স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বর্ষবরণ

সুইডেনের স্টকহোমে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। রোববার (১৪ এপ্রিল) সুইডেনে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে আর নাচ-গান-কবিতায় নতুন বছর ১৪২৬-কে স্বাগত জানায় দূতাবাস।

নতুন বছরের আগমনী আনন্দের সুর সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে দূতাবাস চত্বর ডালা-কুলা, মুখোশ, রঙ-বেরঙের ঘুড়ি ও বাহারি উপকরণ দিয়ে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাজে সাজানো হয়।

সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডে বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বক্তব্যের সূচনায় তিনি বাংলা নববর্ষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন।

পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান উৎসব উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ মূলত বাঙালি জাতির ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায় পূর্ণ করার উৎসব, সকল কুসংস্কার ও কুপমণ্ডুকতার বিরুদ্ধে লড়াই করবার প্রেরণার উৎস।

তিনি মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেসকো কর্তৃক অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বাংলা সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করে তোলার পেছনে এর ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদেরকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মননে বাংলা কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বীজ বপনের জন্য সকলকে অনুরোধ জানান।

সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসী শিল্পী ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের মনোমুগ্ধকর নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশনা আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে। ‘সাত ভাই চম্পা’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করে ছোট্ট আজরীন চৌধুরী। কবিতা আবৃত্তি করেন এনামুল হক ও রোমানা আক্তার। দেশীয় গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন পুলক নন্দী, শিপ্রা নন্দী, কাকন আক্তার, নাফিস মালিক, মাজহারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ থেকে আসা ‘ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর আরহাম চৌধুরী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথিদের পরিবেশন করা হয় ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার ও মিষ্টান্ন সামগ্রী। খাবারের তালিকায় ছিল বাঙালির প্রিয় পান্তা-ইলিশ, খিচুড়ি, বিভিন্ন পদের মাংস, হরেক রকম ভর্তা, দেশীয় কয়েক পদের পিঠা-পুলি, মিষ্টান্ন ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে আসা সকলেই অনুষ্ঠানটি নিয়ে তাদের প্রবল উচ্ছাস প্রকাশ করেন এবং প্রাণভরে অনুষ্ঠান ও দেশীয় সব খাবার উপভোগ করেন।

দূতাবাসের প্রথম সচিব সায়মা রাজ্জাকী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এসআর/এমকেএইচ