বেলজিয়ামের দুই ‘করোনা বীর’
করোনাভাইরাসের কারণে এখন তারা বেকার। তবে চাকরি চলে গেলে আর সবাই যেমন মুষড়ে পড়েন, শাপশাপান্ত করেন ভাগ্যকে, বেলজিয়ামের দুই তরুণ তা করছেন না।
২৭ বছর বয়সী এডুয়ার্ড ডি ভোস এবং সদ্য ২৬ পেরোনো অস্কার ব্রিউ শুরুর দিকে অবশ্য কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ এক ভাইরাস এল, ছড়াতে শুরু করলো সংক্রমণ আর তার কারণে কিনা তাদের চাকরিটাই চলে গেল। গত মার্চে আকস্মিক বেকারত্ব এক রকম দিশেহারাই করেছিল তাদের।
সাবান কারখানার কাজ হারানোর প্রাথমিক ধাক্কা সামলাতে যে একটু সময় লেগেছে তা রয়টার্স টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অকপটেই স্বীকার করেছেন ডি ভোস, ‘প্রথম লকডাউনের সময়টা আমরা পানাহার আর এটাওটা করেই পার করেছি। কিন্তু একটা সময় কী যেন হলো, সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেল আমাদের কাছে।’
অর্থাৎ, মনে হলো, ঘরে বসে বসে দিন কাটালে চলবে না। ব্যাস, করোনা পরিস্থিতিতে সবাই যাতে নিজেদের সুস্থ রাখতে পারেন তা নিজের সাধ্য অনুযায়ী নিশ্চিত করার জন্য নেমে পড়লেন কাজে।
কী কাজ করেন এডুয়ার্ড ডি ভোস এবং অস্কার ব্রিউ? নিজেদের করোনাভাইরাস থেকে বাঁচাতে পিপিই, হ্যান্ডগ্লাভস পরে, ডিসইনফেক্ট্যান্ট, স্পঞ্জ ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়েন রাজধানী ব্রাসেলসের রাস্তায়। তারপর শুরু হয় কারো মুখে মাস্ক না থাকলে তাকে সতর্ক করা, কেউ হেঁটে হেঁটে খাবার খেলে কাছে গিয়ে বলা।
‘একদিকে সরে বসে খাবারটা শেষ করুন, প্লিজ।’ কারো হাত জীবাণুমুক্ত করে দেয়া দরকার মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে তার দিকে এগিয়ে যান ডিসইনফেক্ট্যান্ট নিয়ে। এমনকি পার্কের বেঞ্চ, গাড়ির দরজা ইত্যাদির হাতল জীবাণুমুক্ত করতেও ভোলেন না তারা।
এডুয়ার্ড ডি ভোস আর অস্কার ব্রিউ এসবই কিন্তু করেন নিজের গরজে, বিনা পারিশ্রমিকে। পরোপকারী এই দুই তরুণকে তাই ব্রাসেলসের মানুষ এখন ‘কোভিড বয়েজ’ নামে চেনে। সূত্র: ডয়েচেভেলে।
এমআরএম/জিকেএস