শরণার্থী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সুইজারল্যান্ড
ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চলতি বছরের আগস্ট থেকে বিপুল সংখ্যক কুর্দি, আফগান এবং উত্তর আফ্রিকার আশ্রয়প্রার্থীদের আগমন সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সুইজারল্যান্ড। সংকট সমাধানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নতুন অভ্যর্থনাকেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থী সুইজারল্যান্ডে এসেছেন। বর্তমানে তুরস্ক, আফগানিস্তান এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮০০ নতুন আশ্রয়প্রার্থী দেশটিতে নিবন্ধনের আবেদন করছেন।
অক্টোবর মাসে আসা মোট তিন হাজার মানুষকে সুইজারল্যান্ডের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সুইজারল্যান্ডের অভিবাসন বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি ক্রিস্টিন স্রেনার বার্গেনার জুরিখে গণমাধ্যমের সঙ্গে এক বৈঠকে বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অভিবাসন কখনও এমন পর্যায়ে পৌঁছেনি। সংকট গুরুতর।’
বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীদের আগমনের ফলে দেশটির রাষ্ট্রীয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নতুন আবেদনকারীদের স্থানীয় ক্যান্টন পর্যায়ে স্থানান্তর এবং নতুন অভ্যর্থনা কেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার্ন কর্তৃপক্ষ।
ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার আরও বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে সম্ভাব্য অনেক উদ্বাস্তু তাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে পৌঁছাতে পারেননি। কিন্তু বর্তমানে আর এই পরিস্থিতি নেই।
এছাড়াও, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আরও দরিদ্র করেছে। নতুন অভিবাসন প্রবাহের আরও একটি কারণ। চলতি বছরের শেষে সুইজারল্যান্ডে আসা মোট আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুরিখের ফেডারেল সেন্টার ফর অ্যাসাইলাম প্রসিডিউরসে সাধারণত ৩৬০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে রাখার মতো জায়গা থাকে। বর্তমানে, সেখানে পাঁচশ লোক বাস করছেন। চাপ সামলাতে এই কেন্দ্রের শ্রেণিকক্ষ এবং শরীরচর্চার জন্য নির্ধারিত ঘরগুলোকে এরই মধ্যে বসবাসের ঘরে রূপান্তরিত করে বিছানা যুক্ত করা হয়েছে।
দেশটির ছয়টি ফেডারেল আশ্রয়কেন্দ্র বর্তমানে পূর্ণ। সরকার অস্থায়ী ভিত্তিতে স্বাভাবিকের চেয়ে আগে ক্যান্টনগুলোতে আবেদনকারীদের স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার স্বীকার করেছেন, ‘স্থানীয় ক্যান্টনগুলোদের জন্য কাজটি সহজ হবে না। এটি প্রত্যেকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।’
তিনি বলেন, ‘আমি অতিরিক্ত আবাসনের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখছি। উদাহরণস্বরূপ, জরুরি মুহূর্তে সামরিক ব্যারাকগুলো অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি আমরা অন্যান্য সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
সংকট সমাধানে তিনি বলেন, আরও দ্রুত আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে অতিরিক্ত কর্মী বাড়ানো হচ্ছে। থুন, এমেন এবং গ্লাবেনবার্গ অঞ্চলের একটি সামরিক ডিপোতে বহুমুখী কক্ষের নতুন আবাসন কাঠামো খোলা হয়েছে।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস
এমআরএম/এমএস