ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

প্রবাসীর বোবা কান্না

মো. ইয়াকুব আলী | প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ০৮ জুন ২০২৪

এই সিরিজটা লেখা শুরু করেছিলাম যখন আমার কলেজের শিক্ষক সমরেন্দ্র নাথ পোদ্দার স্যার মারা গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই সেই মিছিলে অনেকেই শামিল হয়েছেন। সরাসরি চিনি এমন মানুষের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। একে একে মারা গেলেন রাব্বি মামা, খালু, শরীফ স্যার, কর্তা, ফুপু। আর গতকাল বাংলাদেশ সময় ভোরে মারা গেলেন কাকিমা। সময়ের সাথে সাথে মৃত্যুর মিছিলটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কর্তা মারা যাওয়ার পর আলাদাভাবে লিখেছিলাম কিন্তু বাকিদের নিয়ে আর লেখা হয়নি।

আসলে বিয়োগান্তক লেখা লিখতে ভালো লাগে না। তবে লিখতে পারলে হয়তোবা মনটা হালকা হয়ে যেত। গতকাল কাকিমার মৃত্যু সংবাদ শোনার পর থেকেই মনের ওপর একটা বিশাল পাথর জমে আছে। তাই ভাবলাম লিখে সেই পাথরটাকে মন থেকে নামানোর চেষ্টা করি। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমি যে মানুষগুলোর কথা বলছি এরা কেউই আমার রক্ত সম্পর্কের কোন আত্মীয় নন বরং তারা আমার আত্মার আত্মীয় ছিলেন। তারা সবাই গ্রাম সম্পর্কে আমার স্বজন ছিলেন। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে উনাদের মধ্যে হিন্দু মুসলমান দুই ধরনের মানুষই আছেন।

রাব্বি মামার মৃত্যুটা ছিল বজ্রপাতের মতো অকস্মাৎ। একেবারেই অকাল মৃত্যু। সবে শৈশব থেকে কৈশোরে পা দেওয়া রাব্বি মামার মনে যখন একটু একটু করে জীবনের রঙ লাগতে শুরু করেছিল ঠিক তখনই রাব্বি মামা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। রাব্বি মামা চমৎকার মানুষ ছিলেন। এ কথা শুধু আমি না পাড়ার সবাই বলে। রাব্বি মামাদের বাড়ি আমাদের বাড়ির ঠিক পূর্ব পাশেই। যদিও মামা বলতাম কিন্তু আসলে পাড়া সম্পর্কে সে ছিল আমাদের ভাগ্নে। তার নানি সুখজানকে আমাদের পাড়া এমনকি গ্রামের সবাই চেনে অত্যন্ত মুখরা রমণী হিসাবে।

প্রবাসীর বোবা কান্নাসপরিবারে লেখকের ফুপু

আসলে জীবনের ঘাত প্রতিঘাত তাকে এভাবে তৈরি করেছিল। আমরা তাকে ফুপু ডাকি। নাম সুখজান হলেও ফুপুর জীবনে সুখের ছিটেফোঁটা ছিল না। তার বড় মেয়ে হালিমা খাতুন কিন্তু আমরা ডাকতাম হালে বু। তার কপালেও সুখ লেখা ছিল না। তার স্বামী একজন খেয়ালি মানুষ যাদের কথা আমরা গল্প কবিতায় পড়ি। তার প্রথম কন্যা হীরা খালামণি। তার অনেক পরে জন্ম নেন রাব্বি মামা।

সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য থেমে থাকে না। রাব্বি মামাও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বড় হতে থাকলেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তিনি এমন একটা মানসিকতা নিয়ে বড় হতে থাকলেন যেটা ওই পরিবার থেকে পুরোপুরিই আলাদা। সদা হাসিখুশি রাব্বি মামা যতই বড় হতে থাকলেন ততই সবার প্রিয়পাত্র হতে থাকলেন। হাসিখুশি এবং সদালাপী স্বভাবের জন্য সবাই তাকে ভালোবাসতো। আমি ততদিনে কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। ছুটি পেলেই কুষ্টিয়া চলে যায়। আর কুষ্টিয়া গেলেই আমাদের বাড়ির পেছনে আশপাশের বাড়ির সব বাচ্চাদের নিয়ে বাদাম আর নারিকেলের বাগুর ব্যাট দিয়ে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠি।

আরও পড়ুন: প্রবাসীর বোবা কান্না

কুষ্টিয়া অঞ্চলে জাম্বুরাকে আমরা বাদাম বলি আর নারিকেল গাছের শাখাকে বাগু বলি। এই খেলায় আমার সবচেয়ে বড় সহযোগী আলামীন ভাই এবং রাব্বি মামা। তারা দুজন নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়ে জাম্বুরা গাছের তলা থেকে বাদাম কুড়িয়ে আনতেন। আর কোনো ছোট আকারের নারিকেল গাছ থেকে বাগু কেটে নিয়ে আসতেন। তখন আমি সেটাকে ক্রিকেট ব্যাটের আকার দিতাম।

পাড়া প্রতিবেশীদের যেকোনো দরকারে স্বপ্রণোদিত হয়ে নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে আসতেন। আমরা তিন ভাই জীবিকার প্রয়োজনে কখনোই বাড়িতে থাকতে পারতাম না। তাই মা যেকোনো দরকারে রাব্বি মামার শরণাপন্ন হতেন। আর তিনিও অতি সত্ত্বর সেই কাজগুলো করে দিতেন। বাড়িতে ফোন দিলেই অন্ততপক্ষে একবার হলেও রাব্বি মামার প্রসঙ্গ আসতো। রাব্বি মামাকে দেখতাম খেলায় কোন ছলচাতুরি করতো না যেটাকে আমাদের এলাকায় কাইন্টামি বলে।

প্রবাসীর বোবা কান্নানাতির সাথে লেখকের খালু

এভাবেই তিনি আমারও প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। এরপর সময় গড়িয়ে যেতে লাগলো। তিনি কলাগাছের সবুজ পাতার মতো তরতর করে বেড়ে উঠতে লাগলেন। আমরা সবাই ভেবেছিলাম এইবার হয়তোবা সুখজান ফুপুর পরিবারে আসল সুখ আসবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। তিনি হঠাৎই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন। প্রচন্ড দু:খ পেয়েছিলাম একান্ত স্বজন হারানোর বেদনায়। আসলে গ্রামের সবাই তো সবাই আত্মীয়। সকালে ঝগড়া হয় আবার বিকেলেই তারা মিলে যায়। সবাই মিলে যেন একটা একান্নবর্তী পরিবার।

খালু হচ্ছেন আমার বন্ধু সালামের বাবা। খালুর সঙ্গে কতশত স্মৃতি মনের জানালায় ভিড় করছে। আমাদের পাড়ার একমাত্র টেলিভিশন ছিল তাদের বাসায়। ন্যাশনাল ব্রান্ডের চৌদ্দ ইঞ্চি সাদা কালো টিভি। টিভিটা সাদাকালো হলেও আমাদের কৈশোরটা রাঙিয়ে দিয়েছিল। সপ্তাহের সাতদিনই আমরা তাদের বাসায় যেয়ে বসে থাকতাম। এভাবে থাকতে আমাদের পুরো অনুষ্ঠানসূচি মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল।

এছাড়াও জগতি রেলগেট থেকে ভিসিআর ভাড়া করে আনলেও তাদের টিভিতেই চালানো হতো। তখন টিভিটা ঘর থেকে বের করে বারান্দায় বসিয়ে দেওয়া হতো। দিনের বেলায় বা রাত দশটার আগের অনুষ্ঠানগুলো দেখা নিয়ে খালা তেমন অভিযোগ না করলেও দশটার ইংরেজি সংবাদের পর তিনি আর টিভি খোলা রাখতে চাইতেন না। তার অবশ্য কারণও ছিল। তারা সেই কক্ষেই ঘুমাতেন।

টিভি ছেড়ে রাখলে তার শব্দে ঘুম আসা কঠিন। কিন্তু খালু ছিলেন আমাদের দলে। তিনি কক্ষের লাইট অফ করে দিয়ে টিভির ভলিউম কমিয়ে দিতেন। দশটার ইংরেজি সংবাদের আধাঘণ্টা কোনোভাবে পার করতে পারলেই ইংরেজি সিরিজগুলো শুরু হতো। আমার এখনও মনে আছে রাত জেগে হারকিউলিস সিরিজ দেখার কথা। এরপর থেকে কিভাবে কীভাবে জানি আমার নাম হয়ে গেলো হারকিউলিস। আজও যখন গ্রামে ফিরে গেলে বন্ধুরা হারকিউলিস নাম ডাকে তখনই খালুর কথা মনে পড়ে যায়।

শরিফ স্যারকে নিয়ে যাই লিখি না কেন যথেষ্ট হবে না। তিনি নিজ উদ্যোগে আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। যে আমার হওয়ার কথা ছিল দিনমজুর সেই আমি এখন প্রকৌশলী। কীভাবে তিনি আমার জীবন বদলে দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে ‘আলোর দিশারি’ শিরোনামে একটা লেখা লিখেছিলাম। সেই শরীফ স্যার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। স্যার করোনায় আক্রান্ত হবার পরও মোটামুটি ভালোই ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই উনার পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে।

তাকে তখন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন ঠিক সময়ে তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারলে হয়তোবা আজও তিনি আমাদের মাঝে জীবিত থাকতেন। যে তিনি আমার মতো আরও অনেকের জন্যই ছিলেন আলোর দিশা সেই তিনিই শেষ সময়ে অক্সিজেনের অভাবে কবরের অন্ধকার জগতের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেলেন। আমি মাঝে মাঝে ভাবি যদি দেশে থাকতাম তাহলে নিজের প্রভাব খাঁটিয়ে হয়তোবা তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন জোগাড় করে দিতে পারতাম।

তাহলে স্যার হয়তো আজও আমাকে কল দিয়ে বলতেন, বাপুরে কিরাম আছো? অনেকদিন তুমার সাথে কতা হয় না।
আমরা যখন পদ্মা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে বাড়াদীতে এসে বসবাস শুরু করলাম তখন সবাই আমাদের সমানভাবে গ্রহণ করেনি। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ একেবারে শুরু থেকে আমাদের আপন করে নিয়েছিলেন। আমার ফুপু আর ফুপা ছিলেন তার অন্যতম। ফুপুর সাথে আমাদের আগে থেকে কোনো পরিচয় ছিল না।

আরও পড়ুন

ফুপুদের বাসায় যাতায়াত করতে করতে একটা সম্পর্ক দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ফুপার ছিল বিশাল বিশাল কলার বাগান। তিনি বাগান থেকে কাঁচা কলা কাদি ধরে কেটে এনে বাড়িতেই পাকাতেন। এরপর বিভিন্ন দোকানে যোগান দিতেন। ওই সময়টা যদি আমরা কখনও তার বাড়িতে যেতাম ফুপু অবধারিতভাবেই আমাদের হাতে এক ছড়ি কলা ধরিয়ে দিতেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে।

প্রবাসীর বোবা কান্নারান্নায় ব্যস্ত লেখকের কাকিমা

কীভাবে আসা যাওয়া করবো সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। এটা জেনে ফুপু তার মেজ ছেলে লতিফ ভাইকে ডাক দিয়ে বললেন, তুই ইয়াকুবকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যাবি আর পরীক্ষা শেষ হলে নিয়ে আসবি। আমার রক্ত সম্পর্কের আপন ফুপু থাকলেও নিশ্চয়ই এটাই করতেন। বাইরে থেকে যতবারই কুষ্টিয়া যেতাম উনার সাথে দেখা করতাম। দেখা হলেই কীভাবে যত্ন আত্তি করবেন সেটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন।

কাকিমা ছিলেন আমার বন্ধু বিদ্যুৎের মা কিন্তু সেইসাথে আমার আরেকজন মা ছিলেন। বাড়িতে গেলেই সকালে দাঁতনের ডালের মেছওয়াক দিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে সারা পাড়াময় ঘুরে বেড়ানো আমার অভ্যাস। কাকিমার বাড়িতে যেয়ে চুলার পাশে দাঁড়িয়ে কি রান্না করছেন সেখানে অন্ততঃপক্ষে একবার উঁকি দেওয়া হবেই। পছন্দনীয় কিছু রান্না হলেই কলপাড়ে গিয়ে মুখ ধুয়ে খেতে বসে পড়া ছিল নিয়মিত রুটিনের অংশ। কিছু না খেলেও অন্ততঃপক্ষে চা'টা খাওয়া হবেই কারণ সকালে আমাদের বাড়িতে চা বানানোর চল নেই।

অস্ট্রেলিয়া আসার পরও নিয়মিত বিরতিতে কাকিমার সাথে কথা হতো। প্রথম যেদিন ফোন দিয়ে কথা বললাম তিনি জিজ্ঞেস করলেন কয়টা বাজে। আমি বললাম রাত আটটা। শুনে তিনি খুবই অবাক হলেন কারণ তখন বাংলাদেশে মাত্র বিকেল চারটা বাজে। আসলে আমাদের আটপৌরে মায়েরা তো এমনই অকৃত্রিম সরল মনের অধিকারী। এরপর দেশে যেয়ে কাকিমার হাতের লুচি লাবড়া না খেলে মনে হত গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা বাদ পড়ে গেছে। সম্প্রতি কাকিমার জরায়ুতে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। সেটার চিকিৎসার পর কিছুদিন ভালোও ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর টিকতে পারলেন না।

কাকিমার মৃত্যুর খবর পেলাম আমার আরেক বন্ধু সালামের কাছ থেকে। সালামকে বললাম, আমার এখন কেন জানি মনে হয় এতটা পড়াশোনা না করলেই পারতাম রে। সামান্য একটা ডিগ্রি নিয়ে যদি গ্রামের স্কুলে মাস্টারি করতাম তাহলে অন্ততপক্ষে আব্বা মা’র কাছাকাছি থাকতে পারতাম। তাদের দেখাশোনা করতে পারতাম। কিন্তু এখন এই দূর পরবাসে বসে দেশের মানুষদের স্বজন হারানোর কথা শুনে হাহাকার করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

প্রবাসীর বোবা কান্নাবাদামের বল হাতে রাব্বি মামা

কথা প্রসঙ্গে বললাম, খালাকে দেখি রাখিস। খালাকে দেখে মনে হল তিনি যেন শুকিয়ে গেছেন এবং খাটো হয়ে গেছেন। শুনে সালাম বললো, মায়ের কোমরে ব্যথা তাই কুঁজো হয়ে হাঁটেন। আমি বললাম, খালু চলে গেলেন এখন গেলেন কাকিমা। এরপর কোনদিন শুনবো আবার আব্বা মা’ও সেই পথেই পাড়ি দিচ্ছেন। আর আমি সাত সমুদ্র টের নদীর পাড়ে বসে বোবা কান্না করছি আর নীরবে চোখের পানি ফেলছি।

প্রবাসের জীবনে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থাকলেও স্বজনদের ওম নেয়। এই বয়সে এসে বুঝি শারীরিক ক্ষুধার মতো মানসিক ক্ষুধাও আমাদের মৌলিক চাহিদা। স্বজনদের সংস্পর্শে আমাদের মানসিক দিকগুলোর পূর্ণ বিকাশ ঘটে। একা একা থাকলে হয়তোবা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় কিন্তু মানসিকভাবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাই। এটা আমি প্রবাসের দ্বিতীয় প্রজন্মকে দেখে বুঝেছি।

আমরা যতই এদের কেয়ারিং বা শেয়ারিং শেখাই না কেন এরা দিনশেষে এক একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হয়ে বেড়ে উঠে। এদের খুবই প্রচলিত কথা হচ্ছে, আই এম বোরড। এটা আমাকে খুবই ভাবাই কিন্তু সহসা এর থেকে মুক্তিরও পথ দেখছি না। এখানে জীবনের সব মৌলিক প্রয়োজনই রাষ্ট্র পূরণ করে দিচ্ছে তাই এদের জীবনে কোন আলাদা আনন্দ নেই। সপ্তাহের যে জীবন, মাসের এবং বছরের হিসাবেও সেই একই একঘেঁয়ে জীবন।

দেশে আমরা বেড়ে উঠেছিলাম পাড়ার সব মানুষের অকৃত্রিম মমতায়। এইসব মানুষদের সঙ্গে রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও তারা সবাই আমার আত্মার আত্মীয়। আমি এদের সবাইকে নিয়েই ভালো থাকাটা শিখেছিলাম। এইসব মানুষদের টানাপোড়েনও আমার জীবনের অংশ। আবার এইসব মানুষের খুশিতে খুশি হতে শিখেছিলাম। সেখানে নিজের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রাধান্য ছিল খুবই কম।

তাই আমাদের জীবন কখনও একঘেঁয়ে হয়ে উঠেনি। আমি আমার সন্তানদের বলে রেখেছি, তোমাদের বয়স আঠারো হবার সাথে সাথে আমি দেশে চলে যাবো এবং আমার নিজের আব্বা মা’র সাথে বাকি জীবনটা কাটাবো। জানি না সেটা সম্ভব হবে কি না। যতদিন না যেতে পারছি ততদিন দেশের মানুষগুলোর জন্য বোবা কান্না করে যেতে হবে।

এমআরএম/এএসএম