উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে এসে হয়ে গেলাম পতিতা
‘ইউরোপে আমার এমন জীবন হওয়ার কথা ছিল না। নাইজেরিয়ার তেল সমৃদ্ধ অঞ্চল থেকে ইতালিতে উন্নত শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে আসি। প্রথমে একটি অভিবাসী আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার পর তার ঠাঁই হয় রোমের আরেকটি কেন্দ্রে। এর মধ্যে নিজের পরিচয়পত্র হারিয়ে যায়। কাগজপত্র হারিয়ে ঠিকানা হয় কাস্তেল ভোলতুরনো নামক স্থানে।’
এই অঞ্চলে মানবপাচার বন্ধে কর্মরত নেপলসভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান দেদালুসের কর্মী আন্দ্রে মোরনিরোলি বলেন, ‘ এখানকার সবগুলো মেয়েই অপরাধী সংগঠনের কাছে ঋণী। তারাই তাদের এখানে এনেছে।’ ‘কানেকশন হাউজ’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা এসব পতিতালয়ের কারণে তাদের কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
অভিমানে তারিনে নামে এক নারী বলেন, ‘আমার এটা ভালো লাগে না। কিন্তু কী করব, আমার আর কোনো উপায় নেই। অন্য কোনো কাজ নেই এবং আমার কথা শোনার বা আমাকে সহযোগিতা করার এদেশে কেউ নেই।’
‘কানেকশন হাউজেস’ নামে পরিচিত সৈকতের এসব ঘর এখন একই সঙ্গে বেডরুম, বার ও ব্রোথেল হিসেবে ব্যবহার করছেন অভিবাসী জনগোষ্ঠী, যাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। ক্রমশ এসব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। দারিদ্র্য ও যুদ্ধ থেকে বাঁচতে অজানার উদ্দেশে পাড়ি দিয়ে চলে যাচ্ছে সমাজ-রাষ্ট্রের দৃষ্টির অগোচরে।
মোরনিরোলি বলেন, ‘নাইজেরিয়ান পতিতাবৃত্তি সব ঘরের ভেতরে, কারণ, রাস্তা তাদের জন্য বিপজ্জনক। মেয়েগুলোর সন্ধান পাওয়া হয়ে উঠেছে কঠিন।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য মতে, এ বছরের প্রথমার্ধে ইউরোপের উপকূলে পৌঁছেছে ৫৫ হাজার অভিবাসী, যাদের অনেকেই কোনো কাগজপত্র ছাড়াই এসেছেন একটি আশ্রয় বা চাকরির সন্ধানে।
এখানে কেউ কেউ আসেন মদ্যপান ও আড্ডায় সময় কাটাতে। আবার অনেকে ১৫-২০ ইউরো দিয়ে গ্রেসের মতো মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে।
২০১৬ সালে ইতালির উপকূলে আসে ১১ হাজার নাইজেরীয় নারী। তবে ২০১৭ সালে এদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। তাদের ১০ জনের মধ্যে আটজনই পতিতাবৃত্তির জন্য মানবপাচারের শিকার বলে মনে করে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা।
সূত্র/ডিডাব্লিউ
এমআরএম/আরআইপি