ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

মালয়েশিয়ায় ই-কার্ড কর্মসূচিতে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ২৬ মে ২০১৭

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের সাময়িক কাজের বৈধতা দেয়ার জন্য এনফোর্সমেন্ট কার্ড (ই-কার্ড) ইস্যু প্রোগ্রাম চালু করেছে দেশটির সরকার। তবে এ প্রোগ্রামের অধীনে অবৈধ শ্রমিকদের নিবন্ধনের হার বেশ হতাশাজনক। এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার এক-চতুর্থাংশেরও কম অবৈধ শ্রমিক ই-কার্ডের জন্য নিবন্ধন করেছেন।

এনফোর্সমেন্ট কার্ড (ই-কার্ড) ইস্যু প্রোগ্রামের আওতায় নিয়োগকারীদের মালয়েশিয়া প্রবেশের বৈধ নথি বা পাসপোর্ট নেই এমন বিদেশি শ্রমিকদের নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ করতে বলা হয়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫৪১ জন নিয়োগকারীর মাধ্যমে ৯৪ হাজার ৫৫০ জন অবৈধ শ্রমিক ই-কার্ডের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ৮৫ হাজার ৪৬৭ জনকে ই-কার্ড প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু কর্মসূচিটি হাতে নেয়ার সময় অভিবাসন বিভাগের লক্ষ্য ছিলো এতে অন্তত ৪ থেকে ৬ লাখ অবৈধ শ্রমিক নিবন্ধন করবে৷

মালয়েশিয়ার অভিবাসন মহাপরিচালক বলেছেন নিবন্ধিত সংখ্যার সঙ্গে টার্গেটের বিশাল ফারাক হওয়ায় এটি হতাশাজনক। ৩০ জুনের পর এর মেয়াদ কোনোভাবেই আর বাড়ানো হবে না।

তিনি বলেন, নিয়োগকর্তারা তাদের বিদেশি শ্রমিকদের নিবন্ধনের ব্যাপারে দ্বিধাবোধ করছেন। এখনও অনেক নিয়োগকারী তাদের অবৈধ কর্মীদের নিবন্ধন করেনি, শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করছেন।

তিনি আরও জানান, অবৈধ বিদেশি শ্রমিকরা ই-কার্ডের আওতায় রেজিস্ট্রেশন না করলে প্রয়োজনে দেশটির অভিবাসন বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ মে প্রর্যন্ত ৫ হাজার ৯৪৪ টি অভিযানের মাধ্যমে ৬৩ হাজার ৪২২ জন অভিবাসীর নথি পরীক্ষা করে বিভিন্ন অপরাধে মোট ১৮ হাজার ১৭৬ জনকে আটক করেছে অভিবাসন বিভাগ।

দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী জানান, অবৈধ অভিবাসীদের কাজে নিয়োগ ও সুরক্ষা দেয়ার অপরাধে ৪৯৯ জন নিয়োগকর্তাকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন বাংলাদেশি নিয়োগকর্তাও রয়েছেন।

তিনি বলেন, সরকার নিয়োগকর্তাদের ই-কার্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এখনো অবৈধ অনেক প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বৈধ করতে ই-কার্ড প্রোগ্রামে নিবন্ধন করেনি। অবৈধ শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কাজ করার এটাই শ্রেষ্ঠ সুযোগ বলে জানান তিনি।

Malaysaia

এদিকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (শ্রম) সায়েদুল ইসলাম সেখানে কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশিদের অবিলম্বে এই ই-কার্ড (টেম্পোরারি পাস) গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই পরামর্শ দেন।

সায়েদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতু শ্রী নাজিব তুন রাজাকের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে দেশটিতে কর্মরত কাগজপত্রহীন বাংলাদেশিদের বৈধতা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে দেশটির সরকার গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ই-কার্ড (টেম্পোরারি পাস) কার্যক্রম শুরু করে। এটি চলমান রি-হায়ারিং প্রোগ্রামেরই একটি অংশ।

ই-কার্ড (টেম্পোরারি পাস) সম্পর্কে তিনি জানান, যাদের কোনো প্রকার কাগজপত্র নেই তাদেরকে ডকুমেন্ট প্রদানের লক্ষ্যে দুই ধরনের টেম্পোরারি পাস দেয়া হবে। প্রথমত যাদের কোনো ধরনের কাগজপত্র নেই তারা মালিকের সহায়তায় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে গেলে একটি `লাল` টেম্পোরারি পাস দেয়া হবে। পরে সেই কার্ডটি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাসপোর্ট করাতে হবে।

তিনি আরও জানান সেই পাসপোর্ট নিয়ে আবারও ইমিগ্রেশন বিভাগে আসলে দেয়া হবে `নীল` টেম্পোরারি পাস। এই কার্ডের মেয়াদ হবে এক বছর। এ সময়ের মধ্যে চলমান রি-হায়ারিং প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে তারা বৈধভাবে থাকতে পারবে। জুনের মধ্যেই সকল বাংলাদেশি শ্রমিককে এ প্রোগ্রামের আওতায় আসার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে পুলিশি ঝামেলা ছাড়াই কাগজপত্রহীন শ্রমিকদের বৈধভাবে নির্বিঘ্নে কাজ করতে এই কর্মসূচির আওতায় আসার জোর তাগিদ দিয়েছেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা।

এমএমজেড/এআরএস/পিআর

আরও পড়ুন