শরণার্থীদের কৃষিকাজের অনুমতি দিল সাইপ্রাস
মো. মাহাফুজুল হক, সাইপ্রাস থেকে
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ভেঙে পড়েছে ইউরোপের অর্থনীতি। বৈশ্বিক এ মহামারিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে এই মহাদেশ। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে কৃষিখাতের বেহাল দশা। এমতাবস্থায় সাইপ্রাসের শ্রম অধিদফতর কৃষি খাতের জন্য শরণার্থীদের আবেদন গ্রহণ করছে। আশ্রয়প্রার্থীরা এখন থেকে কৃষিখাতে কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সরকার। যারা আগ্রহী তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে শ্রম অধিদফতরের স্থানীয় এবং জেলা অফিসে আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। যেসব শরণার্থীর কাজের রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ চলে গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে তাদের মেয়াদ আরও ৩ মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে করোনাভাইরাস। আবার করোনা থেকে রক্ষা পেতে আগাম যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে তাতেও থমকে যাচ্ছে অর্থনীতি। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, পর্যটন, আমদানি-রফতানি, যাতায়াত। সরবরাহ চেইন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারেও।
আবেদন ফর্ম ও বিস্তারিত তথ্য জানতে- www.mlsi.gov.cy, www.mlsi.gov.cy, mlsi.gov.cy
এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবার ইতালিতে অবৈধ হয়ে পড়া প্রায় লাখ ছয়েক অভিবাসীর জন্য সুখবর আনতে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলা করতে গিয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি কৃষিখাতে উৎপাদন ধরে রেখে খাদ্য সংকট যাতে না হয় সেজন্য দেশের রাজনীতিবিদেরা অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দিতে যাচ্ছেন।
মূলত কৃষিখাতে শ্রমিকের সংকট হওয়ায় ইতালি সরকার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ইতালির প্রখ্যাত লা রিপাবলিকাসহ বেশ কয়েকটি দৈনিক এ নিয়ে প্রতিবেদন ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে।
পূর্ব ভূ-মধ্য সাগরের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস। এর দক্ষিণে তুরস্ক, পশ্চিমে সিরিয়া ও লেবানন,উত্তর-পশ্চিমে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন, উত্তরে মিশর ও পূর্বে গ্রীস। গ্রীক প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির জন্মস্থান সাইপ্রাস।
খ্রিষ্টজন্মের ১০ হাজার বছর আগে এখানে শিকারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারীদের বসতি ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এখানে প্রথম সভ্য মানুষ আসে আনাতোলিয়া থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ২ হাজার ৪০০ বছর আগে। এর পর আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময় নানা জাতি ও বর্ণের লোক এখানে এসেছে।
সাইপ্রাস ইতিহাসের বিভিন্ন সময় গ্রিক, রোমান, পারসীয় এবং মিসরীয় শাসকদের অধীনে শাসিত হয়। আরবরা এটি দখল করে ৬৪৩ সালে।
১৫৩৯ সালে অটোমানরা এটি দখলে নেয়। ১৮৭৮ সালে দ্বীপটি ব্রিটেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়। অবশেষে ১৯৬০ সালের ১৬ আগস্ট এক চুক্তির মাধ্যমে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসের উত্তরাঞ্চল দখল করে তুরস্ক। এর দ্বীপটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটায় গ্রিক সরকার। এ ঘটনার পর থেকেই উত্তরাংশ তুর্কী সাইপ্রিয়ট নামে পরিচিত। আর দক্ষিণের দুই-তৃতীয়াংশ গ্রিক সাইপ্রিয়ট নামে খ্যাত।
দুই ভাগের মাঝ বরাবর ‘গ্রিন লাইনে’ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী টইল দেয়। এই দুই অঞ্চলের পুনরেকত্রীকরণের আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। তবে তার গতি খুবই মন্থর। সাইপ্রাসের অর্থনীতি মূলত: কৃষিনির্ভর। পর্যটনেরও এতে বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
এমআরএম