স্বস্তি পেল আমিরাত প্রবাসীরা
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ‘ভিসা ট্রান্সফার’ সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। ইতোমধ্যে দেশটির উচ্চ পর্যায়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা পরিবর্তনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ফলে এখন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভিসা পরিবর্তন করে অন্য কোম্পানিতে যোগ দিতে পারবেন।সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ভিসা ট্রান্সফার-এর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৬ বছর ধরে দেশটিতে নতুন করে দেশীয় শ্রমিকরা যেমন যেতে পারেননি তেমনিভাবে দেশটিতে যারা আছেন তারাও একই কাজে থেকে সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও অন্য কোনো জবে বা কাজে ভিসা পরিবর্তন করতে পারেননি।
দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে আমিরাতের শ্রম মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে ভিসা পরিবর্তনের এ সুযোগ সৃষ্টির ঘোষণা দেন। রাষ্ট্রদূত জানান, যারা ভিসা পরিবর্তন করার সময় কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন তারা যেন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চলছে তিন মাসব্যাপী সাধারণ ক্ষমা। এ সাধারণ ক্ষমায় হাজার হাজার অবৈধ প্রবাসীরা বৈধ হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরান যেসব অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমিরাতে রয়েছেন তাদের কোনো ধরনের ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র না থাকলেও, তাদেরকে ডিজিটাল পাসপোর্ট বা এমআরপি বানানোর সুযোগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। তাই অবৈধ অভিবাসীদের দূতাবাসে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ডা. মুহাম্মদ ইমরান।
দীর্ঘদিন ধরে আমিরাতে দেশীয় শ্রমিকদের নতুন ভিসার পাশাপাশি ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকাতে দেশটিতে অবস্থানরত হাজার হাজার প্রবাসীদের ভোগান্তির অন্ত ছিল না। ভিসা পরিবর্তনের এ ঘোষণা প্রবাসীরা স্বাগত জানান।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির তালুকদার, সাংবাদিক মোহাম্মদ মোরশেদসহ প্রবাসী নেতারা আমিরাতের স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করার আহ্বান জানান।
আমিরাতের কর্মরত বিভিন্ন পেশার প্রবাসীরা ভিসা পরিবর্তনের এ ঘোষণার কথা শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হন। এ ঘোষণায় সাধারণ প্রবাসীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। তারা এটাকে অনেক বড় সাফল্য বলে মনে করেন ও এ ঘোষণাকে আমিরাত সরকারের ইতিবাচক ঘোষণা বলে অভিন্দন জানান।
ভিসা ট্রান্সফারের বিষয়টি দূতাবাসের মাধ্যমে জানানোর পর দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা বেশ উচ্ছসিত। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী শ্রমিকদের এই দাবি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে রাষ্ট্রদূতের এমন ঘোষণার পর শ্রমিকরা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দুবাইয়ের মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড এমিরেটাইজেশনের এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ১৯ ক্যাটাগরিতে কর্মী নেয়া হবে বলে সমঝোতা স্মারক সই হয়। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার সমঝোতা স্বারকে সই করেন।
এরপর নতুনভাবে শ্রমিকদের ভিসা ট্রান্সফারের বিষয়টি দুবাই সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে। সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহ শ্রমবাজার আমিরাতে বর্তমানে ছয় লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন।
এমআরএম