‘ধর্ম মানুষকে কাছে টানে’
![‘ধর্ম মানুষকে কাছে টানে’](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2018September/maleshia1-20181020193449.jpg)
হাইকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ইউরোপ ভ্রমণ শেষে সরাসরি মালয়েশিয়ায় এসে দুর্গোৎসব দেখতে এসেছেন। এজন্য প্রবাসীরা ধন্য। ধর্ম মানুষকে কাছে টানে, সপ্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে। আজকের এই সম্মিলন তারই প্রমাণ।’
প্রতি বছরের মতো এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে মালয়েশিয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী কুয়ালালামপুরের ব্রিকফিল্ড স্বামী বিবেকানন্দ আশ্রমে প্রবাসী বাংলাদেশি ও কলকাতার হিন্দু সম্প্রদায়ের যৌথ আয়োজনে তৈরি করা হয় পূজা মণ্ডপ।
প্রতিদিনই পূজামণ্ডপে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভক্তদের প্রার্থনা ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে। রাজধানী কুয়ালালামপুর ছাড়াও সেলাংগর প্রদেশসহ অন্যান্য প্রদেশগুলোতে ভারত ও নেপালের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন অস্থায়ী মণ্ডপ নির্মাণ করে দুর্গাপূজা পালন করেছেন।
দুর্গাপূজায় মণ্ডপগুলোতে মহালয়া, দেবী বোধন ও দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী, বিজয়া দশমী ও লক্ষ্মীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। নবমী তিথিতে যথাবিহীত পূজা অর্চনার পর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিজর্সনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
এর আগে, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর পেতালিং জায়ায় ‘কুয়ালালামপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব-২০১৮’ পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব মো, নজিবুর রহমান। সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম, লেবার কাউন্সিলর ও অতিরিক্ত সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, সাবিহা ইসলাম, প্রথম সচিব (শ্রম) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান, প্রথম সচিব (ভিসা ও পাসপোর্ট) মো. মশিউর রহমান তালুকদার, প্রথম সচিব (কনস্যুলার) মাসুদ হোসেন প্রমুখ।
অতিথিদের স্বাগত জানান দুর্গোৎসবের আহ্বায়ক সঞ্জয়। অতিথিদের উত্তরীয় ও ফুল দিয়ে বাদ্য ও সংগীতের মধ্যমে বরণ করে নেয়া হয়। এ সময় মুখ্যসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, সেই স্পৃহা ধারণ করে আপনারা সম্প্রীতি ও সম্মিলনের যে উৎসব করছেন সেটা আরও সমৃদ্ধ হোক।’
এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও হিন্দু ধর্মালম্বীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানালেন, পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা শংকর চন্দ্র পোদ্দার।
এ সময় তিনি আরও বলেন, দুর্গাপূজার অন্তর্নিহিত বাণীই হচ্ছে হিংসা, লোভ ও ক্রোধরূপী ও সুরকে বিনাশ করে সমাজে স্বর্গীয় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেখানে ন্যায় ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। আমাদের হাজার বছরের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাণী বিদেশের মাটিতে এ দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছরই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উস্কানির মুখে বাংলাদেশ এখনও সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের সবার দায়িত্ব এই আবহাওয়া এই উদারতাকে ধরে রাখা।
প্রতিটি পূজা মণ্ডপে প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। পূজা চলাকালে প্রতিটি মণ্ডপেই অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও নাট্যানুষ্ঠান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, ভোগ আরতির আয়োজন করা হয়। কোথাও কোথাও হয় আরতি প্রতিযোগিতা।
এমআরএম/আরআইপি