জাপান প্রবাসী ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে অভিবাসী দিবস পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর পাঠানো বাণী পাঠ করা হয়।
এরপর জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও ব্যবস্থাপনায় দেশের জনসংখ্যা আজ জনসম্পদে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বের ১৭৪টি দেশে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ বাংলাদেশি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে।
তিনি বলেন, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, অভিবাসী কর্মীদের মর্যাদা ও অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা এবং দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় এ বছর বাংলাদেশ সরকার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ; বৈধ পথে প্রবাসী আয়-গড়ব বাংলাদেশ।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিসহ অভিবাসীদের দেশের উন্নয়ন ও সুনাম বৃদ্ধিতে আরও বেশি দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, অভিবাসী দিবসকে সামনে রেখে এ বছর সিআইপি (অনাবাসী বাংলাদেশি) ২০২০ হিসেবে ৬৭ জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে ৩ জন জাপান প্রবাসী রয়েছেন। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে এক্ষেত্রে জাপান প্রবাসীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তিনি জাপানের ক্রমবর্ধমান বিদেশি শ্রমিকের চাহিদা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ থেকে বেশি বেশি কর্মী এনে এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সুদৃঢতা নিশ্চিত করার জন্য সভায় অংশগ্রহণকারীসহ জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে আহ্বান জানান।
অভিবাসী দিবস এবং বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর গুরুত্ব ও তাৎপর্য, অভিবাসীদের জন্য সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং জাপানে বাংলাদেশের জনশক্তি নিয়োগের বিশেষ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. জয়নাল আবেদিন।
পরে, অতিথিদের উন্মুক্ত আলোচলায় অংশগ্রহণ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স এবং জাপানে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশি জনশক্তি নিয়োগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ কাজে তাদের সবধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এমআরএম/এমএস