যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতির ১৭ অপকর্ম ফাঁস!
দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে পদচ্যুত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরকে শান্তিপূর্ণ করার প্রস্তুতি নিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। গত রোববার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত দলীয় কর্মী সমাবেশে ‘সিদ্দিক আর না’ (নো মোর সিদ্দিক) স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
সমাবেশে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ও `‘চাঁদাবাজ’ সিদ্দিককে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের আগেই পদচ্যুত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ আহমেদের সভাপতিত্বে ও শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ফরিদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে ‘হটাও সিদ্দিক’ আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, এবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলের বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতিত্ব করতে দেওয়া হবে না। দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গত ৮ বছরের সিদ্দিক যা করেছেন তার সেই আমলনামা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে পৌঁছে গেছে।
সভার শুরুতেই উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের সামনে সিদ্দিকের নানা অপকর্ম লিখিতভাবে তুলে ধরেন আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার। তিনি লিখিত বক্তব্যে সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ১৭টি অপকর্মের কথা তুলে ধরেন।
এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটিকে অর্থের বিনিময়ে রদবদল, দলীয় গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ষড়যন্ত্রে পরিকল্পনাকারী এক চিকিৎসককে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে উপদেষ্টা পদে নিয়োগসহ আরও অসংখ্য অভিযোগের কথা তুলে ধরা হয়।
তিনি আরও বলেন, ৫ বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ৩ বছরের জন্য শেখ হাসিনার অনুমোদিত কমিটির সদস্য সংখ্যা ছিল ৭৬ জন। বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১৭৩ জনে। অনুমোদিত কমিটির বয়স ৮ বছর পেরিয়েছে। গত ৮ বছরে তিনি নিজের পছন্দের লোকদের সম্পূর্ণ অসাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় আবিষ্কার ও বহিষ্কারের খেলা খেলেছেন। তার মূল ধান্দা হলো বিভিন্ন পদের লোভ দেখিয়ে সাধারণ কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জন করা। এখনো তিনি সেটাই করছেন।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস প্রদীপ রঞ্জন কর।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার, যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভিন, নির্বাহী সদস্য হিন্দাল কাদির বাপ্পা, সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন দত্ত, শিক্ষা সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গির, উপদেষ্টা শফিকুল আলম, এম এ জলিল, কৃষিবিদ মকবুল তালুকদার, উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন, তোফায়েল চৌধুরী, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ শাহনাজ, আলী আক্কাস।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন- হেলাল মাহমুদ, সিরাজুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আশরাফউদ্দিন, শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি মঞ্জুর চৌধুরী, ‘শেখ হাসিনা মঞ্চের’ সভাপতি জালালউদ্দিন জলিল, মাঈনউদ্দিন, স্টেট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আলমগীর, নিউইংল্যান্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদা আরভী, শরিফ কামরুল হীরা, কায়েকোবাদ খান, ইলিয়ার রহমান, সাবু মিয়া, লিটন গাজী, আশরাফ মাসুক, জামাল হোসেন, পেনসিলভেনিয়া স্টেট আ.লীগের নেতা এম এ হাই, যুবলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, যুবলীগ নেতা শেখ আব্দুল্লাহ, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ শোয়েব, মোহাম্মদ আলীম, আওয়ামী লীগ নেতা সাদেকুল বদিউজ্জামান, মিজানুর রহমান মিজান ও ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এমআরএম