‘নিরুপায় হয়ে পড়ে আছি’
গ্রীষ্ম ও শীত ঋতুর দেশ কুয়েত। বছরে ৬ মাস গরম, ৬ মাস শীত। গরমের মৌসুমে প্রচণ্ড গরমর আর শীত মৌসুমে প্রচণ্ড শীত। মধ্যপ্রচ্যের ধনী দেশ কুয়েতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সকাল-বিকেল কাজ করে বিভিন্ন ক্লিনিং কোম্পানিতে নিয়োজিত বাংলাদেশি হাজার হাজার রেমিটেন্স সৈনিক। নরসিংদী জেলার আশরাফ তাদের মধ্যে একজন।
১৯৯২ সালে প্রথম কুয়েত আসেন। দীর্ঘ সময় কাজ করার পর তেমন সুযোগ-সুবিধা না থাকায় দেশে চলে যান আশরাফ। কিন্তু অভাবের সংসারে উপার্জন করার আর কেউ না থাকায় ১৯৯৭ সালে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় দালালের মাধ্যমে ভিসা কিনে ৩০ দিনার বেতনে আবারও কুয়েত আসেন। তবে ভাগ্য পরির্বতনে নতুন কোম্পানিতে এসেও একই অবস্থা তার।
আশরাফ জানান, ভিসা পরির্বতন করা যায় না। চাকরি না করলে দেশে চলে যেতে হবে। আমার মত এ কোম্পানিতে প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, আসার কয়েক বছরে ১০ দিনার বেতন বাড়ালেও ৪-৫ বছর আগে মাসিক বেতন ২০ দিনারে নেমে আসে। এখন ৬০ দিনার বেতন পাই। ৮ ঘণ্টা ডিউটি, থাকা মালিকের তবে খানাসহ অন্যান্য খরচ নিজের বহন করতে হয়। অনেক কষ্টে সংসার চলে নিরুপায় হয়ে পড়ে আছি।
গত এপ্রিলে কুয়েতের একাধিক কোম্পানির শ্রমিকরা দুই দফা ধর্মঘট ও কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। শ্রমিকরা দাবি করেন, কোম্পানির কিছু কর্মচারী ও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশি দালাল চক্র ৭-৮ লাখ টাকায় ভিসা বিক্রি করে কুয়েতে লোক নিয়ে আসছে। এছাড়া কুয়েতের শ্রমিক আইনের বাইরে তারা কোম্পানি নিজস্ব আইন তৈরি করেছে। আর সেই আইন পুরাতন শ্রমিকদের উপর প্রয়োগ করছে।
শ্রমিকদের এমন অভিযোগে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে অসাধু বাংলাদেশি ভিসার দালাল সিন্ডিকেট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শ্রকিমদের জেল ও দেশে পাঠিয়ে দেয়ার ভয় দেখাতে থাকে।
আরএস/জেআইএম